অলস্পোর্ট ডেস্ক: ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজতেই উচ্ছ্বাসের বাঁধ ভাঙল ইস্টবেঙ্গল শিবিরে। তার আগের ৯০ মিনিট ছিল টান টান উত্তেজনার। ফুটবলের উত্তেজনা এতটাই তুঙ্গে ছিল যে বার বার দুই দলের প্লেয়াররা একে অপরের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ালেন। তবে শক্ত হাতে ম্যাচ পরিচালনা করলেন রেফারিরা। শেষ মুহূর্তে ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার প্রভসুখন সিং গিল ঝামেলায় জড়ালেন প্রতিপক্ষ ফুটবলারের সঙ্গে। তবে যার শেষ ভাল তার সব ভাল। সব ব্যর্থতা, সমালোচনাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে গেল ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার ভুটানে গ্রুপের শেষ ম্যাচে নেজমেহ এফসিকে ৩-২ গোলে হারিয়ে গ্রুপের শীর্ষে থেকে পরের পর্বে জায়গা করে নিল কলকাতার দল।
এদিনের ম্যাচ ছিল দুই দলের জন্য ফাইনাল ম্যাচ। ড্র করলেও গোল পার্থক্যে ইস্টবেঙ্গলেরই পরের পর্বে চলে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জিতেই স্বপ্ন সফল করতে চেয়েছিলেন সৌভিক, দিমিত্রিরা। যার ফল ম্যাচ শুরু ৯ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। যদিও আত্মঘাতী গোলে। তবে প্রথমেই এগিয়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাস অনেকটা বাড়িয়ে নিয়েছিল দল। যার ফল ১৫ মিনিটেই ২-০ করে ফেলা। মহেশের নিচু হয়ে আসা ক্রস থেকে দলের হয়ে ব্যবধান বাড়ান দিমিত্রি দিয়ামান্তাকস। এই নিয়ে জয়ের গোলটিও এল তাঁরই পা থেকে। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচেই গোল করলেন দিমিত্রি।
প্রথমার্ধে দুই গোলে এগিয়ে গেলেও সেই ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। ১৮ মিনিটেই ব্যবধান কমায় নেজমেহ এফসি। ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে গোল করে যান ওপারে। ৪২ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে দলকে সমতায় ফেরান মনজের। বক্সের বাইরে থেকে তাঁর অসাধারণ মাপা শট নড়তে দেয়নি প্রতিপক্ষ দলের কাউকে। প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-২ গোলে।
প্রথমার্ধে সাময়িক ঝড় তুলে দু’গোলের পর যেন কিছুটা ম্যাচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। যার সুযোগ নিয়ে পর পর আক্রমণ তুলে আনে প্রতিপক্ষ দল। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে ছিল সুযোগ নষ্টের খতিয়ান আর সঙ্গে বেশি রক্ষ্মনাত্মক হতে গিয়ে বার বার বিপদের মুখে পড়তে হয়। ৭৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে দিমিত্রির ঠান্ডা মাথার ফিনিশ স্বস্তি দেয় লাল-হলুদ ব্রিগেডকে। তার পরও বাকি ছিল আরও বেশ খানিকটা সময়। সঙ্গে ছয় মিনিটের অতিরিক্ত সময়। আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায় নেজমাহ এফসি। তবে ইস্টবেঙ্গলকে এদিন একাধিক বার বাঁচান দলের শেষ রক্ষণ।
গোলের নিচে এদিন গিলের অবদান অনস্বীকার্য। গত কয়েক মাসে কম সমালোচনা শুনতে হয়নি তাঁকে। কার্লেসের সময় বাধ্য হয়েই তাঁকে বসিয়ে দেবজিতকে নামানো হয়েছিল। ব্যর্থতার যন্ত্রণা একজন পারফর্মারই বোঝে। যে কারণে এদিন শেষ বাঁশি বাজার পর গিলের প্রতিক্রিয়া ছিল লক্ষ্য করার মতো। যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না আইএসএল-এ টানা ছয় ম্যাচ হারের পর আন্তর্জাতিক পর্যায়ের এই সাফল্য এসেছে তাঁদের কাছে। অস্কার ব্রুজোঁ জমানায় এটাই হয়তো সব থেকে বড় প্রাপ্তি হয়ে থাকবে। তবে এর পিছনে বিদায় হয়ে যাওয়া কোচের ভূমিকাকে অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার