অলস্পোর্ট ডেস্ক: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫ শুরুর একদিন আগেই নিজের দীর্ঘ লড়াইয়ের কথা সবার সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছিলেন মহম্মদ শামি। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একজন প্লেয়ারের জন্য মাঠের বাইরে থাকা কতটা যন্ত্রণার তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট ছিল। দীর্ঘ টালবাহানার পর শেষ পর্যন্ত দলে ফিরেছেন তিনি। ইংল্যান্ড সফরেই ভারতীয় দলে প্রত্যাবর্তন হয়েছিল। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম ম্যাচেই বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বল হাতে সেই শামিকে দেখা গেল যিনি ২০২৩ ওডিআই বিশ্বকাপ ফাইনালে শেষ মাঠে নেমেছিলেন এবং বল হাতে সর্বোচ্চ উইকেট নিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার দুবাইয়ের মাটিতে যেন সেখান থেকেই শুরু করলেন তিনি। তবে শুরুতে ভারতের জন্য লড়াই যতটা সহজ মনে হয়েছিল ততটা সহজ হয়নি। এই সারফেসে ব্যাটিং সহজও ছিল না। ২২৯ রানের লক্ষ্যে নেমে ভারতের সহঅধিনায়ক শুভমান গিলের ব্যাটের সৌজন্যে সেখানে পৌছতে সময় লাগল ৪৬.৩ ওভার। ভারতীয় বোলারদের দুরন্ত বোলিংয়ের মান সেঞ্চুরি হাঁকিয়েই রাখলেন শুভমান। ৬ উইকেটে বাংলাদেশকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরু করে দিল টিম ইন্ডিয়া।
টস হেরে প্রথমে বোলিং পেয়েছিল ভারত। যদিও ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মার কথায়, টস জিতলেও তারা পরেই ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতেন এবং সেটা কেন তা শুরু থেকেই বুঝিয়ে দিলেন ভারতীয় বোলাররা। বল হাতে প্রথম ওভারে শামি আর দ্বিতীয় ওভারে হর্ষিত রানা উইকেট তুলে নিয়ে শুরুতেই প্রতিপক্ষ বাংলাদেশকে বড় ধাক্কা দিয়েছিল ভারতীয় বোলাররা। দলগত দুই রানে দুই উইকেট তাদের আত্মবিশ্বাসকেও অনেকটাই নাড়িয়ে দিয়েছিল। তবে হাল ছেড়ে দেয়নি দলের মিডল অর্ডার।
এদিন তানজিদ হাসান ও সৌম্য সরকার বাংলাদেশের হয়ে ওপেন করতে নেমেছিলেন। প্রথম ওভারে শামির বলের দাপটে দলগত এক রানে এক উইকেট চলে যায় বাংলাদেশের। রানের খাতা না খুলেই ফিরে যান সৌম্য। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে অধিনায়ক নাজমুল হাসান শান্ত মাত্র দুই বল খেলে শূন্য রানে ফেরেন প্যাভেলিয়নে। ওপেনার তানজিদ হাসান ২৫ বলে ২৫ রান করে কিছুটা চেষ্টা করেন। তার পর মেহেদি হাসান ৫, মুশফিকুর রহিম ০ শূন্য রানে আউট হওয়ার পর তৌহিদ হৃদয় ও জাকের আলি ৩৫-৫ থেকে বাংলাদেশের রানকে ১৮৯-এ নিয়ে যায় এই জুটি।
১১৮ বলে ১০০ দিনের ইনিংস খেলেন তৌহিদ। জাকের থামেন ৬৮ রানে। এছাড়া মুশফিকুর রহিম ০, রিশাদ হোসেন ১৮, তানজিম হাসান ০, তাসকিন আহমেদ ৩ রান করে আউট হলেন। ৪৯.৪ ওভারে ২২৮ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। এর মধ্যেই রোহিত শর্মা সহজ ক্যাচ ফেলায় হ্যাটট্রিকের সুযোগ হারান অক্ষর প্যাটেল, দুই উইকেট নেন তিনি। ভারতের হয়ে পাঁচ উইকেট নেন মহম্মদ শামি। তিন উইকেট হর্ষিত রানার।
ভারতীয় বোলাররা ব্যাটারদের জন্য রাস্তাটা সহজ করে দিয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু ব্যাটাররা ম্যাচটা অত সহজে ও জিতল না। এদিন ২২৯ রানের লক্ষ্যে ওপেন করতে নেমেছিলেন রোহিত শর্মা ও শুভমান গিল। কিন্তু রোহিত বড় পার্টনারশিপে সঙ্গে দিতে পারেননি। ৪১ রান করে আউট হয়ে যান তিনি। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২২ রান করে হতাশ করলেন বিরাট কোহলিও। আশা করা হয়েছিল গিলের সঙ্গে ভরসা দেবেন শ্রেয়াস আইয়ার ও কিন্তু তিনিও ব্যর্থ। ফিরলেন ১৫ রানে। ৮ রানে আউট হন অক্ষর প্যাটেল। এর পর শেষ পর্যন্ত গিলকে সঙ্গ দেন কেএল রাহুল।
১২৫ বলে সেঞ্চুরি হাঁকালেন এই মুহূর্তে বিশ্বের এক নম্বর ওডিআই ব্যাটার শুভমান গিল। থামলেন দলকে জিতিয়েই। ১২৯ বলে ন’টি বাউন্ডারি ও দু’টি ওভার বাউন্ডারির সৌজন্যে ১০১ রানে অপরাজিত থাকলেন গিল। সঙ্গে ছক্কা হাঁকিয়ে ভারতকে জয় এনে দিলেন কেএল রাহুল। ৪১ রানে অপরাজিত থাকলেন তিনি। ২১ বল বাকি থাকতেই চার উইকেট হারিয়ে ২৩১ রান তুলে নিল ভারত।বাংলাদেশের হয়ে দুই উইকেট নেন রিশাদ হোসেন। একটি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার