Thursday, December 5, 2024
No menu items!
Google search engine
Homeদাবাদীপ্তায়ন ঘোষ ফিরছেন দাবার মূলস্রোতে, লক্ষ্য ২৬০০ এলো রেটিং

দীপ্তায়ন ঘোষ ফিরছেন দাবার মূলস্রোতে, লক্ষ্য ২৬০০ এলো রেটিং

সুচরিতা সেন চৌধুরী: বাংলার কনিষ্ঠতম গ্র্যান্ডমাস্টার দীপ্তায়ন ঘোষ । মাঝে গ্রাস করেছিল অনিশ্চয়তা। সে কারণে মন দিয়েছিলেন পড়াশোনায়। ভাল ছাত্র হওয়ার সুবাদে দিল্লির স্কুল অফ ইকনমিক্স থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি করার সঙ্গে সঙ্গেই ক্যাম্পাস থেকেই জুটে গিয়েছিল ভাল চাকরি। তখন কোভিড পরিস্থিতিতে বন্ধ দাবার অন বোর্ড গেম। ভেবেছিলেন অনলাইনের খেলা যে কোনও জায়গায় বসেই খেলা যাবে। তাই চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছিলেন মুম্বই। দেড় বছর সেই চাকরির পর বুঝতে পারলেন জীবনের সব থেকে প্রিয় জিনিসটাই ছিটকে যাচ্ছে ক্রমশ। তাই আবার একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। চাকরি ছেড়ে ফিরে এলেন কলকাতায়, মন দিলেন দাবায়। সামনে এখন আবার নতুন করে সেই দাবাড়ু দীপ্তায়নকে খুঁজে পাওয়ার বড় চ্যালেঞ্জ।

প্র: ভারতে তথা বাংলায় দাবার তেমন রমরমা কখনওই ছিল না তাও দাবাকেই কেন বেছে নিলেন?

দীপ্তায়ন: ছোটবেলা থেকে আমাকে আমার ঠাকুমা দাবা খেলতে শিখিয়েছিলেন। কি‌ন্তু কখনওই ভাবিনি সেটাই কেরিয়ার হবে। সেই সময় সব ধরনের বোর্ড গেম পছন্দ করতাম। তার পর ইনস্টিটিউটে ভর্তি হই। সেখান থেকেই খেলাটাকে ভাল লেগে যায়। দাবা‌ পেশাদার পর্যায়ে খেলব সেই পরিকল্পনা ছিল না, হয়ে গিয়েছে।

প্র: সাড়ে ১৬ বছর বয়সে গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার পর যা যা প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল তার কতটা পূরণ হয়েছে?

দীপ্তায়ন: গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়ার সময় আমি সবে উচ্চমাধ্যমিক দিয়েছি। তার পর সেন্টজেভিয়ার্স থেকে গ্র্যাজুয়েশন করি এবং দিল্লি স্কুল অফ ইকনমিক্স থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করি। ওই পাঁচ বছর সেরকমভাবে খেলা হয়‌নি। পরিবার চাইত পড়াশোনাটাকে গুরুত্ব দিই। সে কারণে দুটো এক সঙ্গে করতে পারিনি। সে কারণে রেটিং পড়ে গিয়েছে। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে এখনও লক্ষ্যে পৌঁছনো হয়নি।

প্র: কোন কোন স্বপ্ন তাহলে এখনও স্পর্শ করা হয়নি?

দীপ্তায়ন: ২৬০০ রেটিংয়ের স্বপ্নটা এখনও অধরা রয়ে গিয়েছে। পড়াশোনাকে গুরুত্ব দিতে গিয়ে খেলা থেকে অনেকটাই সরে গিয়েছিলাম। তাই রেটিংও কমে গিয়েছে অনেকটাই। যখন গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছিলাম তখন আমার রেটিং ছিল ২৫৮০। এর পর ২৫৩০-এ নেমে গিয়েছিল রেটিং। তার পর কিছুটা বেড়েছে। এখন সেটা ২৫৬৫। এখন লক্ষ্য এটাই যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যাতে ২৬০০ করতে পারি।

প্র: আর কতদিন সময় লাগতে পারে এই রেটিংয়ে পৌঁছতে?

দীপ্তায়ন: ২৫৬৫ থেকে ২৬০০-র এই ব্যবধানটা কম মনে হলেও এটা অনেকটাই। গ্যাপ যত কম হবে তত দ্রুত লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে। গ্যাপটা কম হলেও ২৬০০ রেটিংয়ে পৌঁছতে কত সময় লাগবে সেটা বলা মুশকিল। কারণ, এটার জন্য সঠিক টুর্নামেন্ট বাছাই করা, ধারাবাহিকভাবে ভাল ফল করা— এই দুটো খুব জরুরি। অনেক বড় বড় গ্র্যান্ডমাস্টার রয়েছেন যাঁদের এই গ্যাপ পুরো করতে অনেক সময় লেগেছে। বা এখনও অনেকে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। ভাল খেললে আশা করি ২০২৩-এই হয়ে যাবে।

প্র: পড়াশোনার পাশাপাশি মাঝখানে চাকরির কারণেও খেলায় ব্যাঘাত ঘটেছে। আবার সেই চাকরি ছেড়েও দিয়েছেন, কেন?

দীপ্তায়ন: দিল্লি স্কুল অফ ইকনমিক্স থেকে আমি পাশ করি ২০২১-এ। তখনও কোভিডের বাড়বাড়ন্ত চলছে। তখন ওভার দ্য বোর্ড  টুর্নামেন্ট বন্ধই ছিল। যা হত সেটা অনলাইন, সেটা বাড়ি থেকে বসেই খেলতে হত। একটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। আর সে কারণেই আমি মুম্বইয়ে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরিতে যোগ দিই। কলেজের প্লেসমেন্ট থেকেই চাকরি পাই। কিন্তু তার পর দেখলাম দাবার জন্যই কোনও সময় নেই। সে কারণেই ছেড়ে দিয়ে শহরে ফিরে এলাম।

প্র: একটা অনিশ্চয়তা চাকরি করতে বাধ্য করেছিল। আবার দাবার জন্য চাকরি ছেড়ে নিজেকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফিরিয়ে আনা, কোন আত্মবিশ্বাস থেকে?

দীপ্তায়ন: এখনই বলতে পারব না কতটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে হবে। ওটা সময়ই বলবে। তবে আমি খুশি কারণ এটার জন্যই ছোটবেলা থেকে সব করে এসেছি। চেস খেলে যে আনন্দ পাই সেটা চাকরিতে ছিল না। আমি চাকরি ছেড়ে দাবায় ফিরে ভাল আছি। আর দাবা নিয়ে এগিয়ে যেতে হলে চাকরি ছাড়াটা জরুরি ছিল।

প্র: এই মুহূর্তে সামনে কী কী বড় টুর্নামেন্ট আছে?

দীপ্তায়ন: টুর্নামেন্ট পর পর আছে। জুনে সিঙ্গাপুরে টুর্নামেন্ট আছে। জুলাইয়ে ইউরোপ যাব খেলতে। আর অগস্টে ন্যাশনাল হওয়ার কথা রয়েছে। এখনও দিন নিশ্চিত হয়নি। যদি ইউরোপের সঙ্গে একই সময়ে হয়ে যায় তখন দেখতে হবে কীভাবে বিষয়টি ম্যানেজ করা যায়।

প্র: আপনি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন বার কয়েক, ক’টা ট্রফি রয়েছে?

দীপ্তায়ন: অনূর্ধ্ব-১০-এ একবার, অনূর্ধ্ব-১২-তে একবার চ্যাম্পিয়‌ন হয়েছি।

প্র: বয়স ভিত্তিক প্রতিযোগিতায় ভারতের যতটা সাফল্য ততটা সাফল্য আর সিনিয়র পর্যায়ে গিয়ে পাওয়া যাচ্ছে না, সেটা কেন?

দীপ্তায়ন: ছোটবেলার ট্রেনিং এই সাফল্যের জন্য খুব সাহায্য করে। একাধিক গ্রুপ ট্রেনিং ক্যাম্প অনেক কাজে লাগে। কিন্তু বড় হয়ে গেল সেই ট্রেনিং পাওয়াটা সমস্যা হয়ে যায়। সিনিয়র পর্যায়ে দাবার কোচিং খুবই ব্যয় সাপেক্ষ। ভা্রতে বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে দাবার চাহিদা কম সে কারণে সমস্যাটা বেশি। আর সে কারণেই অনেক প্রতিভাবাণ প্লেয়ার পরের দিকে আর দাবা নিয়ে এগোতে পারেনি। তবে আগের থেকে কিছুটা হলেও ভাল হয়েছে। অনেক জিএম উঠে এসেছে, মিত্রাভ, সায়ন্তন, কৌস্তভদের মতো। তবুও যতটা সাপোর্ট প্রয়োজন সেটা নেই। আর সে কারণেই অনেকে পিছিয়ে যায় আর অন্য কেরিয়ার বেছে নেয়।

প্র: দাবায় সিনিয়র হয়ে যাওয়া আর গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে যাওয়ার পর কোচিং একটা সমস্যা, আপনি কি তেমন কিছুর সম্মুখিন হয়েছেন?

দীপ্তায়ন: ব্যক্তিগত পর্যায়ে ট্রেনিংয়ের খরচ প্রচুর। বিশেষ করে জিএম পর্যায়ের পর কোচিং নিতে গেলে দিনে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করতে হবে। যেটা অনেক। একটা সময় বাংলাদেশের জিয়াউর রহমানের কাছে শিখতাম। তার পর থেকে নিজেই অনুশীলন করেছি। এখন একটা প্রো-চেস ট্রেনিং নিচ্ছি তবে সেটা গ্রুপে। প্রায় একসঙ্গে ২৫-৩০ জন রয়েছে সেখানে। আরও উন্নতি করতে গেলে এটা দরকার যেটা আমি কোনও দিনই পাইনি। পরবর্তী প্রজন্ম যাতে সুযোগ সুবিধেগুলো পায় সেটা দেখা উচিত।

প্র: আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য আসার পর বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি ছিল স্পনসরশিপের, সেগুলো পেয়েছিলেন?

দীপ্তায়ন: না, স্পনসরশিপ পাইনি। স্কলারশিপ পেয়েছিলাম। প্রথমে ইন্ডিয়ান অয়েল ও পরে ওএনজিসি স্কলারশিপ দিয়েছিল। তবে সেটা খুবই সামান্য, ১৫-১৬ হাজার। যা জিএম কোচিংয়ের জন্য কিছুই না। আগেই যেমন বললাম দিনে ২৫-৩০ টাকা লাগে জিএম কোচিংয়ের জন্য।

প্র: চাকরিও তো পাওয়া যায় গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে গেলে?

দীপ্তায়ন: চাকরি পাওয়ার জায়গা খুবই কম যারা দাবাকে সাপোর্ট করবে। হাতেগোনা কয়েকজনই পেয়েছেন ফুলটাইম চাকরি। সাধারণত সব অয়েল সংস্থাগুলোতেই দাবাড়ুদের চাকরি হয় এখন সেখানে কোনও স্লট নেই। জানি না পরে কী হবে কিন্তু এরকম একটা চাকরি থাকলে অনেকে শুধু খেলাটাতেই মনোনিবেশ করতে পারবে। কোচিং নিতে পারবে, বিদেশে খেলতে যেতে পারবে— রোজগারের কথা ভাবতে হবে না।

প্র: এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে নিজেকে ঠিক কোথায় রাখবেন?

দীপ্তায়ন: এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আগেই বললাম, আমার লক্ষ্য ২৬০০ এলো রেটিংয়ে পৌঁছনো। মাঝে কয়েকদিন সূর্যদার (সূর্যশেখর গঙ্গোপাধ্যায়)সঙ্গে কাজও করেছি। তাতে আমার উন্নতি হয়েছে। এই উন্নতি টানা রাখতে আরও কোচিং দরকার। লক্ষ্য রেটিং বাড়িয়ে যাওয়া। তার জন্য অনেক টুর্নামেন্ট খেলা, ভাল কোচিং নেওয়াটা দরকার। কিন্তু এই সবের জন্য দরকার অনেক টাকা। এটা যে কোনও প্লেয়ারের জন্যই সমস্যা। যত উপরে উঠবে তত কঠিন হয়ে যাবে টিকে থাকার লড়াই। যাঁদের রেটিং ২৭০০ হাজারের উপরে তাঁদের ব্যক্তিগত ট্রেনার থাকে, তাঁরা কারও সেকেন্ড হয়ে কাজ করে। সূর্যদা যেমন আনন্দের সেকেন্ড ছিল। আর এটা টাকার জোগান ছাড়া সম্ভব নয়।

প্র: এই কারণেই কি আর বিশ্বনাথন আনন্দ পাচ্ছে না ভারত?

দীপ্তায়ন: বিশ্বনাথন আনন্দ ছাড়াও আমাদের দেশে অনেক গ্র্যান্ডমাস্টার রয়েছে। অনেকেই ২৭০০-এর উপরে রয়েছেন। অর্জুন আছে, ভিদিত আছে, গুকেশ আছে। অর্জুন তিন বছরের জন্য একটি বিদেশি সংস্থার সঙ্গে ডিল সই করেছে প্রায় ১২ কোটি টাকার। যেটা বিশাল। গুকেশেরও মনে হয় সেকেন্ড রয়েছে। ভিদিতের স্পনসর রয়েছে।

প্র: তাহলে কি আমরা বিশ্ব দাবার আসরে ভারত থেকে আরও অনেক সাফল্যের আশা করতে পারি?

দীপ্তায়ন: এই মুহূর্তে ভারতের ফিডে পয়েন্টে গুকেশ এখন লিড করছে। প্রথম সার্কিটের শেষে ও যদি চ্যাম্পিয়ন হয় তাহলে ও ফিডে ক্যান্ডিডেটসে সুযোগ পাবে তার পর সেখানে যদি প্রথম হয় তাহলে বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ডিং লিরেনকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে। এটার সম্ভাবনা প্রবল রয়েছে। তবে আরও অনেক ক্রাইটেরিয়া রয়েছে। সবগুলোতে সেরাটা দিতে হবে। তার পরই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নিতে পারবে।

প্র: দীপ্তায়ন কি নিজেকে সেই জায়গাটায় দেখতে পাচ্ছে?

দীপ্তায়ন: সেটা বেশ চাপের ব্যাপার কিন্তু আমি চেষ্টা করব। সব সময়ই এই স্বপ্ন দেখেছি যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে খেলব। সেই চেষ্টা তো করব।

প্র: অনেক স্বপ্ন নিয়েই দাবা খেলার শুরু বা বলা যেতে পারে দাবা খেলা শুরুর পর থেকে এক এক করে জমা হয়েছে স্বপ্নগুলো। এই এগিয়ে যাওয়ার পথে সব থেকে বেশি কাঁরা প্রেরণা আপনার?

দীপ্তায়ন: বিশ্বে ফেভারিট অবশ্যই ম্যাগনাস কার্লসেন, ভারতের মধ্যে বিশ্বনাথন আনন্দ। কারণ এত বছরের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন সঙ্গে ৫০-এর উপর বয়স হয়ে যাওয়ার পরও এত ধারাবাহিকভাবে খেলে যাওয়া। কলকাতার মধ্যে সূর্যদা (সূর্যশেখর গঙ্গোপাধ্যায়)।

প্র: কার্লসেন কী ভাবে সবার কাছে রোল মডেল হয়ে উঠল?

দীপ্তায়ন: কার্লসেনের খেলার ধরন আমার খুব পছন্দ। একদম সমান সমান বা একদম পিছিয়ে পড়া পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ও যেভাবে প্রতিপক্ষকে আউট-প্লে করে দিতে পারে সেটা শিক্ষনীয়। ওই স্টাইলটা আমার খুব পছন্দ। যেখানে কোনও সম্ভাবনা নেই সেখান থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে যেতে পারে। এই স্কিল কারও মধ্যেই দেখা যায় না। টপ প্লেয়ারদের মধ্যেও দেখা যায় না যেটা কার্লসেনের আছে। যখন মনে হচ্ছে সম্ভব নয় তখন সেটাকে সম্ভব করে বেরিয়ে যায়।

প্র: এখন একটা লড়াই ভিষনভাবে সামনে চলে আসছে আর সেটা হল ক্লাসিক্যাল চেস বনাম র‍্যাপিড দাবা, এমন কী কার্লসেনও ক্লাসিক্যাল চেস থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছেন, কেন?

দীপ্তায়ন: আমারও র‍্যাপিড অ্যান্ড ব্লিৎজ খুব পছন্দের ফর্ম্যাট। ওখানে ওপেনিং অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয় যতটা ক্লাসিক্যাল চেসে দরকার। ক্লাসিক্যাল চেসে প্রতিপক্ষকে মেপে নেওয়ার সময় থাকে যেটা এখানে থাকে না। আমার কখনও ওপেনিং স্টাডি করতে ভাল লাগত না। র‍্যানডম চাল দিয়ে শুরু করতাম, যেটা র‍্যাপিডের জন্য ভাল।

প্র: এই মুহূর্তে খেলার পাশাপাশি কোচিং নিয়েও কি কিছু ভাবনা-চিন্তা করছ?

দীপ্তায়ন: আমি খুব কম কোচিং করাই। আমার নিজের কোচিং দিতে একদমই ভাল লাগে না। তার থেকে নিজে খেলতে বেশি ভালবাসি। কোনও টুর্নামেন্টের আগে খুব কম কাউকে কাউকে কোচিং দিই। তবে সেটা আমার লক্ষ্য নয়।

প্র: আপনি অনেকদিন খেলার বাইরে চলে গিয়েছিলেন, আবার সার্কিটে ফিরার প্রস্তুতি কি নিতে শুরু করে দিয়েছেন?

দীপ্তায়ন: এই বছর থেকে আমাকে আবার যোগাযোগ করা শুরু করতে হবে। তবে নিজের পরিস্থিতি দেখে নিয়ে কারণ একবার যদি কথা দিয়ে দিই আমি খেলব তাহলে সেটা বাতিল করা সম্ভব নয়। এতদিন কোভিডের জন্য বন্ধ ছিল তাছাড়া আমার পড়াশোনা ছিল চাকরী ছিল। তার মাঝে আমি কয়েকবার বাংলাদেশ ‌লিগ খেলেছি। তবে ইউরোপের লিগটা একটু অন্যরকম হয়। প্রতিমাসে শনিবার করে খেলা হয় সে কারণে ১০ দিন থেকে চলে আসব ভাবলে সেটা হবে না। খানিকটা বন্ডে সই করার মতো। এক বছর ধরেই চলবে তোমাকে অপেক্ষা করতে হবে কখন তোমার রাউন্ড খেলা হবে তার জন্য। তুমি ছেড়ে আসতে পারবে না।

 প্র: এলো রেটিং বাড়ানোটাই বড় লক্ষ্য সেক্ষেত্রে বিদেশে খেলতে হবে যা খরচ সাপেক্ষ, সেটা কীভাবে সামলাবে?

দীপ্তায়ন: দেড় বছর চাকরি করে কিছুটা টাকা জমেছে আপাতত সেটা দিয়েই শুরু করব। বিদেশের অনেক টুর্নামেন্টে খাওয়া আর থাকা ফ্রি থাকে সেক্ষেত্রে আমাকে শুধু বিমানভাড়াটা দিতে হবে। এছাড়া ভাল খেললে পুরস্কার মূল্য দিয়ে পরের টুর্নামেন্টের জন্য অনেকটাই উঠে আসে। বাকিটা স্ট্রাগল।

বাংলার উঠতি তারকাদের প্রেরণা কিন্তু এই দীপ্তায়ন ঘোষই। সেই দীপ্তায়ন বেশ কয়েকটা বছর দাবা থেকে প্রায় ছিটকে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভাল থাকার, বেঁচে থাকার অক্সিজেন যে শুধুই দাবা। তাই ফিরতেই হল। এখন শুধু খেলাকেই বেছে নিতে চান। লক্ষ্য ২৬০০ রেটিংয়ে পৌঁছনো। যার সামনে গিয়ে বার বার ফিরতে হয়েছে। এবার সেই লক্ষ্যে সফল হতেই কোমর বাঁধছেন তিনি।

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments