সুচরিতা সেন চৌধুরী: তিন বছর পর আবার আইএফএ শিল্ড। শতাব্দি প্রাচীন এই টুর্নামেন্ট (১২৫ বছর) তিন বছর বন্ধ থাকার পর আবার বল গড়াল মাঠে। বুধবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে ইস্টবেঙ্গল বনাম শ্রীনিধি ম্যাচ দিয়ে শুরু হয়ে গেল আইএফএ শিল্ড ২০২৫। ছোট্ট উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আর লাল-হলুদ বেলুন উড়িয়ে শিল্ড উদ্বোধনে অংশ নিলেন আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দোপাধ্যায়, সচিব অনির্বাণ দত্ত, দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু-সহ আরও অনেকে। হাফ টাইমে নতুন করে শিল্ডের ট্রফি উন্মোচনও করা হল। তার আগেই অবশ্য দুই গোলে এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে তাতে যোগ হল আরও দুই। ম্যাচ যখন শেষ হল তখন ইস্টবেঙ্গলের নামের পাশে লেখা হয়ে গিয়েছে ৪ গোল, উল্টোদিকের ভাড়ার শূন্য। ৪-০ গোলে জিতেই আইএফএ শিল্ড যাত্রা শুরু করে দিল ইস্টবেঙ্গল।
শুরুতে অবশ্য একগুচ্ছ মিসও ছিল ইস্টবেঙ্গলের তরফে। ম্যাচের ১০ মিনিটেই অফসাইডের জন্য গোল বাতিল হওয়ার পর ১৫ মিনিটে বিপিন ও ১৭ মিনিটে মিগুয়েলের সিটার মিস সাময়িকভাবে কিছুটা চিন্তায় রেখেছিল ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোঁকে। তবে ২২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে আবির্ভাবেই গোল করে আইএফএ শিল্ডেও দলের হয়ে গোলের দরজা খুলে দিলেন জয় গুপ্তা। মিগুয়েল এর ফ্রিকিক শ্রীনিধি গোলকিপার আদিল ফয়জল বাঁচিয়ে দিলেও তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। ফিরতি বলেই জয়ের অনবদ্য ফিনিশ। এর পর ২-০ করতে বেশিক্ষণ আর অপেক্ষা করতে হয়নি ইস্টবেঙ্গলকে।
৩৮ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে ব্যবধান বাড়ান সল ক্রেসপো। কর্ণার নিয়েছিলেন বিপিন সিং। সেই বল বক্সের মধ্যে থেকে ক্লিয়ার করে দিয়েছিলেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার। কিন্তু সেই ক্লিয়ার হওয়া বল পেয়ে গিয়েছিলেন বিপিন। বক্সের বাঁ দিক থেকে আবার বক্সের মধ্যে বল পাঠিয়েছিলেন বিপিন, সেই ক্রসেই সফল হেড ক্রেসপোর। প্রথমার্ধের খেলা ২-০ গোলে শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও দু’গোল আসে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে।
প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম গোলের পিছনেও ভূমিকা রেখে গেলেন বিপিন সিং। ৪৮ মিনিটে বিপিনের পাসে হামিদের গোলের ঠিকানা লেখা ভলি ইস্টবেঙ্গলকে ৩-০ গোলে এগিয়ে দেয়। জোড়া গোলের পিছনে ভূমিকা রেখে গেলেন বিপিন সিং। এদিন দলের মাঝমাঠকে সচল রাখলেন তিনিই। সঙ্গে উদ্যোগী ভূমিকায় পাওয়া গেল অধিনায়ক ক্রেসপোকেও। গোল করে ও করিয়ে ম্যাচের সেরাও তিনি। ৫১ মিনিটে ক্রেসপোর কর্নার থেকে জিকসন সিংয়ের হেড গোলে যেতেই ৪-০-তে এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। এর পর আর কোনও গোল করতে পারেনি লাল-হলুদ ব্রিগেড।
প্রতিপক্ষ শ্রীনিধির তরফে পুরো ম্যাচে কোনও আক্রমণই দেখা গেল না। এতদিন পর ইস্টবেঙ্গল গোলের নিচে দাঁড়িয়েও প্রমান করার সুযোগ পেলেন না দেবজিৎ মজুমদার। বরং শ্রীনিধির মান অনেকটাই রাখলেন তাদের গোলকিপার আদিল ফয়জল। ইস্টবেঙ্গলের বেশ কয়েকটি নিশ্চিত সুযোগকে গোলের মুখ থেকে ফেরালেন। না হলে ব্যবধান আরও অনেকটাই বাড়তে পারত। যা চিন্তায় রাখছে কোচ অস্কার ব্রুজোঁকে। ম্যাচের পরের সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তা স্বীকার করে নিলেন তিনি।
‘‘গোল মিস চিন্তার কারণ তো বটেই। তবুও সুপার কাপের আগে নিজেদের দেখে নেওয়ার এই মঞ্চটা খুবই ভালো। আইএফএ শিল্ডে খেলাটা দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সব বিদেশিকেও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে নেওয়া। তবে আর একজন স্ট্রাইকার দলের সঙ্গে যোগ দিলে আশা করি গোল মিসের সমস্যাটা মিটে যাবে।’’ তবে এখনই ডার্বি নিয়ে ভাবতে রাজি নন তিনি। শিল্ড ফাইনালে ডার্বি হওয়ার সম্ভাবনার কথা শুনে অস্কার বলেন, ‘‘ডার্বির আগে আরও ম্যাচ রয়েছে। কাল মোহনবাগান গোকুলামের বিরুদ্ধে খেলবে। আমরা তার পর নামধারীর বিরুদ্ধে খেলব। তার পর যদি ডার্বি হয় আমার বিশ্বাস দুই দলই তার চজন্য প্রস্তুত থাকবে।’’
ইস্টবেঙ্গল: দেবজিৎ মজুমদার, জয় গুপ্তা, লালচুংনুঙ্গা (জিকসন সিং), মারতন্ড রায়না, মহম্মদ রাকিপ, বিপিন সিং (এডমুন্ড), সল ক্রেসপো (কেভিন সিবিলে), মহম্মদ রশিদ (সৌভিক চক্রবর্তী), পিভি বিষ্ণু, মিগুয়েল ফেরেরা, হামিদ আহদাদ (ডেভিড)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার





