সুচরিতা সেন চৌধুরী, ভুবনেশ্বর: প্রথম ডার্বি গোল। শুধু গোল নয় ডার্বিতে প্রথম জোড়া গোল। কলিঙ্গ সুপার কাপ ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের জয়ের অন্যতম নায়ক তিনিই। তিনি অধিনায়ক ক্লেটন সিলভা। ম্যাচের একদিন আগেই জানিয়েছিলেন, ডার্বিতে প্রথম গোল তো পেতেই চান সঙ্গে গোল করে দলকেও জেতাতে চান তিনি। এদিন তাঁর দুই ইচ্ছেই পূরণ হয়েছে। ডার্বিতে প্রথম গোল তো পেয়েছেনই সঙ্গে বাড়তি পাওনা তাঁর জোড়া গোল। তাঁর গোলে এদিন সমতায় ফেরে ইস্টবেঙ্গল না হলে প্রথমে গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগানই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করলেন দলের ১০-১১।
প্রথমার্ধে মোহনবাগান এগিয়ে যাওয়ার পর সমতায় ফিরতে খুব বেশি সময় নেয়নি ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে দলকে এগিয়ে দেন মরসুমের প্রথম ডার্বির নায়ক নন্ধা কুমার। এই নন্ধা কুমারের একমাত্র গোলে ৯ ডার্বি পড়ে জয়ের মুখ দেখেছিল ইস্টবেঙ্গল। এই নিয়ে মরসুমে তিন নম্বর ডার্বি খেলল তারা। দ্বিতীয় ডার্বি হারের পর তৃতীয় ডার্বিতে জয় ফিরে পেল কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা। এই ডার্বির সব থেকে বড় গুরুত্ব সুপার কাপের সেমিফাইনালে পৌঁছে যাওয়া।
যদিও ক্লেটন বলছেন, তাঁর কাছে এটির আলাদা করে কোনও গুরুত্ব নেই। তাঁর কাছে আরও একটি গোল। তিনি বলেন, “দল জিতেছে, গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ জিতে আমরা সেমিফাইনালে পৌঁছেছি, আমি তাতে খুব খুশি। দলের জন্য খুশি। আমি জানি এই ম্যাচ স্পেশাল তবে এই গোল আমার কাছে আরও অন্য গোলের মতই। আলাদা কিছু নয়, আসলে দলের গুরুত্বপূর্ণ জয়। এটা বড় ম্যাচ ছিল। আমরা তিন পয়েন্ট পেয়েছি, পরের রাউন্ডে যেতে পেরেছি সেটাই আসল।”
তিনি এর সঙ্গে জু়ড়ে দেন, “ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোল করতে পেরে আমি খুশি। আমি সৌভাগ্যবাণ এই ক্লাবে খেলতে এসে আমি অনেক ভালবাসা পেয়েছি। এখন পুরো ভারত আমার পরিবার। এই মরসুম আমার জন্য খুব স্পেশ্যাল কারণ আমার পরিবার আমার সঙ্গে রয়েছে।” তিনি ফ্যানদের এই মুহূর্তকে স্পেশ্যাল করে তোলার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। সঙ্গে দল, ক্লাব সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাঁকে সমর্থন করার জন্য। তিনি বলেন, “গত বছরটা রোলার কোস্টার রাইডের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। তবে খারাপ সময় থেকে আমরা অনেক কিছু শিখেছি। এই মরসুমের শুরুতেও কিছু সমস্যা আমরা ফেস করেছি. তার পর আমরা অনেক খেটেছি যার ফল এখন পাচ্ছি।”
এদিকে দুই ডার্বিতে গোল করে জেতানোর পর এখন সমর্থক মহলে একটা মিথ তৈরি হয়ে গিয়েছে, নন্ধা কুমার গোল পেলেই কি ইস্টবেঙ্গল ডার্বি জেতে?
এমন প্রশ্নে নিজেই খানিকটা লজ্জা পেলেন লাজুক নন্ধা। ভিতরে ভিতরে যে ডার্বি জয়ের উচ্ছ্বাসটা তখনও টগবগ করে ফুটছে তা বোঝাই গেল। এদিক, ওদিক থেকে শুভেচ্ছার বার্তা উড়ে আসছে। সবাইকে জবাব দিতে দিতেই বললেন, “আমি ভাগ্যবাণ যে ডার্বিতে গোল পেয়েছি। এই নিয়ে দুটো গোল করে ফেললাম। তবে আমার সঙ্গে সমর্থক, দলের পুরো সমর্থণ রয়েছে বলেই যতটা সম্ভব দিতে পারছি।”
এবার সামনে বড় লড়াই। এক ম্যাচের জন্য ডুরান্ড কাপ হাতছাড়া হয়েছে। সুপার কাপ কোনওভাবেই হাতছাড়া করতে চাইবেন না ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। তাই আপাতত এক, দুই দিন বিশ্রাম। তার পর আবার নেমে পড়া সেমিফাইনাল জয়ের লক্ষ্যে। কারণ ফাইনালের আগের ৯০ মিনিটটা টপকে যেতে না পারলে যে সব বৃথা হয়ে যাবে জানে কোচসহ পুরো দল। তাই এখনই উচ্ছ্বাসে ভাসতে নারাজ তারা।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার