সুচরিতা সেন চৌধুরী: আইএসএল ২০২৪-২৫-এর জোড়া ডাার্বি জয় হয়ে গিয়েছে মোহনবাগানের। কলকাতার ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের একে অপরের বিরুদ্ধে ম্যাচ সব সময়ই দুই দলের কাছে ফাইনালের মযার্দা পেয়ে এসেছে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই ‘ফাইনাল’ জয় সারা মোহনবাগানের। এবার সামনে লিগ শিল্ড ও আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যেই জামশেদপুরের ঘরের মাঠে নামতে চলেছে মোহনবাগান। যে কোনও দল তাদের ঘরের মাঠে সব সময়ই শক্তিশালী মেনে নিয়েই জয়ের জন্যই নামবে মোহনবাগান, জানিয়ে দিলেন কোচ হোসে মোলিনা। বরং জামশেদপুরে যাওয়ার পদ্ধতি নিয়ে দুই মেরুতে কোচ ও প্লেয়ার। কোচ যখন বলছেন, বাসে করে জামশেদপুর গিয়ে খেলাটা কোনও আলাদা বিষয়ই নয়, তখন দলের অন্যতম স্ট্রাইকার জেসন কামিন্সের মত, যাত্রা পথটা কঠিন।
কোচ বলছেন, “বাসে করে জামশেদপুর যাওয়াটা কোনও কঠিন বিষয় নয়। আমরা একদিন আগে বিমানে গিয়ে, সেখান থেকে আবার বাসে হোটেলে যাই। আলাদা কিছু নয়। এটা খেলার উপর কোনও প্রভাব ফেলবে না।” ঠিক উল্টোটাই ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন জেসনন কামিন্স। তিনি বললেন, “বাসে করে ছ’ঘণ্টা যাওয়াটা কঠিন।” যদিও কলকাতার কাছেই হওয়ায় অ্যাওয়ে ম্যাচ সত্ত্বেও অনেক মোহনবাগান সমথর্কের সেখানে থাকার সম্ভাবনায খুশি কামিন্স। বলছেন, “মোহনবাগান সমথর্করা অসাধারণ। ওরা ১২তম প্লেয়ার দলের।” এর বাইরে পুরো দলের এখন লক্ষ্য জয় ধরে রাখা, ক্লিনশিট রাখা।
লিগ টেবলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেঙ্গালুরুর থেকে আট পয়েন্ট এগিয়েই জামশেদপুরের বিরুদ্ধে খেলতে নামবে দল। তবুও আত্মতুষ্ট নন তাঁরা। কোচ বলেই দিচ্ছেন, “আমরা আত্মতুষ্ট নই। এটা আলাদা ম্যাচ। তবে হ্যাঁ, ওরা ভাল খেলছে। ওদের হারাতে আমাদের অনেক খাটতে হবে। ওরা এই মরসুমে ভাল করছে। কঠিন ম্যাচ।” শুরুতে পিছিয়ে থাকলেও ক্রমশ ভাল পারফর্মেন্স দিয়ে লিগ টেবলে উঠে এসেছে জামশেদপুর। এই মুহূর্তে ১৪ ম্যাচে ২৭ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে রয়েছে তারা। সেদিক থেকে দেখতে গেলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা গোয়া ও তৃতীয় স্থানে থাকা বেঙ্গালুরুরও পয়েন্ট ২৭। লড়াইটা যে সহজ হবে না খালিদ জামিলের দলের বিরুদ্ধে সেদিক দিয়ে নিশ্চিত পুরো মোহনবাগান দল।
ডার্বি জিতে মোহনবাগান ১৫ ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বসে রয়েছে। জামশেদপুরের কাছে বাড়তি পাওনা ঘরের মাঠে খেলা। এই ম্যাচ জিততে পারলে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে একলাফে দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছে মোহনবাগানের ঘাড়েই নিঃশ্বাস ফেলবে তারা। ড্র করলেও একইভাবে উঠে আসবে দল। সেই পরিস্থিতিতে এই ম্যাচ থেকে পয়েন্ট পেতে মরিয়া থাকবেন খালিদ জামিল। মোলিনা বলছিলেন, “নিজের ঘরের মাঠে আমরাও ভাল খেলি। এটাই স্বাভাবিক। তবে আমি আমার সেরা ১১-কেই নামাব এই লক্ষ্যে যাতে ম্যাচটা জিতে ফিরতে পারি।”
ডার্বিতে গোলের সুযোগ নষ্টকে অবশ্য আমল দিচ্ছেন না দলের অন্যতম গোল মেশিন কামিন্স। বলছিলেন, “আমরা ম্যাচটা জিতেছি, আমরা ক্লিনশিট রেখেছি। আমরা সেরাটা দিয়েছি। তবে হ্যাঁ, গোলের সুযোগ নষ্ট যাতে না হয় সেটা নিয়েও আমরা কাজ করছি। এবং আরূ গোল করার চেষ্টা করছি।” তবে নিয়মিত প্রথম দলে সুযোগ না পাওয়া বা চার বিদেশি জেমি, গ্রেগ, জেসন ও দিমিত্রির লড়াইকে সদর্থক বলছেন তিনি। বলছেন, “এটাই যে কোনও বড় দলে হয়। দলে জায়গা পাওয়ার প্রতিযোগিতা থাকে, নিজেদের সেরাটা দেওয়ার খিদে থাকে আর বেঞ্চের শক্তিও অনেক বেশি থাকে। এটা দলের জন্য ভাল।”
গোলের বল তৈরি করার জন্য মনবীর সিং ও লিস্টন কোলাসোর প্রশংসাও করেছে তিনি। দল জিততে থাকলে যে স্পিরিটটা দলের মধ্যে থাকার কথা এই মুহূর্তে সেটাই ধরে রেখেছে মোহনবাগান শিবির। পুরো দল এখন একটা পরিবার, বলে দিচ্ছেন জেসন কামিন্স।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার