সুচরিতা সেন চৌধুরী: ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে অভিষেকেই নজর কাড়লেন মিগুয়েল। প্রথমার্ধে পর পর তাঁর হেড ও শট যেভাবে পোস্টে লেগে ফিরল তাতে ভবিষ্যতে তাঁকে নিয়ে ভাবতে হবে প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের। এদিন তাতেই ৩-০ গোলে এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। হ্যাটট্রিক করতে পারতেন মিগুয়েল। বুধবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে নামধারী স্পোর্টস অ্যাকাডেমির বিরুদ্ধে ডুরান্ড কাপের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ম্যাচ ৫-০ গোলে জয়ের পর এই ম্যাচ জিততে পারলেই কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে ইস্টবেঙ্গলের, এটা জেনেই মাঠে নেমেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। যেখানে নামধারী দুই ম্যাচ জিতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল। সেখানে শেষ হাসি হাসল ইস্টবেঙ্গলই। ১-০ গোলে জিতে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ফেলল ইস্টবেঙ্গল।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবলই খেলছিল ইস্টবেঙ্গল কিন্তু ফিনিশিংয়ে গিয়ে বার বার আটকে গেল। ১৬ মিনিটে বিপিনের ক্রস বক্সের মধ্যে পেয়েও গোলে রাখতে ব্যর্থ দিয়ামান্তাকস। এক মিনিটের মধ্যেই রশিদের শট বাঁচিয়ে দেন প্রতিপক্ষ গোলকিপার। ২১ মিনিটে নিজের ক্যারিশ্মা ভারতীয় ফুটবল ফ্যানদের সামনে নিয়ে আসেন ব্রাজিলিয়ান মিডিও মিগুয়েল যখন তাঁর দূরপাল্লার শট পোস্টে লেগে ফিরল। এখানেই শেষ নয়, এর পর আবারও পর পর দুই বার। ব্রাজিলিয়ান ঝলক দেখা গেল।
২২ মিনিটে রশিদের মাপা সেন্টার ছয় গজ বক্সের মধ্যে থেকেই গোল লক্ষ্য করে হেড করেন মিগুয়েল। কিন্তু সেখানেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেই পোস্ট। ৪২ মিনিটে প্রথমার্ধের তৃতীয় সুযোগটি পেয়ে যান মিগুয়েল। ক্রেসপোর কর্নার শট থেকে মিগুয়েলের আবার হেড এবার ক্রসবারে লেগে ফেরে। তার আগেই ৩৯ মিনিটে মহশের ফ্রিকিকে বক্সের মধ্যে থেকে ক্রেসপোর হেড বাঁচিয়ে দেন নামধারী গোলকিপার নীরজ কুমার। ইস্টবেঙ্গলের প্রথমার্ধ মিগুয়েলের গোল মিসের এক্সিবিশন হলে দ্বিতীয়ার্ধে গোলের মুখ খুললেন আরও এক নবাগত বিদেশি হামিদ।

৬১ মিনিটে দিয়ামান্তাকসকে তুলে মরোক্কান ফরোয়ার্ড হামিদ আহদাদকে নামিয়ে দেন কোচ অস্কার ব্রুজোঁ। আর এটা যে তাঁর মোক্ষম চাল ছিল তা সাত মিনিটের মধ্যেই প্রমাণ করে দিলেন হামিদ। ৬৮ মিনিটে মিগুয়েলের কর্নার থেকে হেডে শেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গলের গোলের মুখ খুললেন হামিদ। অভিষেকেই নিজের নামের পাশে গোল লিখে নিলেন হামিদ। দিয়ামান্তাকসকে অভিষেকেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন এই নবাগত ফরোয়ার্ড। মিগুয়েল যেখানে হ্যাটট্রিক করতে পারতেন সেখানে হামিদের ইস্টবেঙ্গলের হয়ে গোলের শিকে ছিড়ল প্রথমে। ৭১ মিনিটে মিগুয়েলকে তুলে আরও এক বিদেশি কেভিন সিবলেকে নামিয়ে দেন। এদিন তিন বিদেশির অভিষেক হয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে। ভরসা দিলেন মিগুয়েল, হামিদ।
চোট সারিয়ে সদ্য ফেরা সৌভিক চক্রবর্তীকে ম্যাচে নামানো নিয়ে ম্যাচের আগের দিন কোচ সংশয়ে থাকলেও ম্যাচের শেষের দিকে নামিয়ে বাঙালি এই মিডিওকে মেপে নিলেন অস্কার। গোল পাওয়ার পর কিছুটা যেন আত্মতুষ্টিতে ভুগছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই সময় বার কয়েক ইস্টবেঙ্গল বক্সে কিছুটা নড়াচড়া দেখা গেল নামধারীর। এক গোলের ব্যবধান সব সময়ই টেনশনের। তাই শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত সেটা থেকেও গেল। তবে ১-০ গোলে জিতেই মাঠ ছাড়ল ইস্টবেঙ্গল। সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গেল কোয়ার্টার ফাইনাল।

ইস্টবেঙ্গল এফসি: প্রভসুখন সিং গিল, লালচুংনুঙ্গা, আনোয়ার আলি, মার্তণ্ড রায়না (এডমুন্ড লালরিনডিকা), মহম্মদ রাকিপ, বিপিন সিং (নন্ধা কুমার), মহম্মদ বাসিম রশিদ, সল ক্রেসপো, নাওরেম মহেশ (সৌভিক চক্রবর্তী), মিগুয়েল ফেরেরা (কেভিন সিবলে), দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস (হামিদ আহদাদ)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার





