অলস্পোর্ট ডেস্ক: তিনি ছিলেন ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম সেরা প্রশাসক। তাঁর হাত ধরেই দেশের ফুটবল প্রশাসন অন্যমাত্রা পেয়েছিল। তিনি প্রদ্যুৎ দত্ত। ভারতীয় ফুটবলে দত্ত পরিবারের বিভিন্ন সময়ে নানা ভূমিকা থেকেছে। বিশ্বনাথ দত্ত থেকে প্রদ্যুৎ দত্ত, সুব্রত দত্ত হয়ে অনির্বাণ দত্ত। আজও ভারতীয় ফুটবল প্রশাসনের উদাহরণে বার বার চলে আসে প্রদ্যুৎ দত্তের নাম। শনিবার জর্জ টেলিগ্রাফ টেন্টে উদ্বোধন হয়ে গেল তাঁরই জীবনের নানা দিক নিয়ে বই ‘ফুটবলের কাঞ্চনজঙ্ঘা’। যথোপযুক্ত নাম। তিনিই তো ভারতীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ শিখর। এদিন যেন তাঁর ছোট জীবনকেই উদযাপন করল বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবল।
প্রতি বছরের মতো বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চ তো ছিলই। তার সঙ্গে এদিন সেই মঞ্চ থেকেই উদ্বোধন হয়ে গেল এই বই। বই উদ্বোধনে জর্জ টেলিগ্রাফ তাঁবুতে বসেছিল তারকার হাঁট। কে ছিলেন না সেখানে? প্রাক্তন ফুটবলার থেকে ফুটবল প্রশাসক, রাজনীতি বিদ থেকে ক্রীড়া সাংবাদিক, এদিন সবাই ছিলেন এই অনুষ্ঠানের অংশ। বই উদ্বোধনের সময় হাজার মানুষের ভিড় ছিল মঞ্চের সামনে। সেই তালিকায় যেমন ছিলেন প্রাক্তন ফুটবলার সাংসদ প্রসুন বন্দ্যোপাধ্যায়, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, দীপেন্দু বিশ্বাস, রহিম নবি, মেহতাব হোসেনরা, তেমনই ছিলেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডান ক্লাবের কর্তারা। ছিলেন দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু, সাংসদ পার্থ ভৌমিক।
শেষবেলায় অনুষ্ঠানে যোগ দিলেন সর্ব ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে। এছাড়া স্বাভাবিকভাবেই উপস্থিত ছিলেন সুব্রত দত্ত, আইএফএ সচিব তথা প্রদ্যুৎ দত্তের বড় ছেলে অনির্বাণ দত্ত। বড্ড তাড়াতাড়ি বাবাকে হারিয়েছিলেন। সেই সময় তাঁর বয়স মাত্র ১৫। বাবা প্রদ্যুৎ দত্তকে মনে থাকলেও, প্রশাসক প্রদ্যুৎ দত্তকে দেখার সুযোগ হয়নি। পরবর্তী সময়ে সবার কাছে শুনে শুনে জেনেছেন। তিনি নেই ৩০ বছর হয়ে গিয়েছে কিন্তু তাঁর জনপ্রিয়তায় কোনও আঁচ পড়েনি। অনির্বাণ দত্ত বলছিলেন, “এই বই করতে গিয়ে বাবারসম্পর্কে আরও অনেক কিছু জানতে পারলাম অনেকের সঙ্গে কথা বলে যাঁরা সেই সময় বাবাকে ফুটবল প্রশাসনে দেখেছেন। আমি গর্বিত আমি প্রদ্যুৎ দত্তর ছেলে।”
এর সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “প্রশাসনে আসার পর যখনই কোনও সিদ্ধান্ত নিই বা সমস্যায় পড়ি তখন ভাবি, বাবা এখানে থাকলে কী করতেনয় আর আমি সেটাই করি।” তবে শুদু অনির্বাণ দত্ত নন, ভারতীয় ফুটবল অন্যতম সফল প্রশাসক হিসেব আরও একজনের নাম উঠে আসবেই, তিনি সুব্রত দত্ত। প্রদ্যুৎ দত্তের ভাইপো। দীর্ঘদিন ধরে জড়িয়ে রয়েছেন ভারতীয় তথা বাংলার ফুটবলের সঙ্গে। তাঁর কাছে আইডল এই মানুষটিই।
সুব্রত দত্ত বলছিলেন, “আমার আইডল, আমার মেন্টর ছিলেন তিনি। কিন্তু উনি আমার সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতেন। যেকারণে তাঁর কাছে পৌঁছতে কখনও অসুবিধে হতো না। সব রকমের পরামর্শ নিতে পারতাম যখন দরকার হতো। ওনার চরিত্রের মধ্যে যে দৃঢ়তা ছিল সেটা আমাকে সব সময় আকর্ষিত করত। উনিই আমমার শিক্ষাগুরু।” তাঁর কাছে তাঁর ক্রীড়া প্রশাসক হিসেবে সাফল্যের কারণও এই মানুষটি বলে মনে করেন সুব্রত দত্ত।
তিনি বলে, “তাঁর জনপ্রিয়তা কতটা ছিল যে তাঁর মৃত্যুর ৩০ বছর পরও তাঁর জন্য এত এত মানুষ এক মঞ্চে এসে উপস্থিত হয়েছে। এটাই প্রমমাণ সবাই তাঁকে কতটা ভালবাসতো, কতটা শ্রদ্ধা করত। আমি ক্রীড়া প্রশাসনে যা করতে পেরেছি তা ওনার জন্যই। ওনার দেখানো পথ আমরা আজও অনুসরণ করি।”
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার