সুচরিতা সেন চৌধুরী: আগের দিনই কোচ বলেছিলেন, আক্রমণে ধার বাড়াতে হবে, সঙ্গে উঠতে হবে কাউন্টার অ্যাটাকেও। পরিকল্পনাটা যে ছিলই সে প্রমাণ পাওয়া গেল ম্যাচের প্রথম মিনিট থেকেই। এই মরসুমে, এই প্রথম এভাবে গুছিয়ে খেলতে দেখা গেল ইস্টবেঙ্গলকে। শুরু থেকেই যেভাব গোলের জন্য ঝাঁপালো তেমনটা খুব একটা দেখা যায়নি। অস্কার ব্রুজোঁ কেন বলেছিলেন, এবার নতুন ইস্টবেঙ্গলকে কে দেখা যাবে তাও পরিস্কার হয়ে গেল পুরো ম্যাচে। শুক্রবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে যেভাবে শুরু করল ইস্টবেঙ্গল তাতে একবারও মনে হল না তিন নম্বরের বিরুদ্ধে খেলছে লিগ তালিকার সবার নিচে থাকা দল। ১-০ গোলে নর্থইস্ট কে হারিয়ে শেষ পর্যন্ত অষ্টম ম্যাচে প্রথম জয়ের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল।
ম্যাচ শুরুর এক মিনিটের মধ্যে যেভাবে সুযোগ চলে এসেছিল ইস্টবেঙ্গলের সামনে তাতে গোল এসেই যেতে পারত। এদিন শুরুর দিকে গোলের নিচে দারুণ ফর্মে ছিলেন নর্থইস্ট গোলকিপার গুরমিত। জিকসনের সেন্টার থেকে বিষ্ণুর দুরন্ত শট ততোধিক দক্ষতায় বাঁচিয়ে দিলেন তিনি। পরের মিনিটেই মাদিহ তালালের শট বাঁচালেন। পিছিয়ে ছিল না নর্থথইস্টও। যেভাবে নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট হল তাতে, নতুন করে চিন্তার ভাজ পড়তেই পারে হুয়ান পেড্রোর কপালে।
ম্যাচের ১১ মিনিটে জিথিনের থেকে ফাঁকা গোলের মুখে যেভাবে বল পেয়েও রাখতে পারলেন না পার্থিব সেটা অনেকদিন ভাবাবে তাঁকে। বরং এক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গল গোলকিপারের জায়গা ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়াটাও গিলকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করানোর জন্য যথেষ্ট। তবে এদিন রক্ষণে আনোয়ার আলি যেন নিজেকে ফিরে পেলেন। পুরো ম্যাচেই নজর কাড়লেন। শেষ মুহূর্তে গোলের মুখ থেকে পার্থিবের শট ক্লিয়ার না করলে এগিয়ে যেতে পারত নর্থইস্ট। তার পর ৩৭ মিনিটে আলাদিন আজারির শট ক্রসবারে লাগলে সমতায় ফেরার চেষ্টা আরও একবার ধাক্কা খায় নর্থইস্টের।
ততক্ষণে অবশ্য গোল তুলে নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল এফসি। ম্যাচের বয়স তখন ২৩ মিনিট। মাদিহ তালালের কর্নার থেকে উড়ে আসা বল ঘিরে নর্থইস্ট বক্সে তৈরি হয় জটলা। বল ঘুরতে থাকে পায়ে পায়ে। সেখান থেকেই প্রতিপক্ষের এক প্লেয়ারের গায়ে লেগে আবার বল পেয়ে যান তালাল। চলতি বলেই তালালের সেন্টারে দিয়ামান্তাকোসের মাপা হেড আর এবার আটকাতে পারেননি গুরমিত। এর পর নিজেকে কিছুটা শুধরে নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের গোলও রক্ষা করলেন গিল। বার কয়েক নিশ্চিত গোলের ব্লকে বাইরে পাঠালেন। ইস্টবেঙ্গল প্রথমার্ধ শেষ করল ১-০ গোলে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে খেলার গতির সঙ্গে সঙ্গে আক্রমণেও চাপ বাড়াল নর্থইস্ট। সঙ্গে বেশ কিছু অনিয়ন্ত্রিত ফাউলও। যার ফল ঠিক বক্সের বাইরে ফ্রিকিক পেয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল, যদিও তা কাজে লাগেনি। বরং দুই দলের প্লেয়ারদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা ছড়াল। হল কার্ডও। ৭২ মিনিটে নর্থইস্টের হামজা ও ৮৮ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের লালচুংনুঙ্গা জোড়া হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেন। তার মধ্যেই এদিন ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে নজর কাড়লেন পিভি বিষ্ণু, আনোয়ার, জিকসন, তালালরা। দলকে জয় এনে দিল দলগত লড়াই। আট ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের ১৩ নম্বরেই আপাতত থাকতে হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলকে।
ইস্টবেঙ্গল এফসি: প্রভসুখন গিল, মহম্মদ রাকিপ, হেক্টর ইউয়েস্তে, আনোয়ার আলি, লালনুনচুঙ্গা, জিকসন সিং (প্রভাত লাকরা), সল ক্রেসপো, সৌভিক চক্রবর্তী, পিভি বিষ্ণু (সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়), মাদিহ তালাল, দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস (ক্লেটন সিলভা)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার