সুচরিতা সেন চৌধুরী: কয়েকদিন আগেই জানিয়েছিলাম বাংলার শেষ সফল স্ট্রাইকার দীপেন্দু বিশ্বাসকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে বায়োপিক যদিও পরিচালক এটিকে বায়োপিক বলতে নারাজ। তাঁর মতে, দীপেন্দুর জীবনের পাশাপাশি সিনেমার চমকও থাকবে এখানে। বৃহস্পতিবার কলকাতা স্পোর্টস জার্নালিস্ট ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে সিনেমার নাম ও শুটিং শুরুর দিন ঘোষণা করা হল।
এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন স্বয়ং দীপেন্দু বিশ্বাস। ছিলেন পরিচালক শ্রী প্রীতম, ছবির নায়িকা তথা ছবির অন্যতম প্রযোজক সংস্থার কর্ণধার বর্ষা সেনগুপ্ত, ছিলেন দীপেন্দুর ভূমিকায় পর্দায় যাঁকে দেখা যাবে সেই মনীশ। যিনি একসময় ফুটবল খেলেছেন। সেকারণেই তাঁকে বেছে নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন পরিচালক। এদিন দীপেন্দুর ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছিলেন তাঁর এক সময়ের সতীর্থ গোলকিপার সংগ্ৰাম মুখোপাধ্যায়ও।
শ্রী প্রীতম বলছিলেন, “এমএস ধোনির বায়োপিক দেখার পর থেকেই ইচ্ছে চেপে বসেছিল। ভেবেই নিয়েছিলাম সিনেমা পরিচালনায় শুরু করব খেলা নিয়েই, বিশেষ করে বাংলার খেলোয়াড়দের কাউকে নিয়ে। তখনই দীপেন্দু বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তাঁর খেলা মাঠে বসে দেখেছি। সেই ২০২২ থেকে লেগে আছি পেছনে। এত ব্যস্ত মানুষের সময় পাওয়াও কঠিন। কিন্তু সব কিছুর মধ্যেও দীপুদা আমাকে সময় দিয়েছে। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।”
তবে চমক তখনও বাকি ছিল। পরিচালক জানিয়ে দিলেন, এই সিনেমায় অভিনয় করতে দেখা যাবে স্বয়ং দীপেন্দু বিশ্বাসকে। যা শুনে রীতিমতো চমকে উঠলেন দীপেন্দুও। তবে পড়ে বললেন, “ফুটবল যখন খেলেছি তখন সাফল্য পেয়েছি। রাজনীতি যখন করেছি, ভোটে দাঁড়িয়ে জিতেছি। এখন ক্লাবের প্রশাসনে রয়েছি। আমার সময়ে মহমেডান আই লিগ জিতেছে, আইএসএল-এর যোগ্যতা অর্জন করেছে। এটাও নিশ্চয় পারব।” তবে তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন তাঁর জীবনের আসল গর্বের মুহূর্ত যেদিন তিনি দেশের জার্সি প্রথম পরেছিলেন। সেই সব মুহূর্তই ধরা পড়বে এবার সিনেমায় পর্দায়।
সেপ্টেম্বরেই শুরু হয়ে যাবে শুটিং। পরিচালক জানালেন, ফেব্রুয়ারিতে ছবি রিলিজের ইচ্ছে রয়েছে। ময়দান, বসিরহাট, টিএফএ, সব জায়গাতেই শুটিং হবে। মানসিক প্রস্তুতি হয়ে গিয়েছে এবার হই হই করে নেমে পড়ার পালা। উত্তেজনায় টগবগ করে ফুটছে পুরো দল। নায়িকা বর্ষার সামনে কিন্তু কঠিন চ্যালেঞ্জ। প্রথম অভিনয় দুনিয়ায় পা দিয়েই ফুটবলারের প্রেমিকা বা স্ত্রীর ভূমিকায় কাজ করা সহজ কথা নয়। তাহলে কি তিনি দীপেন্দু বিশ্বাসের রিয়েল লাইফ স্ত্রীর দ্বারস্থ হবেন?
বর্ষা বলছেন, “আমি অবশ্যই চাইব টিপস নিতে। যা আমার চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। তবে এটা পুরোপুরি বায়োপিক নয়। তবুও দীপেন্দু বিশ্বাসের স্ত্রীর থেকে আমি জানব নিশ্চিত।” নায়ক মনীশকে দেখা গেল পুরো সময়টা জুড়েই দীপেন্দুকে দেখে যেতে। মেনে নিলেন ফুটবলটা খেলতে জানলেও দীপেন্দু বিশ্বাসের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ কপি করা কঠিন কাজ। বলছিলেন, “এটা ঠিক, আমাদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ একদম আলাদা তবে এটাই তো একজন অভিনেতার কাজ, চরিত্রের মধ্যে ঢুকে যাওয়া। আমি আশা করি সবার আশীর্বাদে সেটা পারব। নিজেকে উজার করে দেব, কারণ চরিত্রটার নাম দীপেন্দু বিশ্বাস। বাংলার ফুটবলের লিভিং লিজেন্ড।”
এক ঝাঁক নতুন মুখ নিয়ে একটা লড়াইয়ের ডঙ্কা বাজিয়ে দিলেন প্রীতম। এবার ফলের অপেক্ষায় বাংলার ফুটবলপ্রেমী থেকে সিনেমাপ্রেমী মানুষ আর দীপেন্দু ফ্যানরা তো মুখিয়ে থাকবেনই।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার