সুচরিতা সেন চৌধুরী: তিনি মাঠে থাকা মানে গ্যালারিতে আলাদাই উৎসবের আবহ তৈরি হয়। দল ভাল করলে যেমন উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙে তেমনই দলের খারাপ পারফর্মেন্সে খুব সহজেই হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। প্রথম ম্যাচ থেকেই দলকে সমর্থন করতে স্টেডিয়ামে স্টেডিয়ামে ঘুরছেন তিনিও। তিনি কলকাতা নাইট রাইডার্সের অন্যতম মালিক শাহরুখ খান। কখনও সপরিবারে, কখনও একা, কখনও সঙ্গে ম্যানেজার। আর এক মালিক জুহি চাওলাকে এই মরসুমে এখনও দেখা যায়নি তেমনভাবে। তিনি অবশ্য মজা করে বলেছিলেন, ‘‘শাহরুখের সঙ্গে আমি আর কেকেআর-এর ম্যাচে যাব না। কারণ দল হারলে সব রাগ আমার উপর এসে পড়ে।’’
তিন ম্যাচ পর আবার ঘরের মাঠে খেলতে নেমেছে কলকাতা দল। এবার টানা পাঁচ ম্যাচ কলকাতায় খেলবে দল। তাই শাহরুখ, সঙ্গে ক্রিকেট ভক্তদের জন্য সুখবর তো বটেই। প্রায় প্রতি ম্যাচেই দর্শন দেবেন বাদশাহ। এদিন কিছুটা পরেই মাঠে পৌঁছলেন। ততক্ষণে শুরু হয়ে গিয়েছে খেলা। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন শ্রেয়াস। তবে শুরু থেকেই কলকাতার বোলাররা প্রতিপক্ষ লখনউকে চাপে রাখতে শুরু করেন। কলকাতাকে সমর্থন করতে এদিন গ্যালারিতে ছিলেন অভিনেতা রাহুল বোস আর অভিনেত্রী রাইমা সেনও।
অন্যদিকে এদিন মাঠে হাজির হয়েছিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টসের কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। তাঁর মুহূর্তগুলোও কখনও খুশি, কখনও হতাশায় থাকল। অবশ্য শাহরুখের বিপরীত। ম্যাচের একদিন আগেই কলকাতায় পৌঁছে গিয়েছিলেন শাহরুখ খান। সঙ্গে ছিলেন কন্যা সুহানা ও পুত্র আব্রাম। পরদিন তাঁদের সঙ্গে যোগ দিলেন অভিনেত্রী ও সুহানার কাছের বান্ধবী অনন্যা পাণ্ডে। সবাইকে নিয়েই মাঠে পৌঁছলেন শাহরুখ। ততক্ষণে ইডেনমুখী জনতা ঢুকে গিয়েছে গ্যালারিতে। কিন্তু মুহূর্তে গোটা গ্যালারির দৃষ্টি মাঠ থেকে ঘুরে গেল ভিআইপি বক্সের দিকে। আর তাতেই পরিষ্কার হয়ে গেল ইডেনে পৌঁছে গিয়েছেন শাহরুখ খান।
প্রবল গরম এদিন কলকাতায়। কিন্তু তিনি এসি ঘর ছেড়ে বেশিরভাগ সময়টাই কাটালেন বক্স লাগোয়া ব্যালকনিতে। সেখান থেকেই দলের জন্য চিয়ার করতে দেখা গেল তাঁকে। সঙ্গে সুহানা, অনন্যারাও। একটা একটা করে উইকেট পড়ছিল আর সঙ্গে শাহরুখের উচ্ছ্বাস ছিল দেখার মতো। কলকাতার অধিনায়ক শ্রেয়াসকে কোনও একটা সাক্ষাৎকারে বলতে শোনা গিয়েছিল, শাহরুখ যখন ড্রেসিংরুমে ঢোকেন তখন ভিতরের পরিবেশটাই অন্যরকম হয়ে যায়। শাহরুখের সঙ্গে সঙ্গেই একটা পজিটিভ ভাইভ চলতে থাকে।
সেই শাহরুখের সামনে দল কখনও হেরেছে, কখনও জিতেছে। কিন্তু দলের পাস থেকে সরেননি তিনি কখনও। জুহি চাওলাকে একবার বলতে শুনেছিলাম, ‘‘দল হেরে গেলে প্রাথমিকভাবে খুব রেগে যায় শাহরুখ। টিম মিটিংয়ে খারাপ খেলার জন্য প্লেয়ারদের বকাবকি করবেন বলেও ঠিক করেন কিন্তু যখন সেখানে পৌঁছন তখন সব ভুলে তাঁদের সঙ্গে আড্ডায় মেতে ওঠেন। এই হলেন শাহরুখ খান, সে ব্যবসায়ীক সতীর্থ হোক বা তাঁর ক্রিকেট দল— সবার জন্যই অসাধারণ মানুষ তিনি।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার