অলস্পোর্ট ডেস্ক: ঘরের মাঠে সামনে যখন প্রাক্তন দল তখন এই ম্যাচ ঘিরে পঞ্জাব কিংস অধিনায়কের উত্তেজনা যে অনেক বেশিই থাকবে তা নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। কিন্তু ব্যাট হাতে বড় রানে পৌঁছনো হল না পঞ্জাব ব্যাটারদের। নেপথ্যে কেকেআর বোলিং। মাত্র ১৫.৩ ওভারে অল-আউট করে টিম শ্রেয়াস আইয়ারকে প্যাভেলিয়নে ফেরত পাঠালেন হর্ষিত, বরুণরা। এদিন টস জিতে ঘরের মাঠে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পঞ্জাব কিংস অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার। প্রথমে ব্যাট করে ১১১ রানেই গুটিয়ে যায় পঞ্জাব। জবাবে ব্যাট করতে নেমে হোম টিমের মতো শুরুতেই ধাক্কা খায় কলকাতা নাইট রাইডার্স। ১১২ রানের লক্ষ্যমাত্রা যে এতটা কঠিন হয়ে যাবে তা হয়তো ভাবতে পারেনি কেকেআর। শেষ পর্যন্ত টানটান উত্তেজনা শেষে ১৬ রানে কলকাতাকে হারিয়ে শেষ হাসি হাসল পঞ্জাব কিংস। এই ম্যাচ যে শ্রেয়াস আইয়ারের জন্য অত্য়ন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল তা তাঁর অভিব্যক্তিতেই স্পষ্ট।
এদিন পঞ্জাবের হয়ে প্রভসিমরান সিংয়ের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন দলের ওয়ান্ডার বয় প্রিয়াংশ আর্য। শুরু থেকেই বাউন্ডারি। ওভার বাউন্ডারিতে কেকেআর বোলারদের চাপে ফেলে দেন দুই ওপেনার। কিন্তু হর্ষিত রানা বল হাতে নামতেই চিত্রটা বদলে যায় ফিল্ডিং টিমের। পর পর দুই বলে দু’জনকে ফিরিয়ে প্রতিপক্ষ শিবিরকে পাল্টা ধাক্কা দেয় কেকেআর বোলিং। ২২ রানে প্রিয়াংশকে ফেরানোর পর তিন নম্বরে নামা অধিয়াক শ্রেয়াস আইয়ার রানের খাতা খোলার আগেই প্যাভেলিয়নে ফিরে যান। প্রভসিমরান ৩০ রানে ফেরার পর আর কেউই দাঁড়াতে পারেনি কেকেআর বোলিংয়ের সামনে।
জোশ ইংলিশ ২, নেহাল ওয়াধেরা ১০, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ৭, সুর্যাংশ শেগড়ে ৪, শশাঙ্ক সিং ১৮, মার্কো জানসেন ১ ও জেভিয়ার বার্টলেট ১১ রান করে আউট হন। ১ রানে অপরাজিত থাকেন অর্শদীপ সিং। ১৫.৩ ওভারে ১১১ রানে অল আউট হয়ে যায় পঞ্জাব কিংস। কলকাতার হয়ে বল হাতে সফল সব বোলার। সবারই ঝুলিতে এদিন উইকেট এসেছে। সব থেকে সফল অবশ্যই তিন উইকেট নেওয়া হর্ষিত রানা। এছাড়া দুটো করে উইকেট নেন বরুণ চক্রবর্থী ও সুনীল নারিন। একটি করে উইকেট নেন বৈভব অরোরা ও এনরিচ নর্তজে। তবে এদিন বোলারদের পাশাপাশি প্রশংসা করতে হবে ফিল্ডার রমনদীপ সিংয়েরও। তাঁর তিনটি অসাধারণ ক্যাচই থমকে দেয় পঞ্জাব ব্যাটিংকে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই মাত্র দলগত ৭ রানে দুই উইকেট চলে যায় কেকেআর-এর। কুইন্টন ডে কক ২ ও সুনীল নারিন ৫ রান করে আউট হয়ে যান। এর পর কিছুক্ষণ অঙ্গকৃশ রঘুবংশীকে নিয়ে ধরে খেলার চেষ্টা করেন কেকেআর অধিনায়ক অজিঙ্ক রাহানে। কিন্তু তিনিও ফিরে যান ১৭ রানে। দলের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান আসে এদিন অঙ্গকৃশের ব্যাট থেকেই। ২৮ বলে ৩৭ রান করে ফেরেন তিনি। ভেঙ্কটেশ আইয়ার ফেরেন ৭ রানে। এলবিডব্লু হওয়ার পর রিভিউ নিয়েও শেষরক্ষা হয়নি। ২ রান করে স্টাম্প আউট হন রিঙ্কু সিং। রানের খাতা না খুলেই ফিরে যান রমনদীপ সিং। হর্ষিত রানা ফেরেন ৩ রানে।
এদিন পঞ্জাবের হয়ে বল হাতে একাই পার্থক্য গড়ে দেন যুজবেন্দ্র চাহাল। এলবিডব্লু, স্টাম্প, ক্যাচ, এদিন সব এসেছে তাঁর ঝুলিতে। তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়েই ১১১ রানে থমকে গিয়েও কেকেআর-এর বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে টিম শ্রেয়াস আইয়ার। ব্যাটে রান না এলেও অধিনায়কত্বে একশোতে একশো পাবেন প্রাক্তন চ্যাম্পিয়ন কেকেআর অধিনায়ক। কিন্তু শেষে বাধ সাধেন আন্দ্রে রাসেল। চাহালের এক ওভারে দুটো ছক্কা ও একটি বাউন্ডারিতে ব্যবধা্ন কমিয়ে আনেন অনেকটাই। এক একটা রান গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ততক্ষণে। সাত বল খেলে রানোর খাতা না খুলেই ফিরে যান বৈভব অরোরা। ১৭ রানে রাসেল ফিরতেই জয়ের কাহিনী লিখে ফেলে পঞ্জাব। ১৫.১ ওভারে ৯৫ রানে অলআউট হয়ে যায় কলকাতা।
এক কথায় কেকেআর-এর দুরন্ত বোলিংকে এদিন ছাঁপিয়ে গেল পঞ্জাব কিংস বোলিং। এক কথায় মঙ্গলবারের আইপিএল-এর লড়াই সীমাবদ্ধ থাকল বোলারদের মধ্যেই। এক কথায় পঞ্জাব বোলার বনাম কলকাতা বোলারদের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত সর্বনিম্ন দলগাত রান ধরে রেখে জয় তুলে নিল পঞ্জাব কিংস। তাদের হয়ে চার উইকেট নিলেন যুজবেন্দ্র চাহাল। তিন উইকেট মার্কোস জানসেনের। একটি করে উইকেট জেভিয়র বার্টলেট, অর্শদীপ সিং ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার