সুচরিতা সেন চৌধুরী: সন্তোষ ট্রফি জয়ী বাংলা দলের সংবর্ধনা পর্ব চলছেই। বুধবার ভবানীপুর ক্লাবের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হল পুরো বাংলা দলকে। আর সেই অনুষ্ঠান ঘিরে ক্লাব তাঁবুতে ছিল জমজমাট আয়োজন। ছিলেন ক্লাবের অন্যতম মালিক স্বপনসাধন বসু, সৃঞ্জয় বসু। তাঁদের আয়োজনে হয়ে গেল তারকাখচিত অনুষ্ঠান।
স্বপনসাধন বসু ময়দানের টুটু বসু বলেন, “ভবানীপুর ক্লাবকে পঞ্চম ডিভিশন থেকে প্রিমিয়ার ডিভিশনে নিয়ে গিয়েছে আমার ছেলে সৃঞ্জয় বসু। এবার শুরু করব অ্যাকাডেমি। তবে ভবানীপুরের সঙ্গে মোহনবাগানের খেলা হলে আমি কিন্তু মোহনবাগানকেই সমর্থন করব। ক্রিকেটে মন দিয়েও গতবছর আমরা ত্রিমুকুট জিতেছি।” তিনি এও জানিয়ে দিলেন, এই সন্তোষ জয়ী দলের চারজন ফুটবলার এই ভবানীপুর ক্লাবের।
এদিন সন্তোষ জয়ীদের ঘিরে উদযাপন হয়ে গেল বাংলার ফুটবলের সাফল্যের। তিন লাখ টাকা আর্থিক পুরস্কার দেওয়া হল জয়ী দলকে আর সবার জন্য ঘড়ি। দলের কোচ সঞ্জয় সেনের হাতে আর্থিক পুরস্কারের পাশাপাশি তুলে দেওয়া হল ঘড়ি। তুলে দিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী। এদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, আইএফএ-এর চেয়ারম্যান সুব্রত দত্ত, আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্ত, প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্য, অতনু ভট্টাচার্য, ক্রম্পটন দত্ত, শিশির ঘোষ, দেবদাস বেনসন, শিলটন পাল, দেবজিৎ ঘোষ।
ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, “সন্তোষ জয়ী দলের ২১ জন প্লেয়ারের হাতে আজ নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। সকলেই এসআই পদে যোগ দিলেন।” বাংলার সাফল্যের উৎসবের মধ্যেই ভারতীয় ফুটবলের পরিণতি নিয়েও হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “কী করে হবে উন্নতি, যে ভারতীয় দলে মাত্র একজন বাঙালি। কলকাতা লিগের দলে বাঙালি নেই, ভিনরাজ্যের প্লেয়ার ভর্তি, তাহলে কীভাবে বাঙালি ফুটবলার উঠবে।” আইএফএ-কে অনুরোধও করেন যাতে কলকাতা লিগ শুধুমাত্র কলকাতার ছেলেদের জন্য করে দেওয়া হয়। বাংলার ফুটবলের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে গেলেন তিনি।
কোচ সঞ্জয় সেন বলেন, “আড়াই মাসের প্রচেষ্টায় আমরা এই জায়গায় পৌঁছেছি। আমি আমার কাজ করেছি, সব কৃতিত্ব দলের ছেলেদের। ওরা যেভাবে লড়াই করেছে সেটা কৃতিত্ব পাওয়ার মতই। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর আমি ছেলেদের বলেছিলাম, কলকাতায় ফিরে তোমাদের জীবনে অনেক বদল আসবে, শুধু মাথাটা ঠিক রাখতে হবে। তবে যে সেটা এত তাড়াতাড়ি আসবে ভাবিনি” ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন ফুটবলার বিভিন্ন ক্লাবেও যোগ দিয়েছেন।
সুব্রত দত্ত বলেন, “বব হাউটন একবার আমাকে বলেছিলেন, ভারতের সব থেকে ভাল কোচ সঞ্জয় সেন। কিন্তু তাঁকে কোচ করার ক্ষমতা আমার হাতে ছিল না। এবার আইএফএ সঞ্জয় সেনকে কোচ করার পর আমি নিশ্চিত ছিলাম, কোচকেও বলেছিলাম। আইএফএ-কে ধন্যবাদ।” তিনিও প্লেয়ারদের উদ্দেশ্যে একটাই উপদেশ দেন, আর সেটা হল নিজেকে ঠিক রাখা।
এর সঙ্গেই সবার কথায় উঠে এল ফুটবলারদের চাকরি পিওয়গর কথা। যেদিন শহরে ফিরেছিল দল সেদিনই চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। তাঁর দু’দিনের মধ্যেই চাকরির ফর্ম ফিলাপ করেন ফুটবলাররা। আর এক সপ্তাহের মধ্যেই হাতে চলে এল নিয়োগপত্র। বাংলার ফুটবলে, ক্রীড়াক্ষেত্রে এটা একটা নজির। আর এই ফুটবলের মঞ্চে ব্যাতিক্রমী উপস্থিতি চন্দ্রবিন্দুর অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায়ের। তাঁর ‘বন্ধু চল’ গানে অন্য মাত্রা পেল অনুষ্ঠান।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার