সুচরিতা সেন চৌধুরী: যে বলিউডি লড়াই দেখার জন্য শুক্রবারের সন্ধেয় ইডেন গার্ডেন্সের গ্যালারি ভরিয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা সেই লড়াই দেখা গেল না। শাহরুখ খান ম্যাচ শুরুর বেশ কিছুক্ষণ পর স্টেডিয়ামে পৌঁছলেন ঠিকই কিন্তু তাঁর অনস্ক্রিন নায়িকার দেখা পাওয়া গেল না। প্রীতি জিন্টা সাধারণত দলের সঙ্গে বিভিন্ন ভেন্যুতেই যান, এবারও তার অন্যথা হয়নি। কিন্তু নায়কের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মঞ্চে তিনি অনুপস্থিত থাকলেন। দলের দুরন্ত জয় তাঁর এদিন মাঠে বসে দেখা হল না। এদিন টস জিতে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন পঞ্জাব কিংস অধিনায়ক স্যাম কুরান। প্রথমে ব্যাট করে ইডেন গার্ডেন্সে নতুন রেকর্ড তৈরি করল কেকেআর। আর ম্যাচ শেষ হতেই সেই সব রেকর্ডকে এক ধাক্কায় ভুলিয়ে দিল পঞ্জাব দল কলকাতাকে আট উইকেটে হারিয়ে।
২০১৯-এর ২৮ এপ্রিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ২৩২-২ করেছিল কলকাতা। এতদিন এটাই ছিল কলকাতার সর্বোচ্চ স্কোর ইডেনের মাটিতে। এদিন সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড গড়ল কলকাতা। তবে তাদের কড়া চ্যালেঞ্জও ছুঁড়ে দিল পঞ্জাব। শুরু থেকেই দুরন্ত লড়াই দিল। ২৬২ রানের লক্ষ্যমাত্রা যে সহজ হবে না সেটা জেনেই ব্যাট করতে নেমেছিল কিংসরা। কিন্তু কঠিন ম্যাচটা যেন সহজ করেই জিতে নিল পঞ্জাব। রেকর্ড লেখা হল তাদের নামেও। পঞ্জাবের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের তালিকায় এই ম্যাচ সবার উপরে থাকবে। টি২০ ক্রিকেটের ইতিহাসেও এটাই সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড।
এদিন প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ওপেনিং জুটিতেই ছিল রেকর্ডের বার্তা। কলকাতার হয়ে আইপিএল-এর ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ওপেনিং পার্টনারশিপের রেকর্ডটা করেই ফেললেন ফিল সল্ট ও সুনীল নারিন। ৩২ বলে ৯টি বাউন্ডারি ও ৪টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৭১ রান করে আউট হলেন নারিন। অন্যদিকে ৩৭ বলে ৬টি বাউন্ডারি ও ৬টি ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৭৫ রান করলেন ফিল সল্ট। ওপেনিং জুটিতে এল ১৩৮ রান।
এর পর ২৩ বলে ভেঙ্কটেশ আইয়ারের ৩৯, ১২ বলে আন্দ্রে রাসেলের ২৪, ১০ বলে শ্রেয়াস আইয়ারের ২৮, রিঙ্কু সিংয়ের ৫ ও রমনদীপ সিংয়ের অপরাজিত ৬ রানের সুবাদে ২০ ওভারে ছয় উইকেট হারিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্স ২৬১ রান তুলে নেয়। যা এই ইডেনের মাটিতে সর্বোচ্চ আইপিএল রান। পঞ্জাবের হয়ে জোড়া উইকেট নিলেন অর্শদীপ সিং। একটি করে উইকেট স্যাম কুরান, হর্ষল প্যাটেল ও রাহুল চাহারের। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বড় রান দেখে মোটেও গুটিয়ে যায়নি এই আইপিএলে অনেকটাই পিছিয়ে থাকা পঞ্জাব কিংস। এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে আট ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে নয় নম্বরে ছিল পঞ্জাব কিংস। অন্যদিকে সাত ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল কলকাতা। লড়াইটা একদমই সমানে সমানে ছিল না। কিন্তু কথায় আছে ক্রিকেটের ফল শেষ বল পর্যন্ত বলা মুশকিল। তবে এই ম্যাচ শেষ বল পর্যন্তই গেল না। আট বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নিল পঞ্জাব।
পঞ্জাবের হয়েও দুরন্ত ছন্দেই শুরু করেছিল তাদের ওপেনিং জুটি। প্রভসিমরান সিং রান আউট হওয়ার আগে ২০ বলে ৫৪ রানের ইনিংস খেলে ফেলেন। ওপেনিং পার্টনারশিপে পঞ্জাব তোলে ৯৩ রান। অন্যদিকে, একাই লড়াই চালিয়ে যান জনি বেয়ারস্টো। ৪৫ বলে সেঞ্চুরি হাঁকালেন তিনি। যখন থামলেন তখন তাঁর নামের পাশে লেখা হয়ে গিয়েছে ৪৮ বলে অপরাজিত ১০৮ রান। হাঁকালেন ৮টি বাউন্ডারি ও ৯টি ওভার বাউন্ডারি। তার মধ্যেই ২৬ রান করে প্যাভেলিয়নে ফেরেন রিলি রোসো। ১৫ ওভারেই ২০১ রানে পৌঁছে যায় পঞ্জাব। তখনও এগিয়ে কলকাতার থেকে। ২৮ বলে ৬৮ রান করে অপরাজিত থাকেন শশাঙ্ক সিং। ১৮.৪ ওভারে পঞ্জাব ২৬২-২-এ থামে। কলকাতার হয়ে একটি উইকেট নিলেন সুনীল নারিন। আর একটি রান আউট।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার