অলস্পোর্ট ডেস্ক: ছন্দে ফিরতে দলটা খুব বেশি দেরি করে ফেলল। বা এমনও বলা যায়, এই ছন্দে ফেরাটা আগেও ফিরেছে ইস্টবেঙ্গল দল কিন্তু ধরে রাখতে পারেনি। আইএসএল ২০২৪-২৫-এর শেষ পাঁচ ম্যাচের আগে লাল-হলুদ ব্রিগেডের কাছে সত্যি কথা বলতে কী কোনও লক্ষ্যই ছিল না। অস্কার ব্রুজোঁ দলের দায়িত্ব নিয়ে শেষ ছ’য়ের স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু দলের নানা টানাপড়েন সেই লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে সব থেকে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়ায়। দলকে সব থেকে সমস্যায় ফেলে তাদের চোট আঘাত। যা অস্কারকে টানা এক দল নামাতেই দেয়নি। তার উপর কার্ডের বাড়বাড়ন্ত। সব মিলে সবটা যে কোচের হাতে ছিল তাও নয়। এই অবস্থায় শেষ পাঁচ ম্যাচ ছিল ইস্টবেঙ্গলের কাছে সম্মানের। যার প্রথম দুটো ম্যাচ রীতিমতো দাপটের সঙ্গে জিতল দল। এদিন ৩-১ গোলে জিতে ২১ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে ন’য়ে উঠে এল ইস্টবেঙ্গল।
শনিবার দিনের প্রথম ম্যাচে পঞ্জাবের ঘরের মাঠে তাদের তিন গোল দিল ইস্টবেঙ্গল। সব থেকে বড় কথা এএফসির আগে গোলের মুখ দেখলেন দিয়াান্তাকোস। মহমেডান ম্যাচের পর দ্বিতীয় ম্যাচ শুরু থেকে খেললেন মেসি। গোলের সুযোগও পেলেন সঙ্গে গোলের বলও বাড়ালেন তিনি। শুরুর তিন ম্যাচে তিনি হতাশ করেননি। ১৪ মিনিটে গোলের বলটা এল তাঁরই কাছ থেকে। বক্সের বাঁ দিক থেকে দিয়ামান্তাকোসের বাঁ পায়ের শট গোলকিপারের পায়ের ফাঁক দিয়ে চলে গেল পঞ্জাব গোলে। শুরুতেই এগিয়ে যাওয়াটা অনেকটাই আত্মবিশ্বাসের কাজ করে যে কোনও দলের জন্য। ইস্টবেঙ্গলও ব্যতিক্রম নয়।
এর পর প্রথমার্ধেই ব্যবধান বাড়িয়ে নিতে পারত ইস্টবেঙ্গল। ৩৬ মিনিটে ক্রেসপোর সেটপিস থেকে মেসির হেড অল্পের জন্য গোল মিস করল। তার আগেই সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন দিয়ামান্তাকোস। ৪৩ মিনিটে আবারও মেসি-দিমি জুটি গোলের সুযোগ তৈরি করে ফেলেছিল। কিন্তু তা থেকে গোল হল না। শেষ পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল প্রথমার্ধ শেষ করল ১-০ গোলে এগিয়েই। প্রথমার্ধ যেখানে শেষ করেছিল সেখান থেকেই দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করে দেয় কলকাতার দল। যার ফল এক মিনিটের মধ্যেই ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় অস্কারের ছেলেরা। মেসির পাস থেকে বিষ্ণুর শট আটকে যাওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই সেই বিষ্ণুর তুলে আনা বল প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়ে দলকে ভরসা দেন নাওরেম মহেশ।
৫৩ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ৩-০ করেন লালচুংনুঙ্গা। আনোয়ারের ফ্রিকিক থেকে উড়ে আসা বল বক্সের ভিতরের জটলার মধ্যে দু’বার ধাক্কা খেয়ে ছিটকে বেরিয়ে আসার সময় ঠান্ডা মাথায় তা পঞ্জাব জালে জড়ান দলের এই ডিফেন্ডার। এর পরও সুযোগ এসেছিল দিয়ামান্তাকোসের কাছে। অন্যদিকে, পঞ্জাব যে একদমই সুযোগ পায়নি এমনটা নয়। তাদের সব প্রচেষ্টা আটকে যায় ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ থেকে গোলকিপারের হাতে। একাধিক ভাল সেভ দিয়ে দলের দূর্গ রক্ষা করলেও ক্লিনশিট রাখতে পারলেন না প্রভসুখন। ৬১ মিনিটে ভিদালের বাঁ পায়ের শট বক্সের বাইরে থেকে চলে যায় গোলে।
তবে এই মরসুমে এই নিয়ে তৃতীয়বার পর পর দুই ম্যাচ জিতল ইস্টবেঙ্গল। যতবারই এমন পরিস্থিতি হয়েছে, ততবারই জয়ের হ্যাটট্রিকের আশায় বুক বেঁধেছেন সমর্থকরা। কিন্তু সেই ম্যাচে আবার মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে। এটাই এবারের জন্য শেষ সুযোগ, যদি জয়ের হ্যাটট্রিকটা উপহার দেওয়া যায় সমর্থকদের। আগের দিনই ক্রেসপো বলেছিলেন, বাকি ম্যাচগুলো তাঁরা সমর্থকদের জন্য খেলতে চান। এদিনও দিল্লির জওহরলাল নেহেরু স্টেডিয়ামে লাল-হলুদ জার্সির উপস্থিতি চোখে পড়ল যা দলের জন্য বড় প্রাপ্তি। ২৪ পয়েন্ট নিয়ে নয় নম্বরে উঠে এলেও আরও উপরে ওঠাটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের। এই মুহূর্তে আট থেকে ১১-তে থাকা চার দলেরই পয়েন্ট ২৪। তাই পয়েন্ট বা লিগ টেবল নয়, শুধুই জয় দেখছে ইস্টবেঙ্গল।
ইস্টবেঙ্গল: প্রভসুখন সিং গিল, আনোয়ার আলি, হেক্টর ইউয়েস্টে (প্রভাত লাকরা), লালচুংনুঙ্গা, মহম্মদ রাকিপ, পিভি বিষ্ণু (নিশু কুমার), সৌভিক চক্রবর্তী, সল ক্রেসপো (জিকসন সিং), নাওরেম মহেশ সিং,মেসি বাউলি, দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস (ডেভিড)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার