Thursday, February 13, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeআইপিএল‘‘সৌরভ স্যার সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে কিছু বলছেন, সেটাই আমার মোটিভেশন’’

‘‘সৌরভ স্যার সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে কিছু বলছেন, সেটাই আমার মোটিভেশন’’

সুচরিতা সেন চৌধুরী: খেলা তাঁর রক্তে। ক্রিকেট তাঁর ভালবাসা। চন্দননগর থেকে উঠে আসা এক বাঙালির কাছে স্বপ্ন। তবে তাঁকে পথ দেখিয়েছিলেন তাঁর দাদা ঈশান পোড়েল। আর তাঁর পর সেই ধারা ধরে রাখার চেষ্টায় ভাই অভিষেক পোড়েল। আইপিএল-এ যে গুটিকয় বাঙালি রয়েছেন তাঁদের মধ্য়ে একজন তিনি যাঁর নাম নিয়ে কিছুটা হলেও চর্চা হয়েছে। এছাড়া ঋদ্ধিমান সাহা। যিনি জাতীয় দলের জার্সি গায়ে দেশকে ভরসা দিয়েছেন। তাই এখনই তাঁর সঙ্গে তুলনা না হলেও আরও এক বাঙালি ক্রিকেটার উইকেটের পিছনে দাঁড়িয়ে বিশ্ব জয়ের স্বপ্ন দেখতেই পারেন। ২১ বছরের অভিষেক পোড়েল সিএবি-র টি২০ প্রো-লিগের ট্রফি উন্মোচনের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে একবেলার জন্য এসেছিলে‌ন কলকাতায়। অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েই উড়ে গেলেন দিল্লি দলের সঙ্গে যোগ দিতে। তার আগে বেশ কিছুটা সময় পাওয়া গেল বাংলার ক্রিকেটকে স্বপ্ন দেখানো অভিষেকের সঙ্গে কথা বলার।

প্র: দিল্লি ড্রেসিংরুমে একাধিক তারকা প্লেয়ার, তারকা কোচিং স্টাফ রয়েছেন, সেখানের অভিজ্ঞতা কেমন?

অভিষেক: অভিজ্ঞতা খুব ভাল। দলের সিনিয়র প্লেয়ার থেকে সাপোর্ট স্টাফ সকলেই সব সময় সাহায্য করে। আমি চেষ্টা করি সেটাকে কাজে লাগানোর। ওভারঅল অভিজ্ঞতা খুবই ভাল।

প্র: বাংলার ড্রেসিংরুম আর আইপিএল-এর ড্রেসিংরুমের মধ্যে নিশ্চই অনেক পার্থক্য, অনেক বেশি পেশাদার, কতটা পার্থক্য ড্রেসিংরুমের দিক থেকে?

অভিষেক: সত্যি কথা বলতে কী কোনও পার্থক্য তেমন নেই। সৌরভ স্যার (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়), পন্টিং স্যার (রিকি পন্টিং) বন্ধুর মতো মেশে। সবাই খুব ফ্রি আর ফ্র্যাঙ্ক। কোনও অসুবিধে হলে বা কোনও দরকার হলে সহজেই তাদেরকে বলা যায়। তাঁরাও সব সময় সাহায্য করে। এমনকি বলাই হয়েছে আমাদের ক্রিকেটের জন্য যা দরকার সেটা সরাসরি বলতে, এবং দল তার ব্যবস্থা করবে। সিনিয়র প্লেয়াররা এসে সব সময় কথা বলে। সুবিধে অসুবিধে জানতে চায়। সব মিলে শুরু থেকেই ড্রেসিংরুমে একটা কমফোর্ট জো‌ন তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

প্র: অধিনায়ক হিসেবে ঋষভ পন্থ কেমন?

অভিষেক: খুবই ভাল। সব সময় সবার সঙ্গে কথা বলে। মাঠের মধ্যে, মাঠের বাইরে দলের সব কিছু শেয়ার করে নেয়। দলকে বুঝিয়ে বলে কেন ব্যাটিং নিচ্ছি। দলের ব্যাটিংয়ের কতটা ক্ষমতা আছে তা নিয়ে কথা বলে। দলের পোটেনশিয়াল নিয়ে আত্মবিশ্বাস দেয়।

যখন উইকেটের পিছনে

প্র: এই মরসুমে সব ম্যাচই খেলার সুযোগ হয়েছে, নিজের পারফর্মেন্সে খুশি?

অভিষেক: না আমি খুশি নই। এখনও অনেকগুলো ম্যাচ বাকি রয়েছে। আর ব্যক্তিগত পারফর্মেন্সের থেকেও আমার মনে হয় দল ভাল খেললে আর যোগ্যতা অর্জন করলে সেটাই সাফল্য। এখন সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছি।

(প্রসঙ্গত এই মরসুমে ১১টি ম্যাচ খেলে মোট ২০২ রান করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ রান ৪২, স্ট্রাইকরেট ১৫১.৮৮, ২৪টি বাউন্ডারি ও ৬টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন।)

প্র: দল এই মুহূর্তে খুব ভাল জায়গায় রয়েছে সেটা বলা যাবে না, এই অবস্থায় দলের সবাই লড়াইয়ের জন্য কীভাবে তৈরি হচ্ছে?

অভিষেক: আমাদের দলের সব থেকে বড় মোটিভেশন হল টিম বন্ডিং। সেটা আমরা প্রতিদিন শক্ত করি। সবাই সবার পাশে থাকি আর সবাই একসঙ্গেই প্লে-অফের জন্য ঝাঁপাচ্ছি। তিনটে ম্যাচ জিতে নিতে পারলে আমাদের সুযোগ রয়েছে, সেই চিন্তাভাবনা থেকেই দল এখন এগোচ্ছে। তবে দলের মধ্যে একটা বিষয় খুব স্পষ্ট, ফল যাই হোক না কেন সবাই এক সঙ্গে থাকা।

প্র: দিল্লি ক্যাপিটালস দলে আপনার সব থেকে ভাল বন্ধু কে?

অভিষেক: এই দলে আমার সমবয়সী সবাই আমার খুব কাছের বন্ধু। তাদের মধ্যে যশ ঢুল, কুমার কুশাগ্রা, স্বস্তীক চিকারা রয়েছে। আমি যাদের সঙ্গে সব সময় থাকি।

প্র: ড্রেসিংরুমে এমন কেউ আছেন যাঁরা খুব পেছনে লাগেন বা খুব রাগী, যাঁদের দেখলে ভয় লাগে?

অভিষেক: আগেই বলেছি এই দলে সবাই খুব বন্ধুর মতো মেশে। ভয় পাওয়ার মতো কেউ নেই। কিন্তু সবাই সবার পিছনে লাগে। বিশেষ করে পন্থ ভাই (ঋষভ পন্থ)। এছাড়া অক্ষর প্যাটেল আছে, কুলদীপ যাদব আছে, যারা বেশি পিছনে লাগে। বিশেষ করে সিনিয়ররা বেশি পিছনে লাগে সবার।

দাদা ঈশান পোড়েলের সঙ্গে।

প্র: সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভূমিকা কী এই দলে আপনার জন্য?

অভিষেক: ওনার মতো একজন লিজেন্ড যে দলে রয়েছেন আমি সেই দলে খেলছি তার গাইডেন্স পাচ্ছি। পাশাপাশি উনি যখন আমাকে নিয়ে কথা বলেন, সেটাই আমার জন্য অনেক পাওয়া। আমার কাছে সব থেকে বড় মোটিভেশন ওই নামটাই। যাঁকে ছোটবেলায় টিভিতে খেলতে দেখেছি আর আজকে সেই আমাকে সামনে থেকে কিছু বোঝাচ্ছে এটাই আমার জন্য অনেক বড় বিষয়।

প্র: পরিবারে খেলাধুলোর পরিবেশ আর সেখান থেকে আপনার ক্রিকেটে আসাটা কীভাবে?

অভিষেক: আমি দাদাকে (ঈশান পোড়েল) দেখেই ক্রিকেটে এসেছি। দাদা এখনও সিনিয়র বেঙ্গল খেলছে। টানা তিন বছর আইপিএল দলেও ছিল। ও আমাকে সব সময় গাইড করে। আমার কী করা উচিত বা উচিত নয়। আমরা এক সঙ্গে থাকলেই খেলা নিয়ে আলোচনা করি। অনেক কাজে লাগে সেটা।

প্র: এই খেলায় আপনার আইডল কে?

অভিষেক: ছোটবেলা থেকে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে দেখেছি, তিনি অবশ্যই আমার কাছে বড় প্রেরণা। তবে যদি আমার খেলার জায়গা থেকে দেখি তাহলে অবশ্যই অ্যাডাম গিলক্রিস্ট আমার আইডল।

প্র: অনেক শুভেচ্ছা আগামীর জন্য এবং আইএসএল-এর বাকি ম্যাচের জন্য।

অভিষেক: ধন্যবাদ।

এখনও মাটিতেই পা রয়েছে বাংলার এই উইকেট কিপার-ব্যাটারের। এখনও সেলিব্রিটি স্ট্যাটাস গায়ে লাগেনি। সেই পাশের বাড়ির ছেলেটার মতই ব্যবহার। কে বলবে আইপিএল-এ সৌরভ, পন্টিং, পন্থদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগ করে নেন এই ছেলে। নিজের পাশাপাশি দলের পারফর্মেন্সই তাঁর জন্য শেষ কথা। শুধু আইপিএল নয় তিনি ভরসা দিচ্ছেন বাংলার ক্রিকেটকেও। স্বপ্ন তো অবশ্যই জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানো। সেদিকে তাকিয়েই নিয়মিত নিজের সেরাটা দিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য অভিষেক পোড়েলের।

(ছবি— অভিষেক পোড়েলের ইনস্টাগ্রাম থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments