সুচরিতা সেন চৌধুরী: ইস্টবেঙ্গল এফসির জন্য আইএসএল এখন অতীত। গত রবিবার বেঙ্গালুরু এফসির সঙ্গে শেষ মুহূর্তের গোলে ম্যাচ ড্র হতেই যা সামান্য আশা ছিল তাও শেষ হয়ে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের। তবে সামনে এখনও অনেক বড় লড়াই। লড়াই আন্তর্জাতিক পর্যায়ের। আর এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে কোচ। অস্কার ব্রুজোঁর পাাখির চোখ শুধুই এএফসি। এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে এফসি আর্কাদাগের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে নামার আগে যতটা সমীহ করছেন প্রতিপক্ষকে ততটাই আত্মবিশ্বাসের সুর নিজের দল নিয়েও। আর হবে নাই বা কেন, আইএসএল ২০২৪-২৫-এর শেষের দিকে এসে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে ইস্টবেঙ্গল তাতে কোচ বলতেই পারেন, “ওরা খুব শক্তিশালী দল, তবে আমরাও পিছিয়ে নেই।” একটা ১০০ বছরের ক্লাব খেলতে নামবে মাত্র দুই বছরের ক্লাবের বিরুদ্ধে, সেখানে দাঁড়িয়ে ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন অস্কার ব্রুজোঁ।
প্রতিপক্ষ দলের কোচ অবশ্য ইস্টবেঙ্গলের টানা লিগ খেলে নিজেদের তৈরি রাখাকে এগিয়ে রাখছেন। তাঁর মতে, “ইস্টবেঙ্গল দলের মরসুম অনেকদিন আগেই শুরু হয়েছে, আমরা সবে লিগ শুরু করেছি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে ওরা খেলার মধ্যে রয়েছে। সেটা ওদের অ্যডভান্টেজ।” তবে অস্কার ব্রুজোঁ এটা মানতে নারাজ। বরং তিনি বলছেন, “এটা যেমন সুবিধে তেমন সমস্যাও। দলে ক্লান্তি, চোট-আঘাত তৈরি হয়ে যায়।” সঙ্গে অবশ্য কোনও কিছু নিয়েই অজুহাত দিতে নারাজ তিনি। সে আইএসএল-এর রেফারিং হোক বা দলের চোট থেকে কার্ড সমস্যা। আসল কথা মাঠে নেমে নিজেদের সেরাটা দেওয়ই এই মুহূর্তে সব থেকে বড় লক্ষ্য।
দেশের প্রতিনিধিত্ব করাটা এখন সব থেকে বড় মোটিভেশন ইস্টবেঙ্গলের কাছে। অস্কার ব্রুজোঁর কথায় বার বার সেটাই ঘুরে ফিরে এল। তিনি বলছিলেন, আমাদের উপর চাপ আছে। পাশাপাশি এটা আমাদের জন্য গর্বের মুহূর্তও। কারণ আমরা দেসের প্রতিনিধিত্ব করছি। দল ভাল অবস্থায় রয়েছে। আমাদের ছেলেরা যেভাবে খেলছে তাতে এই ম্যাচে ভাল ফুটবল দেখা যাবে।” এর সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন “আমাদের প্রতিপক্ষ খুবই নতুন দল। আর ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে রয়েছে ঐতিহ্য। ঐতিহাসিক ক্লাবের সঙ্গে নবাগত ক্লাবের লড়াই।’‘ যে খেলাটা আইএসএল-এ খেলছে দল সেটাই এএফসিতে খেলবে বলে জানিয়ে দিলেন কোচ।
অস্কার ব্রুজোঁ বলছিলেন, “সব দলেরই কিছু পজিটিভ দিক রয়েছে আবার কছু নেগেটিভ। আমাদের নতুন বিদেশি এসেছে, ওরা সবে লিগ শুরু করেছে। এখানে কোনও সুবিধে বা অসুবিধের বিষয় নেই। দুটো দল দুটো ভিন্ন পরিস্থিতি থেকে এসে এই ম্যাচ খেলতে নামছে।” তবে একজন কোচ হিসেবে যে তিনি এই ম্যাচ খেলার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন সেটা মুখে বলার সঙ্গে সঙ্গে তাঁর অভিব্যক্তিতেও বার বার ফুটে উঠছিল এদিন। পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন, যে খেলাটা দল খেলছে সেটাই ধরে রাখার পাশাপাশি ক্লান্তি নিয়ে ভাবতে চান না তিনি। এর সহ্গে ঘরের মাঠে প্রথম ম্যাচও দলের জন্য বাড়তি সুবিধে মেনে নিলেও সেটা নিয়ে ভাবতে নারাজ তিনি।
ব্রুজোঁ বলেন, “আমাদের প্রতিপক্ষ অনেকটাই ফিজিক্যাল গেম খেলে। ওরা খুব শক্তিশালী দল। তবে আমরা এই ম্যাচ জেতার জন্যই খেলতে নামব। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আমাদের জন্য সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এএফসি চ্যালেঞ্জার। আমাদের এখনও সেরাটা দেওয়া বাকি আছে।” বেঙ্গালুরু ম্যাচে চোট পেয়ে আপাতত মাঠের বাইরে দলের রক্ষণের অন্যতম ভরসা আনোয়ার আলি। বাকি দল প্রস্তুত এএফসি ম্যাচে খেলার জন্য। দলের অধিনাক সল ক্রেসপো আনোয়াের গুরুত্ব মেনে নিয়েও বুঝিয়েদিচ্ছেন কেউই অপরিহার্য নয়।
ক্রেসপো বলে, “আনোয়ার এই ম্যাচ খেলতে পারবে না। ও দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ার তবে আমাদের দলে আরও ২৫ জন প্লেয়ার আছে যারা খেলতে প্রস্তুত। আমরা এই ম্যাচে নিজেদের সবটা উজাড় করে দেব সেমিফাইনালের রাস্তা খুলতে।” আত্মবিশ্বাসী অধিনায়ক ভূটানের উদাহম টেনে এনে বলেন, “আপনাদের নিশ্চি ভূটানের এএফসি পর্ব মনে আছে, যেখানে আমরা প্রায় সব তৈরি হওয়া সুযোগ থেকে গোল তুলে নিয়েছিলাম। ড্রেসিংরুম খুব ভাল করে জানে এই ম্যাচ আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ দেশের ফুটবলে জন্য।”
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার