সুচরিতা সেন চৌধুরী: এক কথায় জঘন্য ফুটবল। দলের প্রাক্তনের হ্যাটট্রিকেই আইএসএল ২০২৪-২৫-এ হারের হ্যাটট্রিক করে ফেলল ইস্টবেঙ্গল এফসি। তিনি বোরহা হেরেরা। যেখানে কেরালা ম্যাচ শেষ করেছিল সেখান থেকেই ঘরের মাঠে গোয়ার বিরুদ্ধে শুরু করল ইস্টবেঙ্গল এফসি। আইএসএল ২০২৪-২৫-এ এই প্রথম ঘরের মাঠে খেলতে নামল কুয়াদ্রাতের ছেলেরা। প্রথমার্ধে হতাশাই জুটলো। দুই অর্ধে দুটো গোল এল ঠিকই কিন্তু ছন্নছাড়া ফুটবল, অসহায় রক্ষণ সঙ্গ ছাড়ল না। গোল করার লোকেরও অভাব দেখা গেল। হিজাজি মেহেরের প্রতিপক্ষকে রীতিমতো গোল উপহার দেওয়া থেকে ক্লেটনের গোলের সামনে বল পেয়েও মিস। সবই ছিল এই ম্যাচে। যার ফল প্রথমার্ধেই হল তিন গোল। দুই গোলে এগিয়ে গিয়েছিল এফসি গোয়াই। পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ করে ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গলের প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-২ গোলে পিছিয়ে থেকে। দ্বিতীয়ার্ধে আরও এক গোল হজম করে বসে। ব্যবধান কমলেও জয় এল না। ২-৩ গোলে হেরেই ঘরের মাঠে শুরু করল।
এদিন সব থেকে বড় যে সিদ্ধান্তটি কার্লেস কুয়াদ্রাত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন সেটা হল গোলকিপার পরিবর্তন। প্রভসুখন গিলকে বসিয়ে দেবজিত মজুমদারকে নামিয়েছিলেন তিনি। প্রথম দলে ফিরিয়ে এনেছিলেন হিজাজি মেহের, সৌভিক চক্রবর্তীকে। কিন্তু খেলার পরিবর্তন কিছু হল না। বরং দ্বিতীয় ম্যাচেই নিজেকে অনেকটা ফিরে পেলেন আনোয়ার আলি। যখন আনোয়ার বার কয়েক ইস্টবেঙ্গল দূর্গ রক্ষা করলেন তখন বাকিরা খাবি খেলেন। আর ইস্টবেঙ্গললে বিপাকে ফেললেন তাদেরই প্রাক্তন বোরহা হেরেরা।
গত বছর মাঝ মরসুমেই ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে গোয়ায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এদিন ২০ মিনিটের মধ্যে জোড়া গোল করে প্রাক্তন দলকে চাপে ফেলে দিলেন বোরহা। প্রথম গোল এল ১৩ মিনিটে। বাঁদিক থেকে গোয়ার একটি গোলমুখি শট শরীর ছুঁড়ে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন দেবজিত কিন্তু দখলে রাখতে পারেননি। তাঁর হাত থেকে ছিটকে আসা বলে বোরহার শট সোজা চলে যায় গোলে। ২০ মিনিটে আবারও সেই বোরহা। এবার অবশ্য এই গোলের কৃতিত্ব দিতে হবে ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের হিজাজি মেহেরকে। তাঁর পা থেকেই বল নিয়ে বোরহাকে দিয়েছিলেন বরিস সিং। ২-০ গোলে এগিয়ে গেল গোয়া।
২৮ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করে নেন মাদিহ তালাল। গোল করতে ভুল করেননি তিনি। কিছুটা স্বস্তিতে প্রথমার্ধ শেষ করলেও দ্বিতীয়ার্ধে কুয়াদ্রাতের জোড়া পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তো থাকবেই। মাঝমাঠে প্রথম থেকে যে ছেলেটা ভরসা দিচ্ছিল সেই জিকসন সিংকে তুলে নিয়ে ডেভিডকে নামানোর সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল তা পুরো দ্বিতীয়ার্ধটা টের পেল দল। সঙ্গে নন্ধাকে তুলে নেওয়া। মাঝমাঠটা পুরো ফাঁকা হযে গেল। দলের জুনিয়রদের নিয়েই বাজিমাত করতে চেযেছিলেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। যার মান রাখলেন ছেলেরা। বোরহার গোলে ৩-১ হওয়ার পর ৮৫ মিনিটে ব্যবধান কমালেন ডেভিড। বোরহার এই গোলও দাঁড়িয়ে দেখলেন হিজাজি।
ততক্ষণে গ্যালারি থেকে ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনি উঠতে শুরু করেছে কার্লেসের নামে। তার আগেই লাল-কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন গোয়ার কার্ল জেরার্ড। ১০ জনে হয়ে যাওয়ার পর বোরহাকে তুলে নেন ম্যানুয়েল মার্কেজ। বোরহাকে হাততালি দিয়ে বিদায় জানালেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। ততক্ষণে একগুচ্ছ পরিবতর্ন করে ফেলেছেন কুয়াদ্রাত। ডেভিডের গোল কিছুটা আশা দেখাল বটে। আনোয়ারের একটি লং রেঞ্জাব বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন কাট্টিমানি। ফিরতি বলে ডেভিডে শট চলে যায় গোলে। লাল-হলুদ গ্যালারি আবার ‘ইস্টবেঙ্গল ইস্টবেঙ্গল’ হুঙ্কারে ফেটে পড়ে। কিন্তু হার বাঁচাতে পারল না কুয়াদ্রাতের ছেলেরা। ‘গো-ব্যাক’ ধ্বনির সঙ্গেই মাঠ ছাড়ল সমর্থকরা।
ইস্টবেঙ্গল: দেবজিত মজুমদার, মার্ক জোথানপুইয়া, হিজাজি মেহের, আনোয়ার আলি, সৌভিক চক্রবর্তী, হেক্টর ইউয়েসে, মাদিহ তালাল, জিকসন সিং (ডেভিড লালসাঙ্গা), নাওরেম মহেশ সিং (পিভি বিষ্ণু), নন্ধা কুমার (সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়), ক্লেটন সিলভা
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার