সুচরিতা সেন চৌধুরী: এই দিব্যেন্দু বড়ুয়া-কে দেখলে তাঁর উত্থান সম্পর্কে কোনও আঁচ পাওয়া যাবে না। এই প্রজন্ম দেখছে সেই দাবাড়ুকে, যিনি বাংলার প্রথম ও ভারতের দ্বিতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার। কিন্তু এই গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার রাস্তাটা ঠিক কতটা কঠিন ছিল সেটা তিনিই জানেন। তাঁর লড়াই, সাফল্য, ব্যর্থতা আজ যেন রূপকথার গল্পের মতো শোনায়। তার মধ্যে থেকেই এই বিপুল সাফল্য। সহজ ছিল না। তবে কথা কথা বলতে বলতে বার বার তিনি যেটা বোঝাতে চাইলেন, হার না মানা লড়াই। কিছু পাচ্ছি না বলে হতাশ না হয়ে পড়া। নিজের উদ্যোগে এগিয়ে যাওয়া। দিব্যেন্দু বড়ুয়ার সঙ্গে আড্ডায় উঠে এল এমনই অনেক কথা।
প্র: ছোটবেলায় কী ভাবে দাবা খেলা শুরু করলেন?
দিব্যেন্দু: আমি যখন দাবা খেলা শুরু করি, তখন আমার বয়স ছয়। রাইটার্স বিল্ডিংয়ে একটা টুর্নামেন্টে বাবা দাদা আর আমাকে নিয়ে গিয়েছিল। ওই সময় একই পরিবারের আরও দুই ভাই খেলেছিলেন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তাঁদের আর দেখা যায়নি। সেই সময় দাবা খেলাটা কেউ খুব ভাল ভাবে নিতেন না। ধারণা ছিল, দাবা একটা নেশা আর বয়স্কদের খেলা। আমার ভাগ্য ভাল, বাবা তেমন ভাবে ভাবেনি বলেই আজকে এখানে পৌঁছতে পেরেছি। এখন সেই সব ধারণা একদম বদলে গিয়েছে। এখন দাবা ছোটবেলা থেকে খেললে চিন্তা-ভাবনার উন্নতি হয়। বিচার-বুদ্ধি বাড়ে। অন্য সব দিকে যেটা কাজে লাগে। দাবা অবসাদগ্রস্থ হতে দেয় না।
প্র: দাবাকে তো বেছে নিয়েছিলেন। তার পর পরিস্থিতির সঙ্গে লড়াই করে এগিয়ে যাওয়াটা কতটা কঠিন ছিল?
দিব্যেন্দু: আমার কোনও কোচ ছিলেন না। কোনও কোচিংও পাইনি। সেই সময় সে সব কিছু ছিল না। নিজে খেলে খেলে তৈরি হয়েছি। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮— বাবা আমাকে প্রচুর টুর্নামেন্ট খেলিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে। ১৯৭৮ সালে গিয়ে আমি প্রথম সাফল্য পাই। স্টেট, সাব জুনিয়র, জুনিয়র— সবগুলোতে চ্যাম্পিয়ন হই। এবং সেই সময় নরেন মাজি বলে এক জন সিনিয়র ছিলেন, তিনি প্রতি রবিবার মেদিনীপুর থেকে কলকাতায় আসতেন। আর বাবা তাঁকে আমাদের বাড়িয়ে ডেকে নিয়ে আসত। তার পর সারাদিন ওঁর সঙ্গে আমি দাবা খেলতাম। ওই খেলাটাই কাজে লেগেছে।
প্র: প্রথম বিদেশ সফর বা দেশের হয়ে কবে খেললেন?
দিব্যেন্দু: ১৯৭৯ সালে আমার প্রথম বিদেশ সফর। প্রথম ভারতের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাই অনূর্ধ্ব ১৪-তে। কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও সাহায্য পাইনি। রাজ্য সরকার ১০ হাজার টাকা দিয়েছিল। বাকিটা ধারদেনা করে গিয়েছিলাম। সেখানে আমি ব্রোঞ্জ পাই। তার পর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এর পর ন্যাশনালের যোগ্যতা অর্জন করি। আজকে আমি যা হয়েছি, সব নিজের উদ্যোগে। ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার্স হওয়ার সময় খুব ফিনানসিয়াল কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে। ১৯৮২ পর্যন্ত ওই কঠিন সময় কেটেছে।
প্র: কবে ভাল সময়ের মুখ দেখলেন?
দিব্যেন্দু: ওই সময় টাটা থেকে চাকরির অফার এসেছিল। সেই সময় টাটায় চাকরি নিতে গেলে জামশেদপুরে গিয়ে থাকতে হত। বাবা চায়নি আমি বাংলা ছেড়ে যাই। ১৯৮৫-তে গিয়ে শেষ পর্যন্ত আমি টাটার চাকরি নিতে বাধ্য হই। কারণ, তখন আর পেরে উঠছিলাম না। বাবা একটা ছোট ব্যবসা করতেন, তাঁর পক্ষেও সম্ভব হচ্ছিল না। কোচিং পাচ্ছিলাম না।
প্র: সুযোগ তো সেই সময় এসেছিল বেশ কিছু। কিন্তু সেগুলো নেননি। কেন?
দিব্যেন্দু: আমি সেই সময় কয়েকটি কোচিংয়ের অফার পেয়েছিলাম। কিন্তু বাবা রাজি হননি। বাবার হয়তো মনে হয়েছিল, ছেলেকে হাতছাড়া করব না। ১৯৮২ সালে কারপভের একটা মন্তব্যের ভিত্তিতে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আমাকে পুরো স্পনসর করে নিয়ে যাওয়ার অফার এসেছিল। পড়াশোনা, খেলা সব এক জায়গায়। সে বারই লন্ডনে এক পার্টিতে স্থানীয় এক চিকিৎসক বেনু চৌধুরী, বাবাকে ওপেন অফার দিয়েছিলেন, আমার সব দায়িত্ব নেওয়ার জন্য। শুধু আমাকে গিয়ে ওঁর কাছে ওখানে থাকতে হত। সেটাও বাবা চাননি। বাবার ভয় ছিল, ছেলেকে নষ্ট করে দেবে হয়তো। সেই সময় বাবাকে সঠিক উপদেশ দেওয়ার মতো কেউ ছিল না যে বোঝাবে, কোনটা ঠিক কোনটা ভুল।
প্র: এই পরিস্থিতি কবে কাটিয়ে উঠলেন? টার্নিং পয়েন্টটা কী?
দিব্যেন্দু: টাটায় ১৯৮৫-তে গিয়ে যোগ দেওয়ার পরেই পরিস্থিতি বদলাতে শুরু হল। তার পরই আমূল পরিবর্তন হল। তা ছাড়া সব স্পনসর করত টাটা। বিদেশে গিয়ে খেলার স্পনসর ছিল। অফিশিয়াল ট্যুর ছাড়াও একটা বিদেশ ট্যুর স্পনসর করত টাটা। যাতে আমি সেখানে গিয়ে একটা সার্কিট খেলতে পারি। ১৯৮২ থেকে ১৯৮৫ পর্যন্ত যে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে গিয়েছি, সেটা আমাকে অনেক পিছিয়ে দিয়েছিল। সেখান ঘুরে দাঁড়াতে অনেকটা সময় লেগে গিয়েছিল। প্রায় প্রথম থেকে শুরু করা।
প্র: প্রথম যখন গ্র্যান্ডমাস্টার হলেন তখন সামনে কেউ ছিল না। তা হলে কী দেখে নিজেকে উৎসাহিত করতেন?
দিব্যেন্দু: আমি যখন গ্র্যান্ডমাস্টার হই, তখন বাংলায় কেউ ছিল না। আর দেশে শুধু আনন্দ। ১৯৮৮তে ও গ্র্যান্ডমাস্টার হয়। একটা সময় কে আগে হবে, সেটা নিয়ে আলোচনা চলত। শেষ পর্যন্ত ও আগে হয়। সেই সময় কী ভাবে গ্র্যান্ডমাস্টার হতে হয়, সেটাই কেউ জানত না। আর ভারতে তো টুর্নামেন্ট হতই না। কোন টুর্নামেন্ট খেলতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি, কিছুই জানতাম না। আমাদের অপেক্ষা করে থাকতে হত বিদেশে খেলার জন্য। একটাই ট্যুর। যেটা কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় চেস দলকে দিত। সেই সময় চেষ্টা করতাম, একসঙ্গে দুটো-তিনটে টুর্নামেন্ট খেলে আসার। ওটা মিস হয়ে গেলে অনেকটাই পিছিয়ে পড়তে হত। আমাদের কাছে সেই সময় কোনও গাইডেন্স ছিল না। আমি খেলতে খেলতেই হয়ে গেলাম ১৯৯১ সালে। কিছু না জেনেই। ইন্টারন্যাশনাল মাস্টারের পর গ্র্যান্ডমাস্টার হতে ন’বছর লেগেছিল আমার। শেষটায় গিয়ে বার বার আটকে যেতে হয়েছিল। তাই এত সময় লেগে গেল।
প্র: একটা সময়ে কে আগে গ্র্যান্ডমাস্টার হবে আপনি না আনন্দ— সেটা নিয়ে টানাপড়েন ছিল। সেটা কতটা চাপের?
দিব্যেন্দু: চাপ তো ছিলই। বিশেষ করে আনন্দ আমার আগে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে যাওয়ার পর আরও বেশি চাপ তৈরি হয়েছিল। আনন্দ তো প্রথম হয়ে গিয়েছে। এ বার যদি দ্বিতীয়ও না হতে পারি, এই চাপটা ছিলই। তবে সেই সময় কেউ ছিল না তেমন। প্রবীন থিপসে ছিল। তবে ও পড়াশোনার জন্য ব্রেক নিয়েছিল। না হলে হয়তো ওই ভারতের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হত। সেই কারণে সে সময় আনন্দ আর আমি গ্র্যান্ডমাস্টার হই। প্রবীন তৃতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার। ১৯৯৮ সালে। তার পর থেকে শেষ ২৫ বছরে ৮০ জনের মতো গ্র্যান্ডমাস্টার পেয়েছি আমরা।
প্র: গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পর আপনাকে ঘিরে কী কী বদল ঘটেছিল? বিশেষ করে বাংলায়।
দিব্যেন্দু: আমার গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পর বিষয়টি সম্পর্কে ধারণা হয়েছে। তার পর থেকে অনেক গ্র্যান্ডমাস্টার উঠে এসেছে বাংলায়। আনন্দ সবার আইকন। ওকে দেখে যুব সমাজ উঠে এসেছে। কারণ, ওই প্রথম ভারতের গ্র্যান্ডমাস্টার। এখন অনেক টুর্নামেন্ট হয়। আমাদের সময় এত কিছু ছিল না। ১৯৮৮তে যখন এজ গ্রুপ টুর্নামেন্ট শুরু হয় তখন থেকে অনেক সহজ হয়ে যায়। অনেক বেশি খেলার সুযোগ পায় ছেলেমেয়েরা। যার ফলে দ্রুত উঠে এসে জায়গা করে নিতে পারে। এখন প্রতি বছর একসঙ্গে একাধিক গ্র্যান্ডমাস্টার তৈরি হচ্ছে ভারত থেকে। বাংলাতেও আমার পরে ১০ জন গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছে। এই বছরও আরও এক, দু’জন হবে।
প্র: বিশ্বনাথন আনন্দের সঙ্গে বাকিদের পার্থক্যটা কোথায় হয়ে গেল?
দিব্যেন্দু: সব থেকে বড় পার্থক্যটা টাকার। ওর বাবা রেলের জেনারেল ম্যানেজার ছিলেন। শুরুর দিকে দু’বছর ফিলিপিন্সে গিয়ে ছিল। এশিয়ার মধ্যে সেই সময় ফিলিপিন্স দাবায় সব থেকে এগিয়ে ছিল। এশিয়ার প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টারও ফিলিপিন্স থেকেই। ওখানে দাবা খুব পপুলার ছিল। টিভিতে দাবা শেখানো হত। সেই সময়, ওই ছোটবেলায় টিভির দাবার অনুষ্ঠানে আনন্দ দাবার প্রবলেম সলভ করত। সেটা ওকে খুব সাহায্য করেছে। এক জন বাচ্চা বড় হওয়ার সময় যদি সঠিক সাহায্য পায়, তা হলে সেটা খুব কাজে লাগে। সঙ্গে টাকার জোগান। বিদেশে গিয়ে খেলা, সেখানে গিয়ে পড়ে থাকা, সার্কিট খেলা— সব মিলে ওকে সাহায্য করেছে। আসলে সাফল্য নির্ভর করে অনেক কিছুর উপর। পারবারিক পরিস্থিতি, আশপাশের পরিবেশ আর ঠিক সময় ঠিক সুযোগ পাচ্ছে কি না।
প্র: ঠিক এখানেই তামিলনাড়ু কোথায় দাবায় আলাদা হয়ে গেল দেশের বাকি রাজ্যগুলির থেকে?
দিব্যেন্দু: এটা ঠিক সোভিয়েত ইউনিয়ন যদি বিশ্ব দাবার মক্কা হয়, তা হলে ভারতবর্ষের ইতিহাসে তামিলনাড়ু সব সময় এগিয়ে। ভারতবর্ষের প্রথম ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার তামিলনাড়ু থেকে। প্রথম দাবায় অর্জুনও তিনিই পেয়েছেন। ওখানে বেসটা খুব ভাল। সাত-আটের দশক থেকেই ওখানে দাবার চর্চা অনেক বেশি। গ্রামে গ্রামে খেলা হয়। এখনও এগিয়ে। আমাদের ৮২ জন গ্র্যান্ডমাস্টারের মধ্যে হয়তো ৫০ শতাংশই ওখান থেকে। এই স্ট্যান্ডার্ডটাকে ম্যাচ করা কঠিন অন্য রাজ্যের পক্ষে। তামিলনাড়ুর ওই বিষয়টা আনন্দকেও সাহায্য করেছে। আমাদের নিজস্ব কোনও ঘরানা নেই। যেটা আমাদের দরকার। এখন সবটাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে হচ্ছে। ফেডারেশন এবং সরকার উদ্যোগ নিলে বাংলা থেকেও প্রচুর প্লেয়ার উঠে আসবে। এবং সব রাজ্যেই এটা দরকার।
প্র: গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে যাওয়ার পর কোচিং পাওয়াটা প্রায় দুষ্কর হয়ে যাচ্ছে। এটা কেন?
দিব্যেন্দু: এটা হওয়াটা স্বাভাবিক। এক জন গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে যাওয়ার পর লক্ষ্য থাকবে তাঁর থেকে ভাল কারও কাছ থেকে শিখুক। এবং উদ্দেশ্য থাকে, রেটিং বাড়ানো। ২৬০০, ২৭০০-তে পৌঁছে যাওয়া। তার জন্য বিশাল মাপের ট্রেনিং দরকার। সেই মাপের পশ্চিমবঙ্গ কেন সারা ভারতবর্ষে নেই। আনন্দ করছে, তবে সেটা খুব বেছে ছাত্রদের নিচ্ছে। আনন্দের হাত ধরে গুকেশ, প্রজ্ঞানন্দরা উঠে এসেছে। আনন্দ পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ওর অনেক অভিজ্ঞতা। অনেক নভেলটি রয়েছে ওর কাছে। কিছু ব্যবহৃত। কিছু ব্যবহারই হয়নি। সেগুলি পরের প্রজন্ম পাবে। সে রকম আরও প্রয়োজন। কারণ, ধারাবাহিক কোচিং নিতে গেলেও তা প্রচণ্ড ব্যয়সাপেক্ষ। ১২ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১৫ ডলার খরচ। যেটা স্পনসর না পেলে সম্ভব নয়। এটা থেকে যাবে। সুরাহা নেই আপাতত। তবে পাচ্ছি না বলে হতাশ হলে চলবে না। নিজেকে লড়ে যেতে হবে।
প্র: ব্যক্তিগত খেলা হওয়ায় কি এটার প্রতি নজর এড়িয়ে যাচ্ছে? সে কারণেই লড়াইটা কি বেশি?
দিব্যেন্দু: দাবাকে মাইনর গেমের মধ্যে ফেলা হয়। আমি একটা ছোট্ট তথ্য দিই। যে খেলাগুলো নিয়ে আমাদের দেশে মাতামাতি হয় সেগুলো হয়তো ১৬টা দেশ খেলে। আমাদের দাবা খেলে ১৮০-র উপর দেশ। সেখানে আমরা প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে আছি। তা-ও দাবা কেন সেই প্রচার পায় না? কারণ, দাবা টেলিভিশনে লাইভ দেখানো সম্ভব নয়। দাবা ইন্টেলেকচুয়াল গেম। দাবার সার্কেলটাই আলাদা। আর এটা ফিজিক্যাল গেম নয় যে ক্রিকেট, ফুটবলের মতো না বুঝলেও উপভোগ করা যায়। টেনিস না জানলেও আমরা উপভোগ করি। ইন্ডোরগেমের মধ্যে টেবল টেনিসও বিখ্যাত হয়েছে। আর দাবার ক্ষেত্রে শুধু হাতের চাল দেখা যায়। কিন্তু তার থেকেও বড় হল মস্তিষ্ক। যেটা না জানলে রিলেট করা সম্ভব নয়। তবে দাবার একটা বড় মার্কেট রয়েছে। প্রচুর দর্শক রয়েছে। যেটা আলাদা।
প্র: কোথায় পাথর্ক্য হচ্ছে দাবা আর অন্য গেমের মধ্যে?
দিব্যেন্দু: একটা উদাহরণ দিয়ে বলি, আজকে যদি আনন্দ রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায় তা হলে আমি নিশ্চিত ১০০ জনের মধ্যে ৫০ জন বলবে, চেনা চেনা লাগছে। অন্য দিকে, এক বার ভারতের হয়ে ক্রিকেট খেললেও তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে মানুষ চিনে যাবে আর ঘিরে ধরবে। এটাই বাস্তব। দাবায় আরও একটা দিকে আমরা পিছিয়ে রয়েছি। কারণ, এটা অলিম্পিক্সে নেই। এটায় যে হেতু ফিজিক্যাল মুভমেন্ট নেই সেকারণে অলিম্পিক্স কমিটির সঙ্গে আন্তর্জাতিক দাবা সংস্থার দীর্ঘ দিন ধরে একটা ‘ডিবেট’ চলছে। এশিয়ান গেমসে এক বার যুক্ত করা হয়েছিল দাবাকে। সেখানে ভারতের প্রথম পদক কিন্তু দাবাতেই এসেছিল। যত ক্ষণ না অলিম্পিক্সে ঢুকছে তত ক্ষণ এর সুফলগুলিও পাচ্ছি না আমরা।
এখন তিনি পুরোপুরি কোচ। বাংলা দাবার মুখপাত্র। বাংলার দাবার ভবিষ্যৎ নিয়ে শেষ পর্যন্ত তাঁকেই হাল ধরতে হয়েছে। রাজ্য জুড়ে দাবা়ড়ু তুলে আনার লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপও করেছেন ইতিমধ্যেই। বাংলার দাবাকে তুলে আনতে চাইছেন একটা উচ্চতায়। তিনিই বাংলার দাবার পায়োনিয়ার। তিনি তাই স্বপ্ন দেখান, বুঝিয়ে দেন আসলে কোনও বাধাই বাধা নয়।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার