Saturday, February 15, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeফুটবলকার্লস কুয়াদ্রাত-এর সামনে তাঁরই প্রাক্তন দল বেঙ্গালুরু, চেনা মাঠে কঠিন লড়াই

কার্লস কুয়াদ্রাত-এর সামনে তাঁরই প্রাক্তন দল বেঙ্গালুরু, চেনা মাঠে কঠিন লড়াই

অলস্পোর্ট ডেস্ক: এক সময় বেঙ্গালুরুর শ্রী কান্তিরাভা স্টেডিয়াম ছিল তাঁর ঘরের মাঠ। এই স্টেডিয়ামের যেমন প্রতিটি ঘাসের সঙ্গে পরিচিত তিনি, তেমনই এখানকার ক্লাব, তাদের কর্তা, কোচ, খেলোয়াড়রাও যেন অনেক চেনা তাঁর কাছে। তবে সবচেয়ে চেনা সমর্থকেরা। কলকাতায় যেমন প্রিয় দলের জন্য গলা ফাটানোর জন্য হাজির থাকেন সমর্থকেরা, তেমনই বেঙ্গালুরুতেও সব ম্যাচেই উপছে পড়েন ফুটবলপ্রেমীদের ভীড়। সেই চেনা মাঠে চেনা পরিবেশে এ বার অন্য দলের কোচ হয়ে এসেছেন কার্লস কুয়াদ্রাত । এ বার তিনি বেঙ্গালুরুর শত্রুপক্ষের কোচ। তাই চ্যালেঞ্জটা অনেকটাই অন্য রকম। 

লাল-হলুদ বাহিনীর স্প্যানিশ কোচ জানেন বেঙ্গালুরুর মাঠে যে কোনও ম্যাচই কঠিন। সে হোম টিম যে রকম ফর্মেই থাকুক। ঘরের মাঠে তারাই রাজা। তাই যদি কেউ ভেবে থাকেন চলতি লিগের শুরুতেই পরপর দুটি ম্যাচে হেরেছে বলে বেঙ্গালুরু এফসি-কে অনায়াসে হারাতে পারবে ইস্টবেঙ্গল এফসি-ও, তা হলে তা ভুল ভাবনা। এই মন্তব্য স্বয়ং ইস্টবেঙ্গল কোচেরই। 

দুই ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে কান্তিরাভায় নামার আগে তিনি বলছেন, “গত মরশুমে বেঙ্গালুরু ট্রফির অন্যতম দাবিদার ছিল। ওরা ডুরান্ড কাপ জিতেছিল এবং সুপার কাপের ফাইনালেও ওঠে। তার মানে ওরা কঠিন প্রতিপক্ষ। ওরা নতুন খেলোয়াড়দের এনে নতুন করে একটা দুর্দান্ত প্রকল্প শুরু করেছে। তাই বুধবার আমাদের কঠিন লড়াইয়ের জন্য তৈরি হয়েই নামতে হবে। দুটো ম্যাচে হারার পরে ওরা এই ম্যাচে পয়েন্ট তোলার জন্য মরিয়া হয়ে মাঠে নামবে। ওরা নিজেদের উজাড় করে দেবে”। 

২০১৬ থেকে ২০১৮— কোচ হিসেবে ভারতে তাঁর প্রথম পর্বে কুয়াদ্রাত বেঙ্গালুরু এফসি-র সহকারী কোচের পদে ছিলেন ও তাদের ফেডারেশন কাপ, প্রথম হিরো সুপার কাপ জিততে সাহায্য করেন। সেই সময়ে বেঙ্গালুরু এফসি প্রথম ভারতীয় দল হিসেবে এএফসি কাপের ফাইনালে উঠেছিল। ২০১৮-য় প্রধান কোচ হিসেবে বেঙ্গালুরু এফসি-র দায়িত্ব নেন তিনি। প্রথম মরশুমেই (২০১৮-১৯) দলকে প্রথম হিরো আইএসএল চ্যাম্পিয়ন করেন কুয়াদ্রাত। তাঁরই প্রশিক্ষণে বেঙ্গালুরু একই মরশুমে লিগসেরা ও ট্রফিজয়ী দুইই হয়। তাই কান্তিরাভা স্টেডিয়ামকে তিনি নিজের ঘর বলে মনে করেন। 

এখন যুবভারতী তাঁর ঘরের মাঠ হলেও কান্তিরাভাকে ভুলতে পারেননি এখনও। বলেন, “এখানকার সমর্থকেরা দুর্দান্ত। দলের জন্য সবসময় গলা ফাটায়। ওরা দলকে অনেক সাহায্য করে”। তবে এই ম্যাচে শুরুতে গোল করে এগিয়ে যাওয়াটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন কুয়াদ্রাত। বলেন, “সব ম্যাচই খুব কম ব্যবধানে নিষ্পত্তি হচ্ছে। যারা প্রথমে গোল করে এগিয়ে যাবে, তারা এই ম্যাচে অনেক সুবিধা পাবে। দুই দলই ভাল ও ধারাবাহিক। যে কেউ জিততে পারে”। 

গত তিন মরশুমে ব্যর্থতার পরে এ বারই তাদের আশার আলো দেখিয়েছেন কুয়াদ্রাত। আইএসএলে শুরুতেই অপরাজিত রয়েছে তারা, এমন এর আগের তিন মরশুমে তাদের ক্ষেত্রে কখনও হয়নি। ক্রমশ ছন্দে ফিরে পাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। এমন শুরু হওয়ায় আশাবাদী কুয়াদ্রাত বলছেন, “আমি অনেক ইতিবাচক দিক দেখতে পাচ্ছি। আমরা একটা ভাল প্রকল্প খুব সুন্দর ভাবে শুরু করেছি। আমাদের তিনজন খেলোয়াড় জাতীয় দলে খেলবে। আমাদের নতুন খেলোয়াড় হিজাজি মাহের ওর দেশের (জর্ডন) জার্সি গায়ে খেলে। আমাদের গিল অনূর্ধ্ব ২৩ দলে এবং আরও তিনজন অনূর্ধ্ব ১৭ দলে খেলে। ক্লাব একেবারে ঠিক দিকে যাচ্ছে। আমাদের এখন ম্যাচ ধরে ধরে এগোতে হবে। এই লিগে অনেক শক্তিশালী দল রয়েছে। সে জন্য আমাদের ওপর চাপও অনেক বেশি”। 

ইস্টবেঙ্গলের ম্যাচ থাকলে সমর্থকেরা গ্যালারিতে একটি বিশাল টিফো টাঙিয়ে রাখেন, যেখানে লেখা যাকে, ‘এগারো জোড়া পায়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্ন’। এই টিফো কুয়াদ্রাতেরও নজর এড়ায়নি এবং তিনি আপ্লুত। লাল-হলুদ সমর্থকদের নিয়ে যে রীতিমতো আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন তিনি, তা তাঁর কথাতেই স্পষ্ট। যখন বললেন, “টিফোটা দেখে আমি অবাক হয়ে যাই। সমর্থকদের প্রশংসা করার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি আমি। তারা যে ভাবে আমাদের সমর্থন করে চলেছেন, তা অনবদ্য। আমাদের জয় দেখতে যে ওরা কতটা আগ্রহী, আমরা তা উপলব্ধি করতে পারছি। যেখানেই যাই, সেখানেই সমর্থকেরা আমাকে অভিবাদন জানায়। ওরা আমাদের কাছ থেকে যেমন সাফল্য চায়, আমিও ওদের কাছ থেকে তেমন সমর্থন চাই। দীর্ঘ মরশুমে ভাল-খারাপ সব রকম সময়ই আসবে। সব সময়ই আমাদের পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ। কথা দিলাম, ভাল ফলের জন্য সর্বস্ব দিয়ে দেব”। 

দলের স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হোসে পার্দোর সঙ্গে জর্ডন এলসির একটা ভাল জুটি তৈরি হচ্ছিল ক্রমশ। কিন্তু সেই সময়েই এলসি গুরুতর চোট পেয়ে প্রায় পুরো লিগ থেকেই ছিটকে যান। তাই এখন তাঁকে অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার হরমনজ্যোৎ সিং খাবরার সঙ্গে নতুন করে জুটি বাঁধতে হচ্ছে। প্রথম দুই ম্যাচে দু’জনেই বেশ ভাল খেলেছেন। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে পার্দো বলেন, “দলে আমার ভূমিকা ও দলের পারফরম্যান্সের জন্য আমি খুশি। দলের ভাল পারফরম্যান্সে যে আমিও অবদান রাখতে পারছি, তা ভেবে ভাল লাগছে। তবে টিমওয়ার্কই এখানে শেষ কথা”। 

দলের তরুণ ফুটবলারদেরও সাহায্য করতে তৈরি তিনি। বলেন, “দলের সতীর্থদের কাছ থেকে ভাল ফল পাওয়ার জন্য তাদের কী কী বলা উচিত, তা আমি জানি। লালচুঙনুঙ্গার মতো রক্ষণের খেলোয়াড়দের উন্নতির জন্য আমি সাহায্য করতে পারি। সেই চেষ্টা অবশ্যই করব”। 

(লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments