অলস্পোর্ট ডেস্ক: আশা জাগিয়েও পয়েন্ট পাওয়া হল না ইস্টবেঙ্গল এফসির। তবে নতুন কোচের উপস্থিতিতে দ্বিতীয় ম্যাচে কিছুটা হলেও লড়াই করতে দেখা গেল লাল-হলুদ ব্রিগেডকে। মঙ্গলবার অ্যাওয়ে ম্যাচে ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল অস্কার ব্রুজোঁর ছেলেরা। প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠে নেমে ম্যাচের প্রথম ১০ মিনিট রীতিমতো আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলল দল। কখনও দিয়ামান্তাকস তো কখনও মাদিহ তালাল, আবার কখনও নন্ধা কুমার তো কখনও সল ক্রেসপো, ওড়িশা বক্সে রীতিমতো আলোড়ন সৃষ্টি করল। যদি সঠিক ফিনিশ করতে পারত তাহলে শুরুতেই এগিয়ে যেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু হল উল্টোটাই। পরের ১০ মিনিটে গোল করে এগিয়ে গেল ওড়িশা। এখানেও বদল দেখা গেল লাল-হলুদ শিবিরে। পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফিরল দাপটের সঙ্গে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে আবার সেই পুরনো রোগই চেপে বসল। যার ফল ১-২ গোলে হেরেই ফিরতে হচ্ছে ক্লেটনদের।
ম্যাচ শুরুর দু’মিনিটের মধ্যেই গোলের মুখ খুলে ফেলেছিল ইস্টবেঙ্গল। লালালের ফ্রি-কিক থেকে ক্রেসপোর প্রচেষ্টা গোলে গেলেও তা অফসাইডের জন্য বাতিল হয়। এর পর কখনও ক্রেসপোর শট অল্পের জন্য বাইরে গেল আবার কখনও নন্ধার নিশ্চিত গোলের সুযোগ আটকে গেল প্রতিপক্ষ গোলকিপার অমরিন্দর সিংয়ের হাতে। এদিন প্রথমার্ধে তিনি একাই রক্ষা করলেন ওড়িশা এফসির দূর্গ। ৬ মিনিটে রাকিপ থেকে পাওয়া বলে নন্ধার শট কর্নারের বিনিময়ে বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন অমরিন্দর। কর্নার থেকে উড়ে আলা বলে দিয়ামান্তাকসের শট আবারও তৎপড়তার সঙ্গে বাঁচিয়ে দেন সেই ওড়িশার শেষ রক্ষণ।
এর মধ্যেই ম্যাচে ফিরতে শুরু করে ওড়িশা। ১৮ মিনিটে রয় কৃষ্ণার নিশ্চিত গোলের সুযোগ বাঁচিয়ে দেয় আনোয়ার ও লাকরার যৌথ উদ্যোগ। ২১ মিনিটে আবারও কৃষ্ণাকে আটকাতে সক্ষম হন আনোয়ার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত গোলটা করেই ফেলেন রয় কৃষ্ণা। তিনি চিরকালই সুযোগ সন্ধানী। বক্সের মধ্যে তাঁর পায়ে বল মানেই নিশ্চিত গোল যে কোনও সময় চলে আসবে তা সব ডিফেন্ডারেরই ভাল করে জানা। আর তিনি যখন গোলের জন্য মড়িয়া হয়ে ওঠেন তখন তাঁকে আটকানো প্রায় অসম্ভব। গত কয়েক বছর ধরে একই পেসে খেলে চলেছেন তিনি।
২২ মিনিটে এগিয়ে যায় ওড়িশা এফসি। ঘরের মাঠে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়ে অনেকটাই আত্মবিশ্বাস ফিরে পায় লোবেরার ছেলেরা। এদিকে পিছিয়ে পড়ে থমকে যায়নি ইস্টবেঙ্গলও। প্রথমার্ধে বার বার আক্রমণে উঠতে থাকে দলের ফরোয়ার্ডরা। যার ফল পেনাল্টি পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ে বক্সের মধ্যে তালালের শট হাত দিয়ে আটকে প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি পাইয়ে দেন থইবা সিং। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি দিয়ামান্তাকস। ১-১ সমতায় থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বার কয়েক গুছিয়ে আক্রমণে উঠতে দেখা যায় কলকাতার দলকে। রাকিপ, বিষ্ণুদের গোলের খিদে ফিরে আসাটাও দলের জন্য সদর্থক দিক, যেটা দীর্ঘদিন হল হারিয়ে গিয়েছিল। ৬৩ মিনিটে বিষ্ণুর জায়গায় নুঙ্গাকে নামিয়ে দলের রক্ষণকে পোক্ত করার চেষ্টা করেন ব্রুজোঁ। কিন্তু হল হিতে বিপরিত। ৬৯ মিনিটে মুর্তাদা ফলের গোলে ২-১ করে ফেলে ওড়িশা।
এর পর তালালের জায়গায় ক্লেটন ও হিজাজির জায়গায় হেক্টরকে নামান কোচ। কিন্তু এর মধ্যেই জোড়া হললুদ কার্ড দেখে ৭৬ মিনিটে মাঠ চাড়তে হয় প্রভাত লাকড়াকে। ২-১ গোলে পিছিয়ে থাকা অবস্থায় ১০ জনে হয়ে যাওয়াটা দলের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। সেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানোর রাস্তা ছিল না। রাকিপকে তুলে সায়নকে নামিয়ে ফ্রেশ লেগ ব্যবহার করতে চাইলেও তা কাজে দেয়নি। এখনও সাফল্যের ভাড়ার শূন্য ইস্টবেঙ্গলের।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার