সুচরিতা সেন চৌধুরী: কলকাতায় আইএসএল-এর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল। শুরু হল ইস্টবেঙ্গলের সাংবাদিক সম্মেলন দিয়ে। ১৪ সেপ্টেম্বর বেঙ্গালুরুর কান্তিরাভা স্টেডিয়ামে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে ম্যাচ দিয়ে আইএসএল ২০২৪-২৫ শুরু করে দিচ্ছে ইস্টবেঙ্গল। তাঁর আগে কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত ও ডিফেন্ডার হিজাজি মেহের।
বৃহস্পতিবার দুপুরেই বেঙ্গালুরুর উদ্দেশে উড়ে গেল দল। প্রভাত লাকরা ও নিশু কুমার ছাড়া পুরো দলকেই হাতে পাচ্ছেন কুয়াদ্রাত। তার আগে প্রতিপক্ষকে নিয়ে ভাবতে নারাজ ইস্টবেঙ্গল শিবির।কুয়াদ্রাত বলছিলেন, “বেঙ্গালুরু শক্তিশালী দল, ভাল ম্যানেজার, অনেক নতুন নতুন প্লেয়ার যোগ দিয়েছে। তার ওপর ঘরের মাঠে খেলবে ওরা। কঠিন লড়াই।”
কোচের পাশে বসে থাকা ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের মূল স্তম্ভ হিজাজি মেহের আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে প্রতিপক্ষের কোনও স্ট্রাকারকেই পাত্তা দিতে নারাজ। তিনি বলেছেন, “ওদের নিয়ে আমি ভাবছি না। আমাকে আমার খেলাটা খেলতে হবে। আমি এই ম্যাচের জন্য তৈরি।।” পাশাপাশি দল যে প্রথম থেকেই জয়ের জন্য ঝাঁপাবে তাও নিশ্চিত করে দিলেন দু’জনেই। গত মরসুমের শুরুটা মোটেও ভাল যায়নি। তবে এবারটা অন্যরকম। কুয়াদ্রাত বলছেন, “অনেকদিন পর ক্লাব আবার পর পর দু’বছর একই কোচকে ধরে রেখেছে। দলও ধরে রেখেছে। দলের মধ্যে স্থায়িত্ব ধরে রাখতে প্লেয়ারদের সঙ্গে দীর্ঘ চুক্তি করছে। যা দলকে সাফল্য দেবে।”
এই প্রসঙ্গে কুয়াদ্রাতের মুখে শোনা গেল ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের নাম। তাঁর প্রশংসার পাশাপাশি নিজের সঙ্গেও তুলনা টানলেন। বলছিলেন, “মর্গ্যানের পর আমি, যাকে ক্লাব দ্বিতীয় বছর কোচ হিসেবে ধরে রেখেছে। মর্গ্যানের পর আবার সাফল্য পেয়েছে দল। সেদিক থেকে দেখতে গেলে জয়ে আমি এগিয়ে আছি।” গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গলকে দীর্ঘদিন পর সাফল্যের মুখ দেখিয়েছেন কুয়াদ্রাত, আত্মবিশ্বাস তো থাকবেই।
আইএসএল শুরুর আগে স্বাভাবিকভাবেই উঠে এসেছে আনোয়ার আলি প্রসঙ্গ। চার মাসের জন্য নির্বাসিত করা হয়েছে তাঁকে। সঙ্গে মোহনবাগানকে দিতে হবে জরিমানা। কোচ বলছেন, “আনোয়ার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার। তবে তার বাইরের বিষয়টা আমার হাতে নেই, ক্লাব অফিশিয়ালরা সেটা নিয়ে কাজ করবে। আমার হাতে যা দল আছে তা নিয়েই আমি জয়ের জন্য ঝাঁপাব। তিন পয়েন্ট ছাড়া আর কিছু ভাবছি না।” মেনে নিয়েছেন ডুরান্ড কাপের ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়েই দলকে তৈরি করেছেন। সঙ্গে এও বলেছেন, “তখন দল পুরোপুরি তৈরি ছিল না। অনেক প্লেয়ার দু’মাস খেলার বাইরে ছিল। প্রি-সিজন পুরো হয়নি। তবে এগুলো অজুহাত নয়।”
হিজাজিও জয় ছাড়া কিছুই ভাবছেন না। আত্মবিশ্বাসী এই ডিফেন্ডার এবার পাশে পাচ্ছেন হেক্টর ইউয়েস্তেকে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলছেন, “ও অভিজ্ঞ প্লেয়ার। ওর থাকা দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গত মরসুমে আইএসএল-এ সাতটা ক্লিনশিট করেছি। এবারও সেটা ধরে রাখতে হবে।” কোচ অবশ্য হিজাজির সাফল্যের জন্য ইস্টবেঙ্গলকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন। বলেন, “হিজাজি কিন্তু ইস্টবেঙ্গলে এসে তারকা হয়েছে। জাতীয়, এশিয়ান পর্যায়ে খেলেছে।” কোচের এই প্রশংসা হিজাজিকে নিজেকে উজাড় করে দিতে সাহায্য করবে।
গত মরসুমে রেফারির বিরুদ্ধে মুখ খুলে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছিল কোচ কুয়াদ্রাতকে। এবার তাই তা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তিনি। হিজাজিও কোচের পথেই হাঁটলেন। বলছিলেন, “আমি আমার খেলা খেলব, রেফারি তাঁর কাজ করবে।”
এদিকে কান্তিরাভা স্টেডিয়াম যে কুয়াদ্রাতের পুরনো ঘর সেটাও মনে করিয়ে দিলেন। বলেন, “আমি পাঁচ বছর এই স্টেডিয়ামে খেলিয়েছি। দলকে চ্যাম্পিয়ন করেছি। পর সহকারী কোচ হিসেবেও কাজ করেছি। এই মাঠ আমার পরিচিত।”
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার