সুচরিতা সেন চৌধুরী: ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত মরসুমের শুরু থেকেই রেফারিং নিয়ে নানাভাবে বিরক্ত। যত সময় গড়িয়েছে তার ক্ষোভের পরিমাণও বেড়েছে। একটা সময়ের পর তা নিয়ে প্রকাশ্যে বলতেও শুরু করেন। সুপার কাপে তা ভয়ঙ্কর আকাড় নেয়। সেই সময় তিনি অন্য দলের খেলার রেফারিং নিয়েও সমালোচনা করতে ছাড়েননি। সেই ধারা তাঁর চলছেই। আইএসএল-এর প্রায় প্রতি ম্যাচের আগে ও পরে তাঁর রেফারিং নিয়ে সমালোচনা থাকছেই। সোমবার ঘরের মাঠে চেন্নাই এফসির বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙঙ্গল। তার আগেই জামশেদপুর এফসির কাছে জিততে থাকা ম্যাচ হেরে ফিরেছে। চাপ তো রয়েছেই। সোমবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে দেখা গেল কুয়াদ্রাতের উপর সেই চাপের প্রতিফল। সাইডলাইনে দাঁড়িয়ে বার বার নানা বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দেখাতে গিয়ে হলুদ কার্ডও দেখলেন।
চ্যাম্পিয়নশিপ যে তিনি ভাবছেন না তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন কুয়াদ্রাত। তবে তিনি থাকতে চেয়েছিলেন সেরা ছয়ে। তা যে খুব কঠিন ছিল তেমনও নয়। হায়দরাবাদ ম্যাচ জিতে তিনি চেয়েছিলেন পর পর দুই ম্যাচ জিততে কিন্তু তেমনটা হয়নি। তবুও চেন্নাই ম্যাচ পর্যন্ত সেরা ছয়ে যাওয়ার আশাটা বজায় ছিল। তবে তার জন্য জিততে হত ম্যাচ। ৬০ মিনিট পর্যন্ত তেমন কোনও ইঙ্গিতই পাওয়া যায়নি লাল-হলুদের তরফে। ৬৫ মিনিটে নন্ধা কুমারে গোল কিছুটা খেলায়। ফেরাল ঠিকই কিন্তু খাপার ফুটবলের প্রদর্শন চলল।
ফেলিসিও ব্রাউনকে তুলে পিভি বিষ্ণুকে নামানোর পর কিছুটা গোলের বল তৈরি হল, তৈরি হল আক্রমণ। মাঝ মাঠটা ক্রমশ ইস্টবেঙ্গলের দখলে এল বিষ্ণুর কৃতিত্বেই। এর পরও দুরন্ত একটা বল বাড়িয়েছিলেন কিন্তু বক্সের মধ্যে পৌঁছতে একটু দেড়ি হয়ে গেল ক্লেটনের। তবে শেষ পর্যন্ত ১-০ ব্যবধান ধরে রাখতে সক্ষম হল ইস্টবেঙ্গল। সঙ্গে জিইয়ে থাকল সুপার সিক্সের স্বপ্ন। ১৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আটে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল।
এদিন সেরা দলই নামিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। তবে যা ভেবে নতুন দুই বিদেশিকে দলে নেওয়া হয়েছিল তার প্রতিফলন এখনও দেখা যায়নি। একটা সময় ভিক্টর ও ফেলিসিওকে তুলে দুই ভারতীয়কে নামালেন কোচ। দলের দুই সেট হয়ে যাওয়া প্লেয়ার চলে যাওয়ায় দলকে আবার নতুন করে গোছাতে রীতিমতো হিমশিম অবস্থা কোচের। তার মধ্যে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে জিততে থাকা ম্যাচ হেরে যাওয়া বা ড্র করার রোগ তো রয়েছেই। এদিন তো রীতিমতো ছন্নছাড়া ফুটবল খেলল ইস্টবেঙ্গল। তাও একটা গোল হয়ে গিয়েছিল না হলে একরাশ হতাশা নিয়েই এদিন মাঠ ছাড়তে হত লাল-হলুদ জনতাকে।
তবে জয়ের লক্ষ্যে যে খেলাটা খেলার কথা ছিল তা খুঁজে পেতে অনেকটাই সময় নিয়ে নিল দল। বরং একাধিক সুযোগ তৈরি হল চেন্নাইয়ানের। প্রথমার্ধে চেন্নাইয়ের গোলমুখি শট হাতে ধরেও ফেলে দেন প্রভসুখন কারণ শরীরের ভারসাম্য না রাখতে পেরে তিনি গোলের ভিতরে ঢুকে গিয়েছিলেন। সেই বল প্রায় গোল লাইন থেকে ক্লিয়ার না করলে তখনই এগিয়ে যেতে পারত চেন্নাই। দ্বিতীয়ার্ধেও নিশ্চিত গোলমুখি শট সরাসরি এসে লাগে গোলকিপার প্রভসুখনের গায়ে। এছাড়াও ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে পুরো সময়টাই চাপে রাখল চেন্নাই। শুধু গোলটা পেল না। সেরা ছয়ে জায়গা করে নেওয়ার লড়াই ছিল দুই দলেরই সেখানে ভাগ্য সুপ্রসন্ন ইস্টবেঙ্গলের। জিতে স্বপ্ন বাঁচিয়ে রাখল কলকাতার দল।
ইস্টবেঙ্গল: প্রভসুখন গিল, নিশু কুমার (মন্দার রাও দেশাই), হিজাজি মেহের, মহম্মদ রাকিপ (আলেকজান্ডার প্যান্টিচ), লাল চুংনুঙ্গা, নন্ধা কুমার, ভিক্টর ভাাজকুয়েজ, শৌভিক চক্রবর্তী, নাওরেম মহেশ (অজয় ছেত্রী), ফেলিসিও ব্রাউন (পিভি বিষ্ণু), ক্লেটন সিলভা
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার