অলস্পোর্ট ডেস্ক: প্রিমিয়ার চেস লিগ বেঙ্গল চ্যাপ্টার বেঙ্গল চ্যাপ্টার হই হই করে শুরু হয়ে গিয়েছে জেলায় জেলায়। এই লিগের জন্য ২৩টি জেলাকে ছ’টি জোনে। প্রথমটি হয়ে গেল দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলা নিয়ে তৈরি জোনে। ১০-১১ জুন বালুরঘাটে আয়োজন করা হয়েছিল দুই দিনের প্রতিযোগিতা। ৭২ জন প্লেয়ার অংশ নিয়েছিল সেখানে। সেখান থেকে ১০ জন র্যাপিডেও ১০ জন ব্লিৎজের ফাইনাল রাউন্ডের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছে। তার মধ্যে কেউ কেউ দুই বিভাগেই যোগ্যতা অর্জন করেছে। যার ফলে মোট ১৫ জন যোগ্যতা অর্জন করেছে। অনূর্ধ্ব-৮, ১০, ১২, ১৪ থেকে বেছে নেওয়া হয়েছে সেরা প্লেয়ার। এছাড়া জুনিয়র অনূর্ধ্ব-২০ ছেলে ও মেয়ে বিভাগও রয়েছে। দিব্যেন্দু বড়ুয়ার কথা, প্রথম জোনের ফলের সব থেকে সদর্থক দিক হল চারটি জেলা থেকেই ছেলে-মেয়েরা যোগ্যতা অর্জন করেছে।
এই লিগের ফাইনাল হবে ১২-১৩ অগস্ট কলকাতায়। পরবর্তী জোনের খেলা উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়াকে নিয়ে। খেলা হবে আগরপাড়ায়। এছাড়া একই সময়ে দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম ও পুরুলিয়াকে নিয়ে জোনের খেলা হবে দুর্গাপুরে। ১-২ জুলাই হবে এই দুটো জোনের খেলা। কোন জোনে ক’টি জেলা থাকবে তা অবশ্য নির্ভর করছে দুটো বিষয়ের উপর। তার মধ্যে অন্যতম প্লেয়ার সংখ্যা। যেখানে প্লেয়ারের সংখ্যা বেশি সেখানে জেলার সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হবে। এছাড়া দেখা হবে ভৌগলিক অবস্থান। পাশাপাশি থাকা জেলাগুলোকে একজোনে রাখা হবে। যেমন কলকাতার সঙ্গে রাখা হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনাকে।
প্রত্যেক জোনের জন্য একজন করে মেন্টর রয়েছেন। যাঁরা যোগাযোগ তৈরি করছে, আয়োজন করছে জেলার দাবা প্রশাসনের সঙ্গে মিলে। কলকাতা থেকে ঘড়ি, আর্বিটার, বোর্ড সব পাঠানো হচ্ছে জেলায় জেলায়। সারা বাংলা দাবা সংস্থার উদ্যোগে যেটা হচ্ছে সেটা ভারতে এর আগে কখনও হয়নি।পরবর্তী ইভেন্ট রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা ও নদিয়ায়। সেখানে আশা করা হচ্ছে ২০০-র উপর প্লেয়ার অংশ নেবে। আর একই দিনে দুর্গাপুরে আয়োজিত জোন থেকে ২৫০-এর মতো অংশগ্রহনকারির প্রত্যাশা রয়েছে।
খেলার জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হচ্ছে। অফলাইন তাদেরই নেওয়া হচ্ছে যাঁদের সেই সুবিধে নেই। তাদের মেন্টর রেজিস্ট্রেশন করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন মেন্টর। তবে সেই সংখ্যাটা কম। অনূর্ধ্ব-১২ পর্যন্ত ১২০০, তার উপর ১৪০০ টাকা করে রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হচ্ছে অংশগ্রহনকারীদের। যেটা প্রায় সকলেরই আয়ত্বের মধ্যে।
কলকাতা থেকে ৩৫০-র কাছাকাছি প্লেয়ার খেলবেন বলে আশা করছেন গ্র্যান্ডমাস্টার দিব্যেন্দু বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘‘সব থেকে বেশি প্লেয়ার রয়েছে কলকাতায়। তাই কলকাতা থেকে সব থেকে বেশি প্লেয়ার অংশগ্রহন করবে বলে মনে হচ্ছে। সবার শেষ হবে ২৯-৩০ জুলাই হবে কলকাতা জোনের খেলা। প্রতিজোনের জন্য থাকছে ১ লাখ টাকা করে পুরস্কার।’’ ফাইনালে যে সেটা অনেকটাই বাড়বে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।
মহারাষ্ট্রের অভিজিৎ কুন্তে এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। দিব্যেন্দু বড়ুয়া বলছিলেন, ‘‘এই চেস লিগের কথা শুনে খুব খুশি অভিজিৎ কুন্তে। ফাইনালে ভরত সিং আর অভিজিৎ কুন্তেকে আমন্ত্রণ জানানোর ইচ্ছে রয়েছে।’’ পাশাপাশি দিব্যেন্দু মনে করেন, চেস লিগ খেলে প্লেয়াররা নিজেদের প্রতিভাকে সামনে নিয়ে আসতে পারছে। জেলায় জেলায় দাবাকে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে। তাঁদের সেই মঞ্চটা দেওয়া হচ্ছে যেখানে তারা তাদের প্রতিভা দেখাতে পারবে। কে বলতে পারে এখান থেকে কেউ বড় মঞ্চেও পৌঁছে যেতে পারে। আর এমন সুযোগ পেয়ে সকলেই খুব উত্তেজিত।
তিনি বলেন, ‘‘জেলার কাছে আমরা পৌঁছতে পারছি আর ওরা আমাদের কাছে পৌঁছতে পারছে। ভবিষ্যতে এটাকে আরও উন্নত করার ইচ্ছে আছে। প্রথম জোনের খেলায় ৭২ জন প্রতিযোগী অংশ নিলেও তাই আমাদের আফশোস নেই।’’ আইপিএল-এর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘‘আইপিএল-এ কী হয়েছে? এত অনামী প্লেয়ার উঠে আসছে সেখান থেকে। আইপিএল-এর মতো এত বড় মঞ্চ না হলেও, অত টাকার খেলা না হলেও একটা তো সুযোগ তৈরি করা গেল। সাড়া পেলে এটিকে আরও বাড়ানো হবে।’’
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার