সুচরিতা সেন চৌধুরী: লড়াইটা যখন ১৩-র সঙ্গে তিনের তখন স্বাভাবিকবাবেই অসম যুদ্ধ। সে কথা মেনেও নিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোঁ। সাত ম্যাচে মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে ঘরের মাঠে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে খেলতে নামছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। ছয় ম্যাচে টানা হারের পর গত ম্যাচে মহমেডানের বিরুদ্ধে ড্র করে নামের পাশে এক পয়েন্ট লিখতে পেরেছে দল। যদিও সেই ম্যাচে ন’জনে খেলতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। সবাই যখন সেই ম্যাচে রেফারিকে তুলোধনা করছে তখন কোচ কিন্তু দলের প্লেয়ারদের ফাউল করা নিয়ে সোচ্চার। আর সেটাই যে দলকে বিপদে ফেলেছে মেনে নিয়েছেন তিনি। তবে এও বলে দিচ্ছেন, বছরের শেষে অন্য ইস্টবেঙ্গলকে দেখতে পাবেন সমর্থকরা।
প্রতিপক্ষ নর্থইস্ট ইউনাইটেড ৯ ম্যাচ খেলে চারটি জয়, তিনটি ড্র ও দু’টি হার নিয়ে ১৫ পয়েন্টে রয়েছে। সেখানে ইস্টবেঙ্গলের পয়েন্ট ১। সেটা বার বার মনে করিয়ে দিলেন অস্কার ব্রুজোঁ। তার মধ্যে এই ম্যাচে খেলতে পারছেন না দলের অন্যতম ভরসা নন্ধা কুমার ও নাওরেম মহেশ। মহমেডান ম্যাচে দু’জনেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়েছিলেন। আর সেটাই ভাবাচ্ছে কোচকে। তবে তিনি আত্মবিশ্বাসী, তাঁদের পরিবর্তে যাঁরা নামবেন তাঁরা তৈরি। এদিন কোচের সঙ্গে সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন পিভি বিষ্ণু। তিনি যে প্রথম দলে খেলবেন তা নিশ্চিত করে দিয়েছেন কোচ। আত্মবিশ্বাসী বিষ্ণু নিজেও।
নন্ধা বা মহেশের পরিবর্ত হয়ে খেলতে নামতে হবে, তার জন্য কি তিনি প্রস্তুত? বিষ্ণু বলছিলেন, “কোচ আমাকে সব সময় উদ্বুদ্ধ করে। পুরো দল পাশে থাকে। একটা সময় শেষের দিকে নামার সুযোগ হত যখন প্রথম এসেছিলাম আর এখন প্রথম দলে খেলার সুযোগ পাচ্ছি। সবার সমর্থনে যেখানে পৌঁছেছি তাতে আমি খুশি। কোচ সুযোগ দিলে আমি আমার সেরাটা দেব।”
মহেশ, নন্ধার না থাকা প্রসঙ্গে কোচ বলেন, “মহেশ, নন্ধা দলের গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু দলের পরিবর্তরা তৈরি আছে। বিষ্ণু প্রথম দলে খেলবে।” তবে কোচকে ভাবাচ্ছে দলের গোল করতে না পারা। সাত ম্যাচে মাত্র চার গোলই করতে পেরেছে ইস্টবেঙ্গল। সেদিকেই এবার নজর দিতে চাইছেন কোচ। “গোল হজম হচ্ছে কিন্তু গোল করতে পারছি না। রক্ষণের ফাঁক বেরিয়ে আসছে। সেটাকেই বাকিরা কাজে লাগাচ্ছে। আমাদের রক্ষণ গুছিয়ে আক্রমণে ধার বাড়াতে হবে। আরও গোল করতে হবে। ওরা চাইবে আমাদের আক্রমণ আটকাতে। আমরা আমাদের খেলাটাই খেলব।”
তিনি মেনে নিলেন তাঁর দল ভাল জয়গায় নেই। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোটাই এখন মূল লক্ষ্য পুরো দলের সামনে। এই বছর শুক্রবারের ম্যাচ ছাড়া আরও তিনটি হোম ম্যাচ খেলবে ইস্টবেঙ্গল। তার আগে অ্যাওয়ে ম্যাচে খেলতে চেন্নাই যাবে দল। সেই ম্যাচে দলে ফিরে আসবেন নন্ধাকুমাররা। নন্ধার জায়াগায় বিষ্ণু হলে নাওরেমের জায়গায় আসতে পারেন মাদিহ তালাল। কিন্তু আমূল বদলে যেতে পারে দলের ফর্মেশন। বরং কাউন্টার অ্যাটাকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন অস্কার ব্রুজোঁ।
নিজের দলের উপর আস্থা রেখেও প্রতিপক্ষের আজারিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। সঙ্গে গুরুত্ব দিচ্ছেন পুরো দলকে। তবে তাঁর কাছে দলগত ম্যাচের গুরুত্ব অনেকবেশি। বলছিলেন, “আজারিকে কেউ একজন আটকাবে না, আমাদের দলগত খেলার মধ্যে দিয়েই তাঁকে আটকাতে হবে। শুধু তাঁকে আটকালে তো হবে না তাঁকে পিছন থেকে যারা বল সাপ্লাই দিচ্ছে সেই সাপ্লাই লাইনটাকে আটকাতে হবে।”
এর সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন, “নর্থইস্টের আপফ্রন্ট কঠিন, সেটাকে সবাই মিলে আটকাতে হবে। আমরা আমাদের স্ট্র্যাটেজি ম্যাচের সঙ্গে সঙ্গে বদলাবো।” এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে, কোনও একটা জায়গায় নিজেকে বেঁধে রাখতে চান না তিনি। ম্যাচ এবং প্রতিপক্ষের খেলার উপর নির্ভর করেই পরিকল্পনা এগোবে ইস্টবেঙ্গল কোচের।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার