অলস্পোর্ট ডেস্ক: তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজ আগেই হেরে গিয়েছে ভারত। প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর শেষ ম্যাচ দুই দলের জন্যই ছিল নিয়মরক্ষার। এই ম্যাচের ফলের উপর সিরিজের ফলের কোনও পরিবর্তন হবে না তবে এই ম্যাচের ফল দুই দলের মধ্যের ব্যবধান কমাবে তো বটেই। এবং তার থেকেও বেশি করে এই ম্যাচ ছিল ভারতের জন্য সম্মানরক্ষার ম্যাচ। এক কথায় হোয়াইটওয়াশের হাত থেকে বাঁচতে এই ম্যাচ জিততেই হতো ভারতকে। সঙ্গে এই ম্যাচ যে বিরাট কোহলির প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ হয়ে উঠবে তাও মনে করা হচ্ছিল। এবং হলও তাই। প্রায় অবসরের দরজায় পৌঁছে যাওয়া দুই অভিজ্ঞ রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির ব্যাটেই শেষ ম্যাচে জয়ের মুখ দেখল ভারত। ৬৯ বল বাকি থাকতে ৯ উইকেটে ম্যাচ জিতে সিরিজ ১-২-এ হেরে শেষ করল ভারত।
অন্যদিকে টস হারের ধারা ধরে রেখে নিজের ব্যর্থতাও ধারাও বজায় রাখলেন অধিনায়ক শুভমান গিল। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। প্রথমে ব্যাট করে ৪৬.৪ ওভারে ২৩৬ রানে অল আউট হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। দলের হয়ে একমাত্র হাফসেঞ্চুরিটি করেন ম্যাচ রেনশ। এদিন অস্ট্রেলিয়ার রানের তালিকা কিছুটা তাদের জন্য হতাশাজনকই ছিল। দুই ওপেনার মিচেল মার্শ ৪১ ও ত্রাভিস হেড ২৯ রান করে আউট হয়ে যাওয়ার পর রেনশ ছাড়া আর কেউ ভরসা দিতে পারেননি। তিনি ফেরেন ৫৬ রানে। এছাড়া ম্যাথু শর্ট ৩০, অ্যালেক্স ক্যারি ২৪, কুপার কনোলি ২৩, মিচেল ওয়েন ১, মিচেল স্টার্ক ২, নাথান এলিস ১৬ ও জোশ হেজেলউড কোনও রান করেই ফেরেন প্যাভেলিয়নে। ২ রানে অপরাজিত থাকেন অ্যাডাম জাম্পা।
এদিন ভারতের হয়ে বল হাতে জ্বলে ওঠে হর্ষিত রানা। যাঁকে দলে নেওয়া নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, গৌতম গম্ভীরের কাছের প্লেয়ার হওয়ার জন্যই হর্ষিত নিয়মিত ভারতীয় দলে সুযোগ পাচ্ছেন। তাঁর থেকে অনেকবেশি প্রতিভাবানদের বাইরে বসে থাকতে হচ্ছে। তবে এদিন যেন ৪ উইকেট নিয়ে সেই সবেরই জবাব দিয়ে দিলেন তিনি। ২ উইকেট নিলেন ওয়াশিংটন সুন্দর। একটি করে উইকেট মহম্মদ সিরাজ, কুলদীপ যাদব, প্রসিধ কৃষ্ণা ও অক্ষর প্যাটেলের।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১ উইকেট হারিয়েই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ভারত। আর ভারতের এই জয়ের কারিগর রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি। প্রথম ম্যাচে ব্যর্থতার পর দ্বিতীয় ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে রানে ফিরেছিলেন প্রাক্তন অধিনায়ক রোহিত। আর সেই একই দিনেও ব্যর্থতাই সঙ্গী ছিল আর এক প্রাক্তন অধিনায়ক বিরাট কোহলি। পর পর দুই ম্যাচ রানের খাতা না খুলেই প্যাভেলিয়নে ফিরতে হয়েছিল কোহলিকে। তার পরই জল্পনা উঠে গিয়েছিল, এবার হয়তো অবসর নিয়েই নেবেন বিরাট। কিন্তু তৃতীয় ম্যাচেই ফিরলেন স্বমহিমায়। রোহিতের সেঞ্চুরির মঞ্চে বিরাটের ব্যাট থেকেও এল হাফসেঞ্চুরি। রোহিতের সঙ্গে ওপেন করতে নেমে শুভমান গিল দ্রুত আউট হয়ে যান ২৪ রানে।
ভারতের রান ৬৯-১ থেকে বিরাট-রোহিত জুটি তা পৌঁছে দেন শেষ পর্যন্ত। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে একটি মাত্র উইকেট নেন জোশ হেজেলউড। এদিন যেন এই দুই ব্যাটারকে পাওয়া গেল সেই পুরনো ছন্দে যখন তাঁদের দিকেই তাকিয়ে এগিয়ে যেত ভারতীয় ক্রিকেট দল। এখন সময় বদলেছে, নতুন মুখরা জায়গা করে নিয়েছে দলে। অধিনায়কত্বও নবাগত শুভমানের হাতেই। আর তার মধ্যেই অজিদের বিরুদ্ধে দাপট দেখিয়ে খেলায় ফিরলেন দুই তারকা ক্রিকেটার। ৩৮.৩ ওভারে যখন বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ভারতকে ২৩৭ রানের লক্ষ্যে পৌঁছে দিলেন দুই ব্যাটার তখন রোহিতের নামের পাশে ১২১ (১২৫ বল, ১৩x৪, ৩x৬) ও কোহলির ৭৪ (৮১ বল, ৭x৪)। দু’জনেই অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়লেন। ১৭৩ বলে ১৬৮ রানের অপরাজিত এই পার্টনারশিপ লেখা থাকবে বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার





