অলস্পোর্ট ডেস্ক: দক্ষিণ আফ্রিকা-ভারত চার ম্যাচের টি২০ সিরিজের শেষ ম্যাচে বিধ্বংসী মেজাজে পাওয়া গেল ভারতের দুই ব্যাটারকে। দু’জনেই চার ম্যাচে দুটো করে সেঞ্চুরি করে ফেললেন। তিলক ভর্মা শেষ দুই ম্যাচে পর পর সেঞ্চুরি করলে, সঞ্জু স্যামসন প্রথম এবং শেষ ম্যাচে করলেন। এদিন এক সঙ্গে জ্বলে উঠল দু’জনের ব্যাট, যা থামানোর কোনও পথ্য দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের কাছে ছিল না। যার ফল শুক্রবার জোহানেসবার্গে টস জিতে প্রথম ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারত মাত্র এক উইকেট হারিয়ে ২৮৩ রান তুলে নিল। এক কথায় রানের পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে শুরুতেই খেই হারায় দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং। শেষ পর্যন্ত ১৩৫ রানে শেষ ম্যাচ জিতে সিরিজ ৩-১-এ জিতেই দেশে ফিরছেন ভারতীয় ক্রিকেটের একঝাঁক ভবিষ্যত তারকা।
টি২০ ক্রিকেটে ২৮৩ রান তাড়া করে জেতা কোনও চমৎকারের থেকে কম নয়। যে চমৎকার করে দেখাতে পারেনি দক্ষিণ আফ্রিকা। চার ম্যাচের সিরিজের প্রথম ও তৃতীয় ম্যাচ জিতে সিরিজে ২-১ এগিয়েই শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল সূর্যকুমারের ভারত। ভারতের সামনে যখন ছিল সিরিজ জয়ের হাতছানি দক্ষিণ আফ্রিকা তখন মরিয়া ছিল সিরিজ অন্তত ড্র রেখে শেষ করতে। তবে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের দাপটের সামনে সব আশায় জল ঢালতেই হল। এদিন ওপেন করতে নেমেছিলেন সঞ্জু স্যামসন ও অভিষেক শর্মা। প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরির পর, পর পর দুই ম্যাচে রানের খাতাই খুলতে পারেননি সঞ্জু। যা নিয়ে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে। আর এদিন সে সবেরই জবাব দিলেন ব্যাটেই।
৫১ বলে সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ৫৬ বলে ১০৯ রান করে অপরাজিত থাকলেন সঞ্জু স্যামসন। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ছ’টি বাউন্ডারি ও ন’টি ওভার বাউন্ডারিতে। যদিও শুরুটা ভাল করেও এদিন তাড়াহুড়োয় আউট হয়ে দ্রুত ফেরেন গত ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি করা অভিষেক। ১৮ বলে ৩৬ রান করেন তিনি। এর পর তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন তিলক ভর্মা। গত ম্যাচেই তাঁর জন্য তিন নম্বর জায়গাটা ছেড়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং অধিনায়ক। যার যোগ্য মানও তিনি রেখেছিলেন। তাই এদিনও তিন নম্বরেই তাঁকে পাঠান সূর্যকুমার। ৪১ বলে সেঞ্চুরি করে তিনি আবারও প্রমাণ করে দিলেন ভুল সিদ্ধান্ত নেননি তাঁর ক্যাপ্টেন। অনেকটা সেলিব্রেশনই করলেন অধিনায়কের সম্মানেই। শেষ পর্যন্ত ৪৭ বলে ন’টি বাউন্ডারি ও ১০টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১২০ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি।
২০ ওভারে ১৪.১৫ রান রেট নিয়ে ২৮৩-১-এ থামে ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে একমাত্র উইকেটটি নেন লুথো সিপামলা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় দক্ষিণ আফ্রিকা। চারজন পর পর ফিরে যান প্যাভেলিয়নে। মাত্র ৩ ওভারে দলগত ১০ রানে চার উইকেট চলে যাওয়ার পর আসল লড়াই শুরু করেন ডেভিড মিলার, ত্রিস্তান স্তাবস। দুই ওপেনার রিয়ান রিকলটন ১ ও রেজা হেনরিকস কোনও রান না করেই ফিরে যান। তিন নম্বরে নেমে অধিনায়ক আইদেন মারক্রাম ৮ রানে আউট হন। এর পর পাঁচ নম্বরে নেমে রানের খাতা না খুলেই ফেরেন এনরিচ ক্লাসেন।
এর পর ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই শুরু করেন ত্রিস্তান স্তাবস। ততক্ষণে বল করতে এসেছেন ভারতের বরুণ চক্রবর্থী। দ্বিতীয় ম্যাচে যিনি বল হাতে চমক দিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট নিয়ে। এদিন স্তাবস-মিলার জুটি ভাঙেন তিনিই। তাঁর ঝুলিতে আসে দুই উইকেট। ১২ উইকেট নিয়ে সিরিজ শেষ করেন তিনি। ৩৬ রানে ফেরেন মিলার। পরের ওভারের প্রথম বলেই ফেরেন ত্রিস্ততান স্তাবস ৪৩ রান করে। ভারতের হয়ে শুরুর তিন উইকেটই তুলে নিয়েছিলেন অর্শদীপ সিং। প্রথম চারের এক উইকেট নেন হার্দিক পাণ্ড্যেও। এর পর সেই তালিকায় নাম লেখান রবি বিষ্ণোই (১), রমনদীপ সিং (১), অক্ষর প্যাটেল(২)রাও।
দক্ষিণ আফ্রিকার আন্দিল সিমেলানে ২, জেরাল্ড কোয়েতজে ১২ রানে আউট হন। এর মধ্যেই কিছুটা চেষ্টা করেন মার্কো জানসেন। কিন্তু অক্ষর প্যাটেলের বলে সেঞ্চুরিয়ন তিলক ভর্মার অসাধারণ ক্যাচও এদিনের ম্যাচে তাঁর নামের পাশে লেখা হবে। যে ক্যাচে ৬ রানে ফেরেন কেশব মহারাজ। লুথো সিপালা ৩ রানে আউট হন। ২৯ রানে অপরাজিত থাকেন মার্কো জানসেন। ১৮.২ ওভারে ১৪৮ রানে শেষ হয় দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যটিং।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার