Wednesday, January 22, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeআইএসএলআইএসএল ২০২৪-২৫-এ ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্বাস ইস্টবেঙ্গলের, লিগ টেবলে উত্থান

আইএসএল ২০২৪-২৫-এ ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্বাস ইস্টবেঙ্গলের, লিগ টেবলে উত্থান

অ‌লস্পোর্ট ডেস্ক: গত ম্যাচে প্রথম জয় পেয়েছিল তারা। শনিবার ফের জয় পেল ইস্টবেঙ্গল এফসি। শনিবার সন্ধ্যায় চেন্নাইন এফসি-কে ২-০-য় হারিয়ে লিগ টেবলের সর্বশেষ স্থান থেকে দুই ধাপ উঠে এল লাল-হলুদ বাহিনী। ৬৭ দিন ধরে ১৩ নম্বরে থাকার পরে এ দিন ১১ নম্বরে উঠে এল তারা। নয় ম্যাচে সাত পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন হায়দরাবাদ এফসি ও মহমেডান এসসি-র ওপরে।

এ দিন চেন্নাইয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে ৫৪ মিনিটের মাথায় পিভি বিষ্ণু ও ৮৪ মিনিটের মাথায় জিকসন সিংয়ের গোলে চলতি লিগের দ্বিতীয় জয় পায় লাল-হলুদ বাহিনী। নতুন কোচ অস্কার ব্রুজোনের প্রশিক্ষণে আইএসএলে এত দিনে জয়ের সরণিতে হাঁটা শুরু করল তারা।

আইএসএলের ইতিহাসে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার পরপর দু’টি ম্যাচ জিতল ইস্টবেঙ্গল। এ বছর এপ্রিলে কেরালা ব্লাস্টার্স ও বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে পরপর জোড়া জয় পেয়েছিল কার্লস কুয়াদ্রাতের দল। এ দিন দ্বিতীয়বার এই ঘটনা ঘটাল অস্কারের দল। তবে গোল অক্ষত রেখে টানা দু’টি জয় এই প্রথম। এই নিয়ে টানা তিনটি ম্যাচে ক্লিন শিট বজায় রাখল তারা।

এ দিন দাপুটে জয় না পেলেও প্রতিপক্ষের গোলের সামনে অনেক বেশি তৎপর ছিল কলকাতার দলের ফুটবলাররা। সারা ম্যাচে তাদের তিনটি শট লক্ষ্যে ছিল, যার মধ্যে দু’টি থেকেই গোল হয়। মোট ১০টি গোলের সুযোগ তৈরি করে ইস্টবেঙ্গল। প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে ১৬ বার বল ছোঁয় তারা ও ফাইনাল থার্ডে ৫৩ বার প্রবেশ করে।

প্রথমার্ধে একাধিক গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করার খেসারত এ দিন দিতে হয় চেন্নাইন এফসি-কে। প্রতিপক্ষের বক্সে তাদের চেয়ে বেশিবার (১৯) বল ধরা ও ফাইনাল থার্ডে ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে বেশিবার (৬১) প্রবেশ করা সত্ত্বেও গোলের দরজা খুলতে পারেনি ওয়েন কোইলের দল। দ্বিতীয়ার্ধে ইস্টবেঙ্গল আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং জয়সূচক গোলগুলি তুলে নেয়।

দুই দলই এ দিন তাদের প্রথম এগারোয় তিনটি করে পরিবর্তন করে দল নামায়। গত ম্যাচে লাল কার্ড দেখা লালচুঙনুঙ্গার জায়গায় নামেন প্রভাত লাকরা। স্প্যানিশ ডিফেন্ডার হেক্টর ইউস্তের জায়গায় হিজাজি মাহের এবং জিকসন সিংয়ের জায়গায় নাওরেম মহেশ সিংকে নামান লাল-হলুদ কোচ অস্কার ব্রুজোন। দিয়ামান্তাকসকে সামনে রেখে তাঁর পিছনে পাঁচজন মিডফিল্ডার রাখেন তিনি।

শুরুর দিকে কোনও দলই তেমন জোরালো আক্রমণে উঠতে পারেনি। চেন্নাইন এফসি তাদের প্রথম ভাল সুযোগটি পায় ২৫ মিনিটের মাথায়, যখন কোনর শিল্ডসের মাপা ক্রস থেকে হেডে গোল করার সুযোগ পেয়ে যান ইস্টবেঙ্গলের প্রাক্তনী ড্যানিয়েল চিমা। কিন্তু ছ’গজের বক্সের সামনে থেকে হেড করে বারের ওপর দিয়ে বল উড়িয়ে দেন তিনি।

ম্যাচের ৩০ মিনিটের মাথায় লুকাস বামব্রিলার ফরোয়ার্ড থ্রু পেয়ে ফের প্রতিপক্ষের বক্সে ঢুকে গোলে শট নেন চিমা। কিন্তু এ বার তা দুর্দান্ত সেভ করেন ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন গিল। ৩৩ মিনিটের মাথায় ফারুখ চৌধুরির গোলের সামনে বাড়ানো ক্রসে ঠিকমতো পা লাগাতে পারলেন অবধারিত গোল পেতেন চিমা।

চেন্নাইন পরপর এতগুলি গোলের সুযোগ পেলেও ইস্টবেঙ্গল প্রথমার্ধে সে ভাবে গোলের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। প্রথমার্ধে একটিও শট গোলে রাখতে পারেনি তারা। দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকসকে তেমন ভাল গোলের পাস বা ক্রস বাড়াতে পারেননি কেউই। একবার দিয়ামান্তাকসই বক্সের মধ্যে কাট ব্যাক করেন মাদি তালালকে। কিন্তু প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারদের বাধায় তিনি খেই হারিয়ে ফেলেন। এ ছাড়া আর তেমন গোলের ভাল সুযোগ পায়নি তারা।

দ্বিতীয়ার্ধের খেলা পাঁচ মিনিট গড়ানোর আগেই অপ্রত্যাশিতভাবে দিয়ামান্তাকসকে তুলে ক্লেটন সিলভাকে নামান ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোন। মাঠ ছাড়ার সময় দিয়ামান্তাকসকে দেখে চোট আছে বলে মনে হয়নি। তবে তিনি মাঠে থাকা সত্ত্বেও প্রথমার্ধে ইস্টবেঙ্গল একটিও শট গোলে রাখতে পারেনি।
তবে এই পরিবর্তনের মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই গোল পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। অবশ্য এই গোলের মুভে ক্লেটনের কোনও ভূমিকা ছিল না। ৫৪ মিনিটের মাথায় ডানদিকের উইং থেকে বক্সের মধ্যে লম্বা পাস ভাসিয়ে দেন মহেশ, যা অনুসরণ করে দ্রুত দৌড়ে ডানদিক দিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার সল ক্রেসপো। অনেকটা এগিয়ে কোণাকুনি শটে গোলে বল রাখার চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু গোলকিপার মহম্মদ নাওয়াজের হাতে লেগে ছিটকে বেরিয়ে আসে বল গোলে ঠেলে দেন পিভি বিষ্ণু (১-০)। দুই ডিফেন্ডার তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেও পারেননি।

কিন্তু এই গোলের পরেই ইস্টবেঙ্গল শিবিরে নেমে আসে হতাশা, যখন হ্যামস্ট্রিং সমস্যার জন্য মাঠেই শুয়ে পড়েন ক্রেসপো এবং স্ট্রেচারে শুইয়ে তাঁকে মাঠের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। হ্যামস্ট্রিং পুল হওয়া মানে হয়তো অন্তত সপ্তাহ দুয়েকের জন্য মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। ক্রেসপোর জায়গায় নামেন জিকসন সিং। কিন্তু মাঠের বাইরে গিয়ে রেফারির সঙ্গে তর্ক জুড়ে দিয়ে হলুদ কার্ড দেখেন তিনি, যা তাঁর চতুর্থ হলুদ কার্ড। ফলে পরের ম্যাচে নিশ্চিতভাবে নেই তিনি।

গোল খাওয়ার পরেই চিমাকে তুলে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার উইলমার জর্ডনকে নামায় চেন্নাইন এফসি। পরিবর্ত ফরোয়ার্ড ভিনচি ব্যারেটো ও কিয়ান নাসিরিকেও নামানো হয় ইরফান, ব্রামবিলার জায়গায়। উদ্দেশ্য অবশ্যই সমতা আনা। বিষ্ণুর গোলের ঠিক আগেই ৫২ মিনিটের মাথায় যিনি অসাধারণ একটি বাইসাইকেল কিক মারেন, যা সোজা গোলকিপার গিলের হাতে জমা হয়ে যায়, সেই ফারুখ চৌধুরিকেও তুলে নেন ওয়েন কোইল, নামান গুরকিরাত সিংকে।

অন্যদিকে, গোলদাতা বিষ্ণুকে তুলে নন্দকুমার শেকরকে নামায় ইস্টবেঙ্গল। জয় সুরক্ষিত করার জন্য দ্বিতীয় গোলের চেষ্টা চালিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ৬৩ মিনিটের মাথায় জিকসনের দূরপাল্লার শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ৭৭ মিনিটের মাথায় তালালের শটও গোলের ডান কোণের ওপর দিয়ে চলে যায়। তবে ৭৯ মিনিটের মাথায় বাঁ দিক থেকে লাকরার বাড়ানো বলে গোলের যে সুযোগ পেয়ে যান ক্লেটন, তাকে সুবর্ণ সুযোগ বলাই যায়। কিন্তু নিয়মিত না খেলা ক্লেটন তা গোলের বাইরে পাঠান।

তাদের চেষ্টা সফল হয় ৮৪ মিনিটের মাথায়, যখন জিকসন সিংয়ের অসাধারণ দূরপাল্লার শট তীব্র গতিতে চেন্নাইনের গোলের জালে জড়িয়ে যায়। গোলকিপারের এখানে কিছুই করার ছিল না। বাঁ দিক দিয়ে ঢোকা নন্দকুমারের গোলমুখী শট এক ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে বক্সের বাইরে বেরিয়ে আসে। সেই বল পেয়ে কিছুটা সময় নিয়ে সোজা গোলে শট নেন জিকসন (২-০)। এই গোলের পরেই ইস্টবেঙ্গলের দ্বিতীয় জয় নিশ্চিত হয়ে যায়। কারণ, চেন্নাইন এফসি এর পরেই কার্যত হাল ছেড়ে দেয়। ছ’মিনিট সংযুক্ত সময় পেয়েও কিছু করতে পারেনি তারা।

ইস্টবেঙ্গল এফসি দল (৪-৫-১): প্রভসুখন সিং গিল (গোল), মহম্মদ রকিপ, আনোয়ার আলি, হিজাজি মাহের, প্রভাত লাকরা, নাওরেম মহেশ সিং, সল ক্রেসপো (জিকসন সিং-৫৯), শৌভিক চক্রবর্তী, মাদি তালাল, পিভি বিষ্ণু (নন্দকুমার শেকর-৭৩), দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস (ক্লেটন সিলভা-৪৯)।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments