অলস্পোর্ট ডেস্ক: টস নিয়ে এখন আর ভাবেন না ভারতীয়রা। রোহিত শর্মাও হয়তো ছেড়ে দিয়েছেন এই ভাবনা য়ে টস জিতলে কী সিদ্ধান্ত নেবেন। বরং আগাম মানসিক প্রস্তুতি নিশ্চই থাকে এই ভারতীয় দলের যে প্রতিপক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবে তাদের সেটাই করতে হবে। তাই এখন আর সে সবে এই ভারতীয় দলের আর কোনও সমস্যা হয় না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এর ফাইনালও তার ব্যতিক্রম নয়। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এই নিয়ে পর পর ১৫টি টস হারলেন রোহিত শর্মা। দুবাইয়ে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ২৫১-৭-এ থামে নিউজিল্যান্ড। লক্ষ্য খুব বড় না থাকলেও পিচের নিরিখে পড়ে ব্যাট করে এই রানে পৌঁছনো যে খুব সহজ কাজ হবে না সেটা আগে থেকেই বলছিলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে সেই প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দুরন্ত জয় তুলে নিয়ে ১২ বছর পর আবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন ভারত। এর আগে ২০০২-এ যুগ্মভাবে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত এবং ২০১৩-তে শেষবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এই নিয়ে তৃতীয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে নিল ভারতীয় ক্রিকেট দল।
শুরুটা দারুণভাবে করে দিয়েছিলেন দুই ওপেনার। তার আগে অবশ্য প্রথমে ব্যাট করে কিউইদের ব্যক্তিগত ব্যাটিংয়ে যদি নজর যায় তাহলে দেখা যাবে কেউই খুব বড় রানে পৌঁছতে পারেননি দুটো হাফসেঞ্চুরি ছাড়া। এদিন ওপেন করতে নেমে উইল ইয়ং ১৫ ও রাচিন রবীন্দ্র ৩৭ রান করে আউট হয়ে যান। এর পর তিন নম্বরে নেমে ১১ রানে ফেরেন কেন উইলিয়ামসন। এর পর চার নম্বরে নামা ড্যারেল মিচেল দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা শুরু করেন। কিন্তু টম লাথাম ১৪ ও গ্লেন ফিলিপস ৩৪ রান করে আউট হয়ে গেলে মিচেলকে সমথর্ন করতে নামেন মাইকেল ব্রেসওয়েল।
ড্যারেল মিচেল ও মাইকেল ব্রেসওয়েল নিউজিল্যান্ডের রানকে প্রতিযোগিতামূলক স্কোরে নিয়ে যেতে সক্ষম হন। ড্যালের মিচেল ৬৩ রানে আউট হন। ৮ রানে ফেরেন অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। ৪০ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন মাইকেল ব্রেসওয়েল। নাথান স্মিথ নামলেও রানের খাতা খোলার সুয়োগ পাননি তিনি। ভারতের সামনে ২৫২ রানের লক্ষ্যমাত্রা রেখে শেষ হয় নিউজিল্যান্ডের ইনিংস। ভারতের হয়ে এদিন দুটো করে উইকেট নেন বরুণ চক্রবথীইর্ ও কুলদীপ যাদব। একটি করে উইকেট নেন মহম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাডেজা। অক্ষৱ প্যাটেল ও হার্দিক প্যাণ্ড্যের ঝুলি এদিন ফাঁকাই থেকে যায়।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে এদিন আবার জ্বলে ওঠে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার ব্যাট। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত আর এক ওপেনার শুভমান গিলের। যদিও তিনি বড় রানে পৌঁছতে ব্যর্থ হন। তবে যখন রোহিত হাত খুলে বড় শট খেলছিলেন তখন আর একদিকের উইকেট ঠান্ডা মাথায় ধরে রেখেছিলেন শুভমান। তবে ফিলিপসের অসাধারণ ক্যাচে ৩১ রান করে ফিরতে হয় তাঁকে। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে বিরাট কোহলি মাত্র দুই বল খেলে ১ রান করে ফিরে যান। ডিআরএস নিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। তবে ২৫২ রানের লক্ষ্যে ভারতের জন্য সব থেকে বড় ধাক্কাটা অবশ্যই রোহিত শর্মার উইকেট। ৮৩ বলে সাতটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৭৬ রান করে প্যাভেলিয়নে ফিরতে হয় তাঁকে। তিনি যেভাবে ব্যাট করছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল যে কোনও সময় সেঞ্চুরিটা হয়ে যাবে। কিন্তু সেটা না হওয়াটা ভারতীয় ব্যাটিংয়ের জন্য ধাক্কা। তার মধ্যে ফিরে গিয়েছেন শুভমান ও বিরাট।
তবে এই ভারতীয় দলে আট নম্বর পর্যন্ত ব্যাট হাতে দলকে জেতানোর ক্ষমতা রাখেন। তাই রোহিতের আউটে হতাশা এলেও ভরসা ছিল শ্রেয়াস আইয়ার, অক্ষর প্যাটেল, কেএল রাহুল, হার্দিক পাণ্ড্যে ও রবীন্দ্র জাডেজার মতো প্লেয়ারদের উপর। শ্রেয়াস নেমেই ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যাটিং শুরু করেন। পুরো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ব্যাট হাতে ভরসা দিয়েছেন তিনি। তবে ৪৫ রানে জেমিসন তাঁর সহজ ক্যাচ না ফেললে তখনই প্যাভেলিয়নে ফিরতে হতো তাঁকে। তাঁর আগের বলেই বিশাল ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের ভুলের সুযোগ নিতে ব্যর্থ শ্রেয়াস। আবারও তুলে মারতে গিয়েছিলেন। এবার আর ভুল করেননি রাচিন রবীন্দ্র। ৬২ বলে ৪৮ রান করে আউট হয়ে যান তিনি।
এর পর অক্ষর প্যাটেলের সঙ্গে ব্যাট করতে নামেন কেএল রাহুল। কিন্তু সেই একই ভুল করে বসেন অক্ষর প্যাটেলও। দ্রুত বড় রানের আশায় বাজে শট নিয়ে ক্যাচ দিয়ে বসেন তিনি। ২৯ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরেন অক্ষর। তখন ৫১ বলে ৪৯ রান দরকার ভারতের। বাকি কাজ কেএল রাহুলের সঙ্গে করে দেওয়ার কথা ছিল হার্দিক পাণ্ড্যের। কিন্তু তেমনটা হল না। ১৮ বলে ১৮ রান করে আবারও সেই তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে আউট হয়ে গেলেন হার্দিক। যার কোনও প্রয়োজন ছিল না। শেষ পর্যন্ত ৩৪ রানে কেএল রাহুল ও ৯ রানে রবীন্দ্র জাডেজা অপরাজিত থেকে ভারতকে এক ওভার বাকি থাকতেই চার উইকেটে জয় এনে দিলেন। ৪৯ ওভারে ২৫৪-৬-এ থামল ভারত।
নিউজিল্যান্ডের হয়ে দুটো করে উইকেট নিলেন মিচেল স্যান্টনার ও মাইকেল ব্রেসওয়েল। একটি করে উইকেট নিলেন কেইল জেমিসন ও রাচিন রবীন্দ্র।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার