সুচরিতা সেন চৌধুরী: একবাক্যে মেনে নিলেন আত্মবিশ্বাসী কার্লেস কুয়াদ্রাত। মোহনবাগানের থেকে যে পারফর্মেন্সের বিচারে তাঁরা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছেন সেটা ডার্বির আগের দিন সাংবাদিকদের সামনে স্বীকার কর নিলেন। এগিয়ে রাখলেন প্রতিপক্ষকে। হতে পারে এটা কার্লেস কুয়াদ্রাতের গেম প্ল্যান কিন্তু খালি চোখে দেখলে বাস্তব এটাই। মোহনবাগান যেখানে রয়েছে তিন নম্বরে সেখানে হারতে হারতে ছয় নম্বরে পৌঁছনোর স্বপ্ন এখন প্রায় অসম্ভব। তবুও ডার্বি জিতে সেই লক্ষ্যকে আবার ফিরে পেতে চান ইস্টবেঙ্গল কোচ। তিনি ক্লাবের প্রতীকের সম্মান রক্ষা করতে চান।
মোহনবাগানের কাছে যখন তিন পয়েন্ট লক্ষ্য লিগ টেবলের শীর্ষে ওঠার তখন ইস্টবেঙ্গলের লক্ষ্য তিন পয়েন্ট পেয়ে প্লেঅফে টিকে থাকা। তবে জিতলেও ইস্টবেঙ্গলকে তাকিয়ে থাকতে হবে অন্য দলের দিকে। এই অবস্থায় জিতে দলের আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্যেই এগোবে দল। ইস্টবেঙ্গলের কাছে ঘুরে দাঁড়ানোর এটাই শেষ সুযোগ, যা বাঁচাতে পাে ক্লাবের সম্মানও। তিনি বলেন, “এই ম্যাচে আমাদের লক্ষ্য ক্লাবের প্রতীকের (নিজের জামায় ইস্টবেঙ্গলের লোগোর দিকে দেখিয়ে) মান রাখার। দলের প্রত্যেকে সমথর্কদের মুখে হাসি ফোঁটানোর জন্যই খেলবে।”
আগের ডার্বির কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। মনে করিয়ে দেন কীভাবে সেই ম্যাচে লড়াই করেছিল ছেলেরা। জেতা ম্যাচ শেষ মুহূর্তে ড্র করে ফিরতে হয়েছিল। তিনি বলেন, ”কলকাতায় আসার পর থেকেই শুনে এসেছি বড় ম্যাচ জিততে হবে, বড় ম্যাচ জিততে হবে। ডার্বি নিয়ে পাগলামোটা জানি। তার পর আমরা ডুরান্ডে জিতেছি, সুপার কাপে জিতেছি, আইএসএল-এ ড্র করেছি। সমর্থকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছি। এই ম্যাচটাও আমরা জিততে চাইব। গত ম্যাচে ৮৮ মিনিটে পেত্রাতোস গোল করে ড্র করে দেয়।”
তবে তিনি যে খাতায় কলমে পিছিয়ে থেকেই এই ডার্বি খেলতে নামছেন তা বলে দিলেন। তিন বলেন, “আমরা যে কাল আন্ডারডগ হয়েই খেলতে নামব তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। গত বেশ কয়েকটি ম্যাচের ফলের নিরিখে ওরা আমাদের থেকে এগিয়েই নামবে। এই ব্যাপারে আমাদের সৎ হওয়া উচিত। দলের প্লেয়ারদের উপর আমার ভরসা আছে। ওরা ওদের সেরাটাই দেবে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলবে।” তিনি জানিয়ে দেন মোহনবাগানের বিরুদ্ধেতাঁর এতদিনের পরিকল্পনা প্রায় সবই সফল হয়েছে।
যখন সবাই প্লেঅফের আশা ছেড়ে দিয়েছে তখন ডার্বি হারলেও প্লেঅফের আশা দেখছেন কুয়াদ্রাত। সেটাও পরিষ্কার করে দিয়েছেন তিনি। বলেন, “এই ম্যাচ হারলেও আমাদের প্লেঅফে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। আমাদের আর ১২ পয়েন্ট পেতে হবে। এর মধ্যে অনেক কিছু বদলে যেতে পারে। ওরা অনেকদিন বিশ্রাম পেয়েছে ডার্বির আগে। আমরা দু’দিন আগেই ম্যাচ খেলেছি।” যদিও এই পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে সেরাটা দেওয়াই যে আসল চ্যালেঞ্জ তা পরিষ্কার করে দিলেন তিনি।
ডুরান্ড কাপের উদাহরণ টেনেএনে তিনি বলেন, “আমরা ডুরান্ড কাপে ভাল ছন্দে ছিলাম। আইএসএল-এর শুরুটাও আমরা ভাল করেছিলাম। কিন্তু ফল খারাপ হওয়া আমরা। ছন্দ হারিয়ে ফেলি। সুপার কাপে আবার তা ফিরে পাই। এখন আবার সময়টা খারাপ। এটা যে কোনও দলের ক্ষেত্রেই হতে পারে। মোহনবাগান এখন পর পর ম্যাচ জিতে ভাল ছন্দে রয়েছে। ওরাও অনেক খারাপ সময় কাটিয়ে এসেছে।” এই ম্যাচ থেকেই যে তিনি ছন্দে ফিরতে চাইছেন সেটা স্পষ্ট।
কুয়াদ্রাত মনে করিয়ে দেন, এই মরসুমে মাত্র একটি ডার্বিতেই হেরেছেন তাঁরা। তিনি বলেন, “এই মরসুমমে আমরা সব ডার্বিতেই ভাল খেলেছি। শুধু ডুরান্ড ফাইনালের ডার্বিতে হেরেছি। আইএসএল-এর প্রথম ডার্বি আমরা ড্র করেছি। যেটা ইতিহাসে প্রথম। জানি এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ আমাদের জন্য।” হাবাসের কথার রেশ পাওয়া গেল কুয়াদ্রাতের মধ্যেও। দুই কোচ যে একইভাবে ভাবছেন তা স্পষ্ট। একইভাবে কুয়াদ্রাত বলেন, “ওরা সেরা দল আইএসএল-এর। ওরা লিগ শিল্ট জেতার জন্য খেলছে, আমরা ছয় নম্বরের জন্য। চেষ্টা করব এই ম্যাচ জেতার।”
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার





