সম্প্রীতি দত্ত ও রূপসা ভট্টাচার্য: মরসুমের প্রথম কলকাতা ডার্বি । তাই টিকিটের চাহিদাও তুঙ্গে। ময়দানের সকলের মুখে এখন একটাই কথা, ‘‘একটা টিকিট পাওয়া যাবে?’’ দুই ক্লাবের টিকিট কাউন্টারের সামনে লম্বা লাইন। কেউ টিকিট পেয়ে বাড়ি ফিরছেন, কেউ আবার টিকিট না পেয়ে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন।
এখন যে কোনও ম্যাচের টিকিট অনলাইনেই পাওয়া যায়। কিন্তু ডুরান্ড কমিটি প্রথম থেকে অনলাইনে টিকিট দিলেও ডার্বির টিকিট অনলাইনে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুধু অফলাইনেই পাওয়া যাবে টিকিট। তার ওপর সমস্যা দেখা দিয়েছে ডুরান্ড কমিটি দুই ক্লাবকে টিকিট কম দেওয়ায়। যার ফলে দেখা দিয়েছে টিকিটের হাহাকার।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা থেকে ডার্বির টিকিট দেওয়ার কথা ছিল। আগের দিন রাত থেকেই সমর্থকেরা ভিড় জমিয়েছিল ক্লাবের বাইরে। তা সত্বেও টিকিট পাননি বলে অভিযোগ করলেন বহু সমর্থক। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ইস্টবেঙ্গল সমর্থক বলেন, ‘‘সকাল সাতটা থেকে লাইন দিয়েছি। এখন পাঁচটা বাজে কিন্তু টিকিট এখনও পায়নি। আজ টিকিট পাব কিনা সেটাও জানি না।’’ আর একজন বলেন, ‘‘টিকিট বিক্রি করছে ডুরান্ড কাপের আয়োজকরা। চাহিদা অনুযায়ী টিকিট বন্টন নেই। তাঁদের উচিত ছিল আরও বেশি টিকিট দেওয়ার। তাহলে এত সমস্যাই হত না। ডুরান্ড কমিটির এ বিষয়ে ভাবা উচিত।’’
অফিসিয়ালি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যে ছ’টা পর্যন্ত টিকিট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিকেল পাঁচটার পরও টিকিট কাউন্টারের সামনে দেখা গেল দীর্ঘ লাইন। সমর্থকদের ওপর মাউন্টেড পুলিশের লাঠি চার্জের ঘটনাও ঘটল। টিকিট না পেয়ে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা তাঁদের ক্লাবে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান এদিন।
এই বিশৃঙ্খল পরিবেশের মধ্যেও দেখা গেল উৎসবের আমেজ। টিকিটের অপেক্ষার মাঝেই চলছিল দল নিয়ে বিশ্লেষণ। মোহনবাগান সমর্থকরা ধরেই নিয়েছেন শনিবারের ম্যাচে তাঁরাই শেষ হাসি হাসবে। হাসবে নাই বা কেন বিগত কয়েক বছর ধরে তারা দাপটের সঙ্গে ডার্বি জিতে এসেছে। তাই তাঁরা এবারেও নিশ্চিত তাঁরাই জিতবে মরসুমের প্রথম ডার্বি।
মোহনবাগান সমর্থকরা লাইনে দাঁড়িয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। ক্ষোভ উগরে দেন ডুরান্ড কমিটির প্রতি। তাঁদের প্রশ্ন ক্লাবগুলোকে এত কম টিকিট দিলে কী করে মানুষ খেলা দেখবে। একজন বলেন, ‘‘জীবনে এই প্রথম ডার্বির টিকিট কিনতে এসে এমন অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছে। তারপরও জানি না টিকিট পাব কিনা। ভোর পাঁচটা থেকে দাঁড়িয়ে আছি। ১২ ঘন্টা হয়ে গিয়েছে এখনও একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি।’’ আর একজন বলেন, ‘‘প্রথম কথা কর্মকর্তারা উদাসিন তার ওপর ফোন নম্বর, বাড়ির ঠিকানা নেওয়া হচ্ছে যার কোনও যুক্তি নেই।’’
দুই দলের তুল্যমূল্য বিচারে এই মুহূর্তে এগিয়ে মোহনবাগান। ডুরান্ডে বাংলাদেশ আর্মিকে পাঁচ গোল দিয়েছিল মোহনবাগান। সেই একই দলের কাছে ২-২ গোলে আটকে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গেল। তবে ডার্বি এই সবকিছুর ঊর্ধ্বে। অন্য আবেগের খেলা। তবুও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা এই পরিসংখ্যান নিয়ে মাথা ঘামাতে নারজ। এক সমর্থক বলেই দিলেন, ‘‘গত কয়েক বছর ধরেই ভাবছি হবে, জিতব। বাঙাল মানে জায়গা ছাড়ার কোনও ব্যাপার নেই। জায়গা আমরা ছাড়ব না। আশা করছি জিতব।’’
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার