অলস্পোর্ট ডেস্ক: আইপিএল ২০২৪-এ জয়ের হ্যাটট্রিক করে ফেলল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ঘরের মাঠে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল কলকাতা দল। এর পর শ্রেয়াস আইয়ারদের শিকার ব্যাঙ্গালোর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স। বেঙ্গালুরুতে গিয়ে বিরাটদের হারিয়ে আসা সহজ ছিল না। কিন্তু সহজেই ব্যাঙ্গালোর বধ করে দিল্লি বধের উদ্দেশে বিশাখাপত্তনমে পা রেখেছিল শাহরুখের দল। সেখানে তাদের জন্য অপেক্ষা করছিল দিল্লি ক্যাপিটালসের চ্যালেঞ্জ। প্রথম কয়েকটি ম্যাচে দিল্লির হোম গ্রাউন্ড ভাইজ্যাক। তাই অ্যাওয়ে ম্যাচে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কলকাতা অধিনায়ক। কারণ এই কলকাতা দলের প্রথম আট জনই ব্যাটে যে কোনও প্রতিপক্ষকে মাত দিতে পারেন। এক কথায় আত্মবিশ্বাসের জায়গা। এদিন বোলাররাও প্রতিপক্ষকে ছাঁপিয়ে মেতে দিলেন না। যার ফল ১০৬ রানে বিপুল জয় তুলে নিল কেকেআর। এর সঙ্গেই তিন ম্যাচে জয় পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে জায়গা করে নিল কলকাতা। একই পয়েন্টে নেট রান রেটের কারণে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রাজস্থান।
এদিন যদিও বড় রান আসেনি ওপেনার ফিল সল্টের ব্যাটের। ১৮ রান করে তিনি আউট হয়ে যান। এর পর সুনীল নারিনের সঙ্গে ব্যাট করতে নামেন দলের কনিষ্ঠতম ক্রিকেটার অঙ্গক্রিশ রঘুবংশী। এর পর শুরু হল সুনীল ঝড়। যা থামাতে দিল্লি বোলারদের লেগে যায় ১৩ ওভার। ৬০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর কলকাতার দ্বিতীয় উইকেট পড়ে ১৬৪ রানে। বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন নারিন। ২১ বলে হাফসেঞ্চুরি হাঁকানোর পর তিনি যখন থামেন তখন তাঁর নামের পাশে ৩৯ বলে ৮৫ রান, যে ইনিংস সাজানো ছিল সাতটি বাউন্ডারি ও সাতটি ওভার বাউন্ডারি দিয়ে।
তাঁর দেখানো পথেই হাঁটলেন রঘুবংশীও। ক্রিজের দুই প্রান্ত থেকেই চলতে থাকল ঝোড়ো ব্যাটিং। ২৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেললেন কলকাতার এই নতুন মুখ। তাঁর ব্যাট থেকে এল পাঁচটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি। ১৭৬-৩ থেকে কলকাতাকে ২৩২-৪-এ নিয়ে গেলেন আন্দ্রে রাসেল ও রিঙ্কু সিং। আরও দুই বিগ হিটার। যাঁদের ব্যাটে বলে সংঘাত হলেই তা চলে যায় বাউন্ডারির বাইরে। এদিনও তাঁর অন্যথা হল না।
১৯ বলে চারটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৪১ রান করলেন রাসেল। মাঝে ১১ বলে ১৮ রান করে আউট হলেন শ্রেয়াস আইয়ার। এর পর ৮ বলে একটি বাউন্ডারি ও তিনটি ওভার বাউন্ডারি মেরে ২৬ রান করলেন রিঙ্কু সিং। রমনদীপ সিং ২ রন করে আউট হলেন। ৫ রানে ভেঙ্কটেশ আইয়ার ও ১ রানে মিচেল স্টার্ক অপরাজিত থাকলেন। ২০ ওভরে ২৭২-৭-এ থামল কলকাতার ব্যাটিং। দিল্লির হয়ে তিন উিকেট নিলেন এনরি নর্তজে। দুই উইকেট ইশান্ত শর্মার। তাঁর শেষের স্পেলই কলকাতার রানকে আর বাড়তে দেয়নি। একটি করে উইকেট নিলেন খলিল আহমেদ ও মিশেল মার্শ।
২৭৩ কখনওই সহজ লক্ষ্য ছিল না ঋষভ পন্থদের জন্য। তার মধ্যে শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি। দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ১৮ ও পৃথ্বী শ ১০ রান করে আউট হয়ে যায়। এর পর তিন ও চার নম্বরে নেমে মিচেল মার্শ ও অভিষেক পোড়েল রানের খাতাই খুলতে পারেননি। ৩৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে আরও চাপে পড়ে যায় দিল্লি ক্যাপিটালস। সেখান থেকেই অধিনায়কচিত ঢঙেই দলের ব্যাটিংয়ের হাল ধরেন দীর্ঘদিন পর ক্রিকেটের মূল স্রোতে ফেরা পন্থ। আগের ম্যাচেই তাঁকে ফর্মে ফিরতে দেখা গিয়েছিল। সেটা যে সাময়িক নয় এদিনও তাঁর ব্যাট সেটা প্রমান করে দিল।
৩৩-৪ থেকে ন্থ ও ত্রিস্তান স্তাবস দলের রানকে ১২৬-এ নিয়ে যান। ২৫ বলে চারটি বাউন্ডারি ও পাঁচটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৫৫ রান করেন ঋষভ পন্থ। তাঁকে যোগ্য সঙ্গত স্তাবসের। তিনি ৩২ বলে চারটি করে বাউন্ডারিও ওভার বাউন্ডারি-সহ ৫৪ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু এই দুই ব্যাটার ফিরতেই আবার ধস নামে দিল্লি ব্যাটিংয়ে। অক্ষর প্যাটেল ০, সুমিত কুমার ৭, রসিখ সালাম ১, এনরিচ নর্তজে ৪ রান করে আউট হন। ১ রানে অপরাজিত থাকেন ইশান্ত শর্মা। কলকাতার হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন বৈভব অরোরা ও বরুণ চক্রবর্থী। দুই উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক। এই আইপিএল-এ প্রথম উইকেট পেলেন তিনি। একটি করে উইকেট নেন আন্দ্রে রাসেল ও সুনীল নারিনের। ১৭.২ ওভারে ১৬৬ রানে অল আউট হয়ে গেল দিল্লি।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার