সুচরিতা সেন চৌধুরী: তিনি সন্দীপন চন্দ । ভারতীয় দাবা তথা বাংলার দাবায় একটা বড় নাম। কিন্তু কথা বলতে গেলে বোঝা যায়, তিনি বাকিদের থেকে একদমই আলাদা। ভাবনা-চিন্তার জগৎটাই অন্য রকম। তিনি চ্যালেঞ্জ নেওয়ার কথা বলেন। তিনি টাকার জন্য লড়াই থেকে বেরিয়ে না যাওয়ার কথা বলেন। তিনিই পারেন, সাক্ষাৎকার দিতে দিতে স্পনসরদের উদ্দেশে বার্তা দিতে। তিনি স্বপ্ন দেখেন, এক দিন আকাশ স্পর্শ করবে বাংলার দাবার পরবর্তী প্রজন্মও। একটু সাহায্যের হাত বাড়িতে দিতে হবে শুধু। সেই সন্দীপনের সঙ্গে আড্ডাটা শুধুই আড্ডা নয়, শিক্ষণীয়ও বটে।
প্র: শুরুটা কী ভাবে এবং দাবাই কেন?
সন্দীপন: আমার দাবায় আসা খুব ছোটবেলায়। তখন আমার বয়স সাত হবে। সেই সময়েই অ্যালেখাইন চেস ক্লাবে ভর্তি হয়ে খেলা শেখার শুরু। আমার প্রথম কোচ পরিতোষ ভট্টাচার্য। আমি শ্যামলকাকু বলে ডাকতাম। তাঁর সঙ্গে পরিচয় ছোট থেকেই। তিনি আমার ব্যক্তিগত কোচ ছিলেন। আবার অ্যালেখাইন চেস ক্লাবেও শেখাতেন তিনি। প্রথমে আত্মীয় বা প্রতিবেশীদের সঙ্গে খেলতাম। কিন্তু প্রথাগত শিক্ষাটা অ্যালেখাইন থেকেই শুরু। তার পর টুর্নামেন্ট খেলতে খেলতে সাফল্য আসতে শুরু করে। এর পর থেকে দাবা ছাড়া আর অন্য কিছু ভাবতেই পারিনি।
প্র: দাবাকেই কেরিয়ার হিসেবে বেছে নেওয়ার কথা কবে ভাবলেন?
সন্দীপন: কোনও কিছুকে পেশাদার পর্যায়ে নিয়ে যেতে হলে তা ছোট থেকেই খুব ভাল মতো করতে হয়। তার পর সাধারণত যেটা হয়, পড়াশোনা আর তার মধ্যে বেছে নেওয়ার একটা সময় আসে— কোনটাকে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হবে। একটা সময় দেখা গেল, আমি স্কুলে যাওয়ার সময়ই পাচ্ছি না। সব সময় টুর্নামেন্ট, ট্রেনিং লেগেই থাকত। ক্লাস সেভেন থেকেই এই নিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিলাম। হঠাৎ হঠাৎ স্কুলে গিয়ে মানিয়ে নিতেও অসুবিধে হত। ক্লাসমেটদেরও চিনতাম না। আবার যখন দাবায় যেতাম তখন বুঝতে পারতাম এটাই আমার জগৎ। তখন থেকেই বুঝতে পারি কোনটাকে প্রাধান্য দেব।
প্র: দাবার জগতে সন্দীপন এমন এক জন মানুষ, যিনি পরিচিত তাঁর নিয়মানুবর্তিতার জন্য। খেলার জন্য এটা কতটা প্রয়োজন?
সন্দীপন: ধন্যবাদ। আমি কিন্তু নিশ্চিত নই এই বিষয়ে। তবে সবটাই একে অপরের সঙ্গে মিলে থাকে। খেলার ক্ষেত্রে যেটা হয়, সেটা হল, বিভিন্ন জায়গায় ট্র্যাভেল করা। নানা রকম মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়। আমার মনে হয়, এই যে নানান দেশে আমরা যাই, সেখানে গিয়ে কতটা ঘুরলাম বা ক’টা ট্যুরিস্ট প্লেস দেখা হল সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং সেখানকার মানুষের সঙ্গে পরিচয় হওয়া, তাঁদের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানাটা জরুরি। এর থেকে আর একটা বিষয়ও দিক খুলে যায়। অনেক রকমের মানুষের সঙ্গে মিশলে বোঝা যায়, একটা জিনিসকে কত রকম ভাবে করা যায়। দৃষ্টিভঙ্গির বদল হয়। নিয়মানুবর্তিতাও হয়তো এটা থেকেই আসে। এক জন মানুষকে বুঝতে হবে, তাঁর জন্য কোনটা সঠিক।
প্র: আপনার গ্র্যান্ডমাস্টার হওয়া কত বছর বয়সে?
সন্দীপন: আমি যখন গ্র্যান্ডমাস্টার হই তখন আমার বয়স প্রায় ২০ বছর। সেটা ২০০৩। আমি গ্র্যান্ডমাস্টারের জন্য ফাইনাল নর্ম পাই স্পেনে ভেনাসকে ইন্টারন্যাশনাল ওপেনে।
প্র: কিন্তু আপনি যে সময়ে গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছেন তখনও বাংলায় এই খেলাটা নিয়ে খুব বেশি মাতামাতি ছিল না। গ্র্যান্ডমাস্টারও ছিলেন হাতে গোনা। দিব্যেন্দু বড়ুয়া, সূর্যশেখর গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো দু’-এক জন। তার মধ্যে থেকে নিজেকে ওই জায়গায় দেখতে পাওয়াটা কতটা কঠিন ছিল?
সন্দীপন: আমি যখন গ্র্যান্ডমাস্টার হই তখন দিব্যেন্দুকাকু (বড়ুয়া) গ্র্যান্ডমাস্টার হয়েছেন আর সূর্য (গঙ্গোপাধ্যায়) হয় আমার ঠিক আগের বছরে। তখন আমার মনে হয়েছিল, আমি গ্র্যান্ডমাস্টার হতে পারি। এর থেকে বড় বিষয় ছিল, আর কতটা বেশি এগোনো যায়। গ্র্যান্ডমাস্টারটা একটা মাইলস্টোন, এটা একটা সম্মান, এর মূল্য তো একটা আছেই। তবে আজ থেকে ৩০ বছর আগে গ্র্যান্ডমাস্টারের যে মানেটা ছিল সেটা এখন অনেকটা বদলে গিয়েছে। কারণ, অনেক কম গ্র্যান্ডমাস্টার ছিল। আগের সঙ্গে যদি তুলনা করি তা হলে দেখা যাবে, কিছু বিষয় অনেক সহজ হয়েছে। আবার কিছু বিষয় কঠিন হয়েছে। যেটা সহজ হয়েছে সেটা হল, তথ্য খুব সহজে পাওয়া যায়। কম্পিউটার, ইন্টারনেট আসায় দাবায় একটা বড় পরিবর্তন হয়েছে। আগে যেটা খুব মন্থর ছিল। বই দেখে পেতে হত। সোভিয়েতের দাবাড়ুদের জীবনী যদি পড়ি, তা হলে দেখা যাবে তাঁদের সময় একটাই বই ছিল। এখন প্রতিযোগিতা অনেক বেড়ে গিয়েছে। যখন সুযোগ অনেক বেশি থাকে, তখন অনেকে সেই পথে হাঁটতে শুরু করেন। আর সবাইকে পিছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া বা ল়ড়াইটা অনেক কঠিন হয়ে যায়। সেরা হওয়াটা খুব কঠিন। যাঁরা পেশাদার দাবায় রয়েছেন, তাঁদের জন্য লড়াইটা অনেক বেশি।
প্র: পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যে থেকে দাবার ভবিষ্যৎ কী? আপনাকে কী কী সমস্যার মুখে প়ড়তে হয়েছে?
সন্দীপন: কলকাতা থেকে আমার জেনারেশনে বা তার আগে বা পরে— তাঁদের সবাইকেই সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছ। টাকার অভাব দেখতে হয়েছে। আমি, সূর্য, নীলোৎপল— আমরা সবাই অ্যালেখাইন চেস ক্লাবে ছিলাম। সেখান থেকে আমাদের কিছু কিছু করে স্পনসরশিপ পেতাম সেই সময়, কোচিং ছাড়াও। এটা সেই সময়ের কথা, যখন চাইলেই অনলাইনে ট্রেনিং বা খেলা সম্ভব ছিল না। আমাদের বাবা-মায়েদের যথেষ্ট লড়াই করতে হয়েছে। আমাদের সঙ্গে যখন তাঁরা যেতেন, তাঁদের কষ্ট করতে হয়েছে। এ ভাবেই আমরা বড় হয়েছি। সেই সময় মধ্যবিত্তেরা বিমান চড়ত না। এখন সেটা বদলে গিয়েছে। কিন্তু স্পনসরশিপের অভাব আগেও ছিল, এখনও কিন্তু রয়ে গিয়েছে। যেটার বদল দরকার।
প্র: গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে যাওয়ার পর কোচিং পাওয়াটা একটা বড় সমস্যা, কেন?
সন্দীপন: আমার মনে হয়, এক জনের গ্র্যান্ডমাস্টার হয়ে যাওয়ার পর কোচিংয়ের থেকেও বেশি দরকার ভাল টুর্নামেন্টে খেলতে পারা। আমাদের সময়ে আমরা বই থেকে খেলা শিখেছি। তার থেকে এখন অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমরা যখন কাসপারভ, কারপভের খেলা দেখে বড় হয়েছি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা খেলা হত। আমরা দু’ঘণ্টা ৪০ মিনিটের খেলা খেলতাম। আমাদের সময় ছিল এটা নিয়ে স্টাডির জায়গা। একটা সময় ইউরোপে ভাবা হত দাবাকে খেলার অধীনে রাখা হবে, না কি পড়াশোনার মধ্যে থাকবে! এখন ‘টাইম’ অনেকটাই কমেছে দাবার। আর সেটাই দাবাকে স্টাডি থেকে স্পোর্টসে পরিণত করেছে অনেক বেশি। যে কারণে আমরা দেখতে পাচ্ছি নতুন প্লেয়াররা দ্রুত শীর্ষে পৌঁছচ্ছে। গুকেশ বা অর্জুন সারা বছর ধরে খেলে গিয়েছে। ট্রেনিংয়ের থেকে বেশি দরকার খেলে যাওয়া। সঙ্গে কিছু গাইডলাইন।
প্র: আনন্দের দ্বিতীয় হিসেবে কাজ করেছেন আপনি। এটা আপনাকে প্লেয়ার হিসেবে কতটা সাহায্য করেছে?
সন্দীপন: যে কোনও উন্নতির দুটো দিক আছে। একটা কংক্রিট আর একটা অ্যাবস্ট্রাক্ট। অ্যাবস্ট্রাক্ট দিকে অবশ্যই অনেক কিছু শেখার আছে। সেটা নির্ভর করছে আমি সেটাকে কী ভাবে কাজে লাগাচ্ছি তার উপর। কংক্রিটের ক্ষেত্রে মূলত ওপেনিং যে কাজগুলো করি সেগুলি ভবিষ্যতে নিজে খেলার ক্ষেত্রে কাজে লাগে। তবে সব সময় কাজে লাগে, সেটাও বলব না। কারণ একটা সময়ের সেগুলি অকেজো হয়ে যায়। তবে আসল সাহায্য হয় নানা রকমের অভিজ্ঞতা। যেগুলি প্রেরণা দেয়। বিশাল অভিজ্ঞতার ব্যাপার। ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপে থাকার কারণে রেটিংয়ে হয়তো তেমন প্রভাব পড়েনি। তবে কিছু টুর্নামেন্টে সাফল্য এসেছিল। আমরা সব সময় শিখছি।
প্র: চাকরি ছেড়ে দিয়ে কী এখন পুরোপুরি কোচিংয়েই মনোনিবেশ করতে চাইছেন?
সন্দীপন: একটা সময় দাবার জন্য চাকরি পেয়েছিলাম। বছর আটেক চাকরি জীবন কাটিয়েছি। গত ১৩ বছর হল সেই চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত আমি কোচিংও করাইনি কোনও। শুধু খেলে গিয়েছি। যে পুরস্কারমূল্য পেয়েছি, তার উপর নির্ভর করেই চলেছি। আর বেশ কয়েক বার দ্বিতীয় হিসেবে কাজ করেছি। আনন্দের জন্য তো করেইছি, আরও কয়েক জনের জন্যও করেছি। কোচিং আমি কোনও দিনই করতাম না। ২০২০-র শেষের দিকে, আনন্দ জানান তিনি অ্যাকাডেমি করছেন এবং আমাকে ট্রেনার হিসেবে যোগ দিতে বলেন। সেই সময় থেকেই আমার ট্রেনিং দেওয়ার শুরু। তবে আমার মনে হয়, কোভিড না এলে আনন্দও ওই সময় অ্যাকাডেমি করতেন না। আর আমার ক্ষেত্রেও এত তাড়াতাড়ি কোচিংয়ে আসা হত না। পরিস্থিতি যে ভাবে এল, সে ভাবেই ব্যাপারটা শুরু হল। পরিস্থিতি ঠিক হওয়ার পর আমি আবার টুর্নামেন্ট খেলতে শুরু করেছি। পাশাপাশি, আনন্দের অ্যাকাডেমির সঙ্গেও রয়েছি।
প্র: দাবায় ভারতকে কার্যত এখন এক নম্বর স্থানই দেওয়া হচ্ছে। তবুও গোটা দেশে ছড়িয়ে না পড়ে কয়েকটি রাজ্যে সেটা সীমাবদ্ধ। কী মনে হয় কেন এমনটা হচ্ছে?
সন্দীপন: আগামী দিনে বিশ্ব দাবায় ভারতের অবস্থান আরও ভাল হতে চলেছে। জুনিয়র প্লেয়াররা দারুণ করছে। কারণ, তাঁদের হাতে এখন অনেকটা সময় রয়েছে আরও উন্নতি করার। পাশাপাশি, কম্পিউটার, ইন্টারনেট আসার পরে তথ্যটা সহজে পাওয়া যাচ্ছে। সোভিয়েত থাকাকালীন দাবাকে নিয়ে রিসার্চ করা হত। দেশের সরকারও তাতে যুক্ত ছিল। সোভিয়েত ভাঙার পর গোটা বিশ্বে সেখানকার মানুষ ছড়িয়ে পড়েছিল। একটা সময়ে ইউএস দলটা পুরোটাই ছিল সোভিয়েতের প্রাক্তন প্লেয়ারদের নিয়ে। সেই সময় গোটা বিশ্ব জানল, সোভিয়েতের প্লেয়াররা কী ভাবে দাবাকে নিয়ে রিসার্চ করে। তার পর যখন কম্পিউটার এবং তার পর ইঞ্জিন এল (যারা দাবার চাল বলে দেয়) তখন দেখা গেল মানুষকে হারিয়ে দিচ্ছে ইঞ্জিন। তাই চ্যাম্পিয়ন বিশ্বের যে কোনও কোণা থেকে উঠে আসতে পারে। আনন্দের ক্ষেত্রটা আলাদা। কারণ, তিনি যখন উঠে এসেছেন তখন অনেক প্রতিবন্ধকতা ছিল। এখন আমার বিশ্বাস, কলকাতা থেকেও উঠে আসতে পারে। চেষ্টাটা যদি হয়, তা হলে আকাশটাই সীমারেখা।
প্র: তবে সুযোগ সুবিধার তো একটা অভাব থেকে যাচ্ছে?
সন্দীপন: সেটাই বলতে চাইছি। সম্প্রতি আমি দুবাই ওপেনে খেললাম। ওটা খুব ভাল টুর্নামেন্ট ছিল। সেরা কিছু গ্র্যান্ডমাস্টার খেলেছেন। এন্ট্রিও খুব কম ছিল। লো গ্রেডের প্লেয়ার তেমন ছিলেন না। কলকাতার প্লেয়াররা তো খেলতে পারতেন। তা হলে দুবাই ওপেনে কত জন কলকাতার প্লেয়ার খেললেন? এক জনও না। শুধু আমি। আমাদের কলকাতার কিছু প্লেয়ারের এই রেটিং আছে, তাঁরা যদি আয়োজকদের লিখতেন তা হলে তাঁরা খেলার নিমন্ত্রণ পেতেন। আমি ধরে নিচ্ছি, এর পিছনে অনেক টাকা খরচেরও বিষয় রয়েছে তাই কেউ করেননি। এই সময় তাঁরা অন্য কোনও টুর্নামেন্ট খেলেছেন যেখানে টাকা খরচ কম।
প্র: এর সুরাহা কোথায়?
সন্দীপন: আমরা যদি শুধু এইটুকু করতে পারি, ওরা ভাল টুর্নামেন্ট খেলার সুযোগ পাক, ভাল প্লেয়ারের বিপক্ষে খেলুক, তাঁদের সঙ্গে কথা বলুক। তবেই নতুন দিক খুলে যেতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ভারত থেকে অনেক বিশ্বমানের ট্রেনার কিন্তু উঠে এসেছে। বিশেষ করে কোভিডের সময়। সব কিছুর পরেও বলব, ভাল টুর্নামেন্ট বিশেষ করে ইউরোপে নির্বাচিত কিছু টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার জন্য ফিনান্সিয়াল সাপোর্ট লাগে। আমাদের প্লেয়াররা ঝুঁকি নিতে পারছে না এই কারণেই। প্রাইজ মানির জন্য ঝুঁকি নিয়ে লড়াইটা করতে পারছে না। তাই আপোস করে নিচ্ছে, যাতে এই প্রাইজমানি দিয়ে পরের টুর্নামেন্টটা খেলতে যেতে পারেন। এটা কোনও সুরাহা হতে পারে না। এটা আর খেলা থাকছে না। খেলার মাধ্যমে রোজগারটা গুরুত্ব পাচ্ছে। এটাই হত না, যদি, স্পনসর থাকত। যে সব রাজ্যের প্লেয়াররা এই সাপোর্ট পাচ্ছেন, তাঁরা মন খুলে খেলছেন। এই সাক্ষাৎকারটা যদি কোনও স্পনসর সংস্থা দেখে তা হলে তাদের উদ্দেশে বলব, কী দেখে স্পনসর করবেন আমাদের প্লেয়ারদের? এই ভেবে নয় যে, তাঁরা গ্র্যান্ডমাস্টার হবেন। এই ভেবে করুন, তাঁরাই বিশ্বের টপে পৌঁছতে পারেন। ওঁদের মাথার উপর থেকে টাকার চাপটা সরিয়ে নিয়ে দেখুন, ওঁরা কোথায় পৌঁছতে পারেন।
প্র: নিজেকে এই মুহূর্তে কোথায় দেখছেন বা লক্ষ্যটা কী?
সন্দীপন: আমার বয়স চল্লিশের ঘরে। এই বয়সে এসে কোচিং সব থেকে ভাল পেশা এক জন দাবা প্লেয়ারের জন্য। এক জন দাবা প্লেয়ারকে মনে রাখতে হবে, আমাকে যেটা টানছে সেটার মধ্যে থাকা, ভালবাসা। আর সেই ভালবাসার টানেই আমি খেলছি এখনও। আর আমি চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসি। চ্যালেঞ্জ নিয়ে তার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া। রেটিং, শিরোপা সব বাহ্যিক বিষয় আসল হল উপভোগ করা, ভাল লাগা, ভালবাসা। লক্ষ্য তো থাকেই তবে দাবা উপভোগ করাটার সঙ্গে আপোস না করে।
এ ভাবেও ভাবা যায়। সন্দীপনের সঙ্গে কথা বলার শেষে এমনটাই মনে হয়। যিনি বলেন, এত দেশ, বিদেশ ঘুরে তিনি জায়গা নয়, ট্যুরিস্ট স্পট নয়, মানুষ দেখেন, তাঁদের সঙ্গে মেশেন। তিনি নানা জায়গায় নানা ধরনের সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হন, তিনি তাঁর জানার গণ্ডিটা ক্রমশ বাড়িয়ে চলেন। আসলে এটাই সন্দীপনকে সবার থেকে আলাদা করেছে।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার