অলস্পোর্ট ডেস্ক: ম্যাচ শুরুর ৩০ সেকেন্ডের গোলেই লেখা ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর ঠিকানা। যার ফল শেষ পর্যন্ত জয়ের মুখ দেখল ইস্টবেঙ্গল এফসি। আইএসএল-এ এখনও জয়ের মুখ দেখেনি কলকাতার দল। এসিএল ২০২৪-২৫-এর গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভুটানের মাটিতে ড্রয়ের স্বাদ পেয়েছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। আর সেখানেই দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে জয়ের রাস্তায় পা রাখল দল। দলের বর্তমান কোচ অস্কার ব্রুজোঁর প্রাক্তন দল বাংলাদেশের বসুন্ধরা কিংসের বিরুদ্ধেই জয়ে ফিরল ইস্টবেঙ্গল। প্রথম ম্যাচে কোচের জায়গায় ছিলেন বিনো র্জজ। মঙ্গলবার অবশ্য দেখা গেল অস্কার ব্রুজোঁকেই। আর তিনি নামতেই বাজিমাত দলের। ৪-০ গোলে বড় জয় তুলে নিয়ে এএফসিতে আশা জিইয়ে রাখল কলকাতার দল।
এদিন প্রথম দলে ফিরলেন নুঙ্গা ও সৌভিক। তবে ম্যাচ শুরুর এক মিনিটের মধ্যেই গোল করে এগিয়ে যাওয়া মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়া ইস্টবেঙ্গল দলকে যেন অক্সিজেন দিল। নুঙ্গার ক্রস বক্সের মধ্যে থেকেই প্রতিপক্ষের জালে জড়ালেন দিয়ামান্তাকোস। প্রথম ম্যাচে পারো এফসির বিরুদ্ধেও গোল পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু জয় এনে দিতে পারেননি। তবে এদিন তিনি একা নন, গোল করলেন দলের চারজন। চার গোলের পিছনে লেখা হল চার নাম। ফরোয়ার্ড থেকে মিডফিল্ডার হয়ে ডিফেন্স—সবাই গোল পেলেন।
শুরুতেই গোল তুলে নিয়ে আক্রমণেও ঝাঁঝ বাড়াল ইস্টবেঙ্গল। যার ফল প্রথমার্ধে চার গোল তুলে নিল। প্রতিপক্ষের কাছে ইস্টবেঙ্গল আক্রমণের কোনও জবাব ছিল না। যত গোল প্রথমার্ধে হল ততগুলোই নিশ্চিত গোলের সুযোগও নষ্ট করল তারা। যা ব্রুজোঁর মাথা ব্যথার কারণ হতে পারে। যদিও ব্রুজোঁ যোগ দেওয়ার পর বলেছিলেন, হারতে থাকা একটা দলকে মানসিকভাবে ফিরিয়ে আনতে একটা সময় লাগে, তবে তিনি খুব বেশি সময় নেননি। কিন্তু একটা জয় দিয়েও তাঁকে সফল বলে দেওয়া যায় না। তবে আশার আলো জ্বালালেন তিনি, দলকে জয় এনে দিয়ে।
হেরে এএফসি-র গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে গেল বসুন্ধরা কিংস। ম্যাচ শুরুর ৩০ সেকেন্ডের গোলের পর ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ২-০ করলেন সৌভিক চক্রবর্তী। তার ছয় মিনিটের মধ্যেই ৩-০ করে গেলেন নন্ধাকুমার। এই ম্যাচের শেষ গোলটি এল ৩৩ মিনিটে। এবার গোলের কারিগর আনোয়ার আলি। নুঙ্গার লম্বা থ্রো থেকে ছিটকে আসা বলে বক্সের বাইরে থেকে আনোয়ারের জোড়াল শট বসুন্ধরা গোলকিপারকে রীতিমতো থমকে দিয়ে গোল করে যান দলের এই বিতর্কীত ডিফেন্ডার। যাঁকে নিয়ে একটা সময় দুই প্রধানের টানাটানি আইনি জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিল। যে মামলা এখনও ঝুলছে ফেডারেশনের ঘরে। সেই আনোয়ারের গোলেই ৪-০ গোলে জয় নিশ্চিত করে ইস্টবেঙ্গল।
দ্বিতীয়ার্ধে আর গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারেনি দল। অন্যদিকে ম্যাচে ফেরার জন্য শেষ মুহূর্তে লড়াই দেয় ঠিকই বসুন্ধরা কিন্তু তা যথেষ্ট ছিল না। তাদের বেশ কয়েকটি আক্রমণ আটকে যায় ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ ও গিলের হাতে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে নেমেই সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন ক্লেটন সিলভা। কিন্তু কোনওরকমে তা বাঁচিয়ে দেন প্রতিপক্ষ গোলকিপার। ক্লিনশিট রেখেই জয় তুলে নিল ইস্টবেঙ্গল। এই মুহূর্তে গ্রুপ পর্বে লিগ টেবলে চার পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কলকাতার দল। ম্যাচের সেরা হয়েছে নন্ধাকুমার।
ইস্টবেঙ্গল এফসি—প্রভসুখন গিল, আনোয়ার আলি, হেক্টর ইউয়েস্তে (রাকিপ), হিজাজি মেহের, লালচুংনুঙ্গা, সৌভিক চক্রবর্তী (জিকসন সিং), সল ক্রেসপো, নন্ধাকুমার সেকার, নাওরেম মহেশ (পিভি বিষ্ণু), মাদিহ তালাল, দিমিত্রি দিয়ামান্তাকোস (ক্লেটন সিলভা)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার