সুচরিতা সেন চৌধুরী: কলকাতার ঘরের মাঠে শেষ ম্যাচে দেখা মিলল জুহি চাওলার। এই নিয়ে ঘরের মাঠে সপ্তম ম্যাচ খেলল কেকেআর। একটি ম্যাচ বাদ দিলে বাকি সব ম্যাচেই গ্যালারিতে হাজির ছিলেন শাহরুখ খান। সঙ্গে প্রায় সব সময়ই ছোট ছেলে আব্রাম ও ম্যানেজার পূজা। কিন্তু শেষ ম্যাচে দেখা গেল না তাঁকে। বরং এদিন হাজির থাকলেন জুহি চাওলা। তাঁর সঙ্গে দেখা গেল ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকেও। শাহরুখ কন্যা সুহানা ও অনন্যা পাণ্ডেও এদিন হাজির ছিলেন মাঠে। জুহির আগমনের দিনই প্রথম দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলল কলকাতা নাইট রাইডার্স। ২০১৪-র পর একই মরসুমে পর পর দু’বার মুম্বইকে হারাল কলকাতা। এদিন বৃষ্টির জন্য ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট দেড়িতে শুরু হল খেলা। ২০ ওভারের জায়গায় খেলা হল ১৬ ওভার। এমনকি দলের ব্যাটে এদিন সেই চেনা দাপটও ছিল না। তবুও শেষ হাসি হাসল কলকাতাই। ব্যাটারদের অসম্পূর্ণ রেখে যাওয়া কাজ করে দিলেন বোলার আর ফিল্ডাররা। ১৮ রানে জিতে ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষস্থান ধরে রাখল কেকেআর। ম্যাচ শেষে পুরো মাঠ ঘুরে সমর্থকদের ধন্যবাদও জানালেন শ্রেয়াসরা।
তবে ম্যাচের ফল যাই হোক না কেন এদিন জয়ী দর্শকরাই। এই আবহাওয়ায়ও শেষ পর্যন্ত ভরে থাকল গ্যালারি। ম্যাচ শেষ হল রাত ১২টার পর, তখন বাড়ির পথে গেল ইডেনের গ্যালারি। তবে এদিনের ইডেন একতরফা ছিল না। একটা বড় অংশ কিন্তু গলা ফাটাল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে। তার থেকেও বেশি করে বললে রোহিত শর্মার হয়ে। এদিন ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে দলে ছিলেন রোহিত। ফিল্ডিং করেননি। তবে ঈশান কিষানের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন। তবে তিনি যখন মাঠে ছিলেন না তখনও মুম্বইয়ের সাফল্যে ‘রোহিত রোহিত’ ধোনি উঠল ইডেনের গ্যালারি থেকে। অনেক সমর্থকের গায়েই দেখা গেল মুম্বইয়ের নীল জার্সি।
ইডেন রোহিতের খুব কাছের গ্রাউন্ড। এখানে ব্যাট হাতে বার বার নজর কেড়েছেন। এই মাঠেই তাঁর ওডিআই অভিষেক, এই মাঠেই সর্বোচ্চ ২৬৪ রানের ইনিংস। এই ইডেনে সর্বকালের সর্বোচ্চ ওডিআই রান। এই শহর যে রোহিতপ্রেমী সেটা তিনিও খুব ভাল জানেন কিন্তু এই মরসুমের মতো এবার ইডেনে ব্যাটিংটাও সুখকর হল না তাঁর। শেষ পর্যন্ত ২৪ বলে ১৯ রান করে বরুণ চক্রবর্তীর বলে নারিনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন প্যাভেলিয়নে। তার আগেই অবশ্য ২২ বলে ৪০ রান করে ফিরে গিয়েছেন আরও এক ওপেনার ঈশান কিষান।
১৫৮ রানের লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে ব্যাট করতে নেমেছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স। নীতিশ রানার পরিবর্তে কলকাতা দলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হিসেবে নেমেছিলেন বৈভব অরোরা। কিন্তু বল হাতে চেনা ছন্দে তাঁকে পাওয়া গেল না। এক কথায় এদিন বল হাতে কেউই সেই ছন্দে ছিলেন না। যেভাবে ব্যাট হাতেও বড় রানের লড়াই দিতে পারেননি কেউই। ফিল সল্ট ৬, সুনীল নারিন ০, ভেঙ্কটেশ আইয়ার ৪২, শ্রেয়াস আইয়ার ৭, নীতিশ রানা ৩৩, আন্দ্রে রাসেল ২৪, রিঙ্কু সিং ২০, রমনদীপ সিং অপরাজিত ১৭ ও মিচেল স্টার্ক অপরাজিত ২ রান করেন। ১৬ ওভারে কলকাতা থামে ১৫৭-৭-এ। মুম্বইয়ের হয়ে দুটো করে উইকেট নেন যশপ্রীত বুমরাহ ও পীযুশ চাওলা। একটি করে উইকেট নুয়ান থুসারা ও অনশূল কাম্বোজের।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালই করে দিয়েছিলেন ঈশান কিষান। কিন্তু রোহিত শর্মার অফ-ফর্ম বজায় থাকল। যতক্ষণ মাঠে ছিলেন ততক্ষণ নড়বড়েই দেখাল তাঁকে। তবে এদিন নজর কাড়ল রমনদীপ, রিঙ্কু সিংদের ফিল্ডিং। রমনদীপ যেমন নিশ্চিত বাউন্ডারি বাঁচালেন সঙ্গে সূর্যকুমার যাদবের ক্যাচ নিয়ে মুম্বইয়ের এই মরসুমের সফলতম ব্যাটারকেও ফেরালেন তিনি। অন্যদিকে জোড়া ক্যাচ নিলেন রিঙ্কু সিং। যিনি বিশ্ব টি২০ র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেই রয়েছেন। ১১ রানে ফিরলেন তিনি। হার্দিক ফিরলেন ২ রানে। টিম দাভিদ রানের খাতাই খুলতেই পারলেন না। নেহাল ওয়াধেরা আউট হলেন ৩ রানে। নমন ধির ১৭ ও তিলক ভর্মা ফিরলেন ৩২ রানে।
শেষ ওভারে মুম্বইয়ের দরকার ছিল ২২ রান। শেষ ওভারে বল করতে এলেন হর্ষিত রানা। জোড়া উইকেট তুলে নিয়ে মুম্বইয়ের সব আশায় জল ঢেলে দিলেন তিনি। তুলে নিলেন দুই উইকেট। কলকাতার হয়ে দুটো করে উইকেট নিলেন বরুণ চক্রবর্থী ও আন্দ্রে রাসেল। এক উইকেট সুনীল নারিনের। ১৬ ওভারে ১৩৯-৮-এ থামল মুম্বই। ১৮ রানে ম্যাচ জিতে নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার