Sunday, January 19, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeআইপিএলশেষ বলের থ্রিলারে বাজিমাত কলকাতার, ১ রানে হার বেঙ্গালুরুর

শেষ বলের থ্রিলারে বাজিমাত কলকাতার, ১ রানে হার বেঙ্গালুরুর

সুচরিতা সেন চৌধুরী: বিরাট কোহলি বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচ দেখতেই ৪৩ ডিগ্রির দুপুরে ইডেনের গ্যালারি ভরিয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। এতদিন পুরো গ্যালারি কেকেআর-এর থাকলেও এদিন যেন অনেকটাই তাতে ভাগ বসালেন বিরাটপ্রেমীরা। ধর্মতলার মোর থেকেই চোখে পড়ল কেউ লাল তো কেউ সবুজ বিরাট লেখা জার্সি পরে ইডেনমুখী। যদিও শেষ পর্যন্ত আধিপত্ত থাকল কলকাতা ফ্যানদেরই। আতঙ্কের মুহূর্ত কাটিয়ে শেষ হাসিও হাসলেন তাঁরাই। তবুও কেকেআর-এর উইকেট পড়লেই ‘আরসিবি আরসিবি’ চিৎকারটা কানে আসছিল ভালই। তার মধ্যেই শুরুটা মোটেও ভাল হল না কেকেআর-এর। তার পরেও শেষ বলের থ্রিলারে এক রানে বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে জয়ে ফিরল কেকেআর। শেষ বলে ফিল সল্টের ফ্লাইং রান আউটের ছবি ভাইরাল হল বলে।

রবিবার ঘরের মাঠে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল কলকাতা। শুরুটা ভাল করে দিলেও ফিল সল্ট আউট হওয়ার পর রীতিমতো বিপদে পড়ে যায় কলকাতা ব্যাটিং। একটা সময় মনে হচ্ছিল আইপিএল ২০২৪-এর দ্রুততম হাফসেঞ্চুরিটা করে ফেলবেন সল্ট কিন্তু ১৩ বলে যখন ৪৮ রান তখন উঁচু করে মারতে গিয়ে ধরা পড়ে গেলেন রজত পাতিদারের হাতে। ১৪ বলে যেখানে হাফ সেঞ্চুরি হওয়ার কথা ছিল সেখানে ফিরতে হল প্যাভেলিয়নে। তার পর থেকেই ধসে গেল কলকাতার ব্যাটিং।

এদিন অফ কালার ছিলেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকানো সুনীল নারিন। শুরুতেই বলের আঘাতে পায়ে চোট পেলেন তার পর মাত্র ১০ রান করেই ফিরে গেলেন প্যাভেলিয়নে। তিন ‌নম্বরে ব্যাট করতে নেমে তিন রানে ফিরলেন অঙ্গকৃশ রঘুবংশী। একটা ভাল ইনিংস খেলার পর হঠাৎই হারিয়ে গেলেন এই ব্যাটার। একই ওভারে দু’জনকে প্যাভেলিয়নে পাঠালেন যশ দয়াল। যাঁকে গত বছর পাঁচটি ছক্কা মেরেছিলেন রিঙ্কু সিং। সেই যশ দয়ালের হাতেই ধরা পরে ২৪ রান করে প্যাভেলিয়নে ফিরলেন রিঙ্কুও। তাঁর আগেই ১৬ রানে ফিরেছেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার।

নিয়মিত উইকেট হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে চলে যাওয়া দলের হাল ধরলেন অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। সাত নম্বরে নামা আন্দ্রে রাসেলকে শুরুতেই আউট দিয়ে দিয়েছিলেন আম্পায়ার। তবে শেষ পর্যন্ত ডিআরএস বাঁচিয়ে দেয় তাঁকে। নো বলের জন্য বাতিল হয় আউটের সিদ্ধান্ত। শ্রেয়াসের সঙ্গে ক্রিজে তিনিই ছিলেন শেষ ভরসা। ৩৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি করে শেষ পর্যন্ত ফর্মে ফিরলেন কেকেআর অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। যা দলের রানকে একটা ভদ্রস্থ জায়গায় পৌঁছে দিতেও সাহায্য করল। কিন্তু ফাফ দু প্লেসির অসাধারণ ক্যাচে ৩৬ বলে সাতটি বাউন্ডারি ও একটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৫০ রানে প্যাভেলিয়নে ফিরতে হল শ্রেয়াসকে।

শ্রেয়াসের ফর্মে ফেরার ম্যাচে জয়ে ফিরল কেকেআর।

শ্রেয়াস আউট হওয়ায় হতাশ গ্যালারিকে আবার চাগিয়ে দিলেন রমনদীপ সিং। নেমেই পর পর ছক্কা হাঁকিয়ে কেকেআর ফ্যানদেরও দলের সঙ্গে খেলায় টিকিয়ে রাখলেন তিনি। ‘আরসিবি আরসিবি’ চিৎকারকে ছাঁপিয়ে গেল ‘কেকেআর কেকেআর’ হুঙ্কার।  তার মধ্যেই ২০০ রানের গণ্ডি পেরিয়ে গেল নাইটরা।  নির্ধারিত ওভারের শেষে কলকাতা ২২২-৬-এ থামল। ২৭ রানে রাসেল ও ৯ বলে ২৪ রান করে অপরাজিত থাকলেন রমনদীপ সিং। শেষ দুই ওভারে ৩৬ রান নিলেন এই দুই ব্যাটার। বেঙ্গালুরুর হয়ে দুটো করে উইকেট নিলেন যশ দয়াল ও ক্যামেরুন গ্রিন। একটি করে উইকেট নিলেন মহম্মদ সিরাজ ও লকি ফার্গুসন।

২২৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নেমেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। কিন্তু শুরুতেই বিরাট কোহলির আউট নিয়ে তৈরি হল বিতর্ক। তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই বোলার হর্ষিত রানাকে ক্যাচ তুলে দেন কোহলি। কিন্তু বলটা অনেক উঁচুতে থাকায় আউটের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নেন কোহলি। টিভি আম্পায়ারও তাঁকে আউট দেন। যেটা মোটেও মানতে পারেননি তিনি। মাঠ ছাড়ার সময় আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ান। ৭ বলে ১৮ রান করে বিরাট কোহলি প্যাভেলিয়নে ফেরার পরের ওভারের প্রথম বলেই ৭ রান করে ফেরেন ফাফ দু প্লেসি।

দলের দুই সেরা ওপেনার দ্রুত ফিরে গেলেও হাল ছাড়েনি আরসিবি ব্যাটাররা। তিন ও চার নম্বরে ব্যাট করতে নামা উইল জ্যাক ও রজত পাতিদার দলের রানকে দ্রুত এমন জায়গায় নিয়ে যান যেখান থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে যাওয়াটা খুব কঠিন মনে হচ্ছিল না। ৪৮ বলে ১০২ রানের পার্টনারশিপ করেন তাঁরা। কিন্তু জ্যাক ৩২ বলে ৫৫ ও পাতিদার ২৩ বলে ৫২ রান করে ফিরতেই আবার ম্যাচ চলে আসে কলকাতার দখলে। আন্দ্রে রাসেল তাঁর প্রথম ওভারেই দুই হাফ সেঞ্চুরিয়নকে প্যাভেলিয়নে ফিরিয়ে কলকাতাকে ম্যাচে ফেরান।

কাজে কাজে লাগল না জ্যাক ও পাতিদারের হাফ সেঞ্চুরি।

কিন্তু তখনও বেঙ্গালুরুর তুরুপের তাস মাঠে নামা বাকি ছিল। তিনি দীনেশ কার্তিক। তিনি যে কলকাতার ত্রাস হয়ে উঠতে পারেন সেটা ভালই জানা ছিল শ্রেয়াসদের। তিনি নামতেই আবার হাল ফিরল আরসিবির। তার আগে ক্যামেরন গ্রিন ৬, সুয়াশ প্রভুদেশাই ২৪, মহিপাল লোমোর ৪ রান করে আউট হন। এর মধ্যেই শেষ পর্যন্ত লড়াই দেন কার্তিক। ১৮ বলে ২৫ রান করে ১৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হলেন তিনি। কখনও ম্যাচ ঝুঁকে গেল বেঙ্গালুরুর দিকে তো কখনও কলকাতার দিকে। শেষ পর্যন্ত চলল এই টানাপড়েন।

শেষ ওভারে বেঙ্গালুরুর জিততে হলে দরকার ছিল ২১ রান। সেখান থেকে ম্যাচ এসে দাঁড়ায় এক বলে তিন রানে। শেষ ওভারে বল করতে এসেছিলেন মিচেল স্টার্ক। তাঁকে তিনটি ওভার বাউন্ডারি হাঁকালেন কর্ণ শর্মা। সাত বলে ২০ রান করে স্টার্কের অসাধারণ ক্যাচে আউট হলেন তিনি। শেষ বলে রান আউট ফার্গুসন। ]যার রিভিউ নিলেন স্বয়ং আম্পায়ার। কলকাতার হয়ে তিন উইকেট নিলেন আন্দ্রে রাসেল। দু’টি করে উইকেট নিলেন হর্ষিত রানা ও সুনীল নারিন। একটি করে উইকেট বরুণ চক্রবর্থী ও মিচেল স্টার্কের। সাত ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এল কলকাতা। আট ম্যাচে সাতটি হার নিয়ে বেঙ্গালুরুর আশা প্রায় শেষ।

ছবি—কেকেআর ও আরসিবি এক্স থেকে।

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments