সুচরিতা সেন চৌধুরী: সাত ম্যাচ পর জয়ে ফিরেই পর পর দুই ম্যাচে জিতে ঘরের মাঠে তৃতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে ইস্টবেঙ্গল এফসি। প্রতিপক্ষ যখন ওড়িশা এফসি তখন লড়াইটা আরও কঠিন। ইস্টবেঙ্গলের দায়িত্ব নিয়ে শুরুর দিকেই ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে হারের মুখ দেখতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। তার পর অনেকগুলো ম্যাচ হয়ে গিয়েছে। পর পর ধাক্কা খাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে দল। তাই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কোচ অস্কার ব্রুজোঁ বলছেন, “আগামীকাল আমরা নতুন চ্যাপটার শুরু করব। ওড়িশার বিরুদ্ধে আমার ইস্টবেঙ্গলে শুরুর দ্বিতীয় ম্যাচে খেলতে নেমেছিলাম।” এদিকে ওড়িশার বিরুদ্ধে যখন জয়ের হ্যাটট্রিকের লক্ষ্যে নামবে ইস্টবেঙ্গল তখন অন্য সমস্যায় দল।
পর পর জয়ের পর যখন আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকার কথা তখন চোট সমস্যায় জেরবার পুরো দল। কোচ মেনে নিলেন, প্রথম একাদশের প্রায় পাঁচ জনকে পাচ্ছেন না তিনি। তার মধ্যে অন্যতম দুই গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি সল ক্রেসপো ও দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকোস। একজন মাঝ মাঠের ভরসা আবার একজন গোলের কারিগর। সেদিক থেকে দেখতে গেলে এই দু’জনের না থাকা দলের জন্য সব থেকে বড় ধাক্কা। বাকিদের মধ্যে নন্ধা কুমার, প্রভাত লাকরা, নিশু কুমারদের নিয়েও সংশয় রয়েছে। এদিন হেক্টর ইউয়েস্তে অনুশীলনে থাকায় কোচের জন্য কিছুটা স্বস্তি। তবে পরের দিকে পরিবর্ত হিসেবে নামতে পারেন তিনি। প্রথম দলে একাধিক পরিবর্তন তো হবেই, সঙ্গে ফর্মেশনও বদলাবে নিশ্চিত কিন্তু প্রতিপক্ষ ও খেলার পরিস্থিতির পর নির্ভর করে।
ব্রুজোঁ বলছিলেন, ”ফর্মেশন সব সময়ই পরিবর্তনশীল। পুরোটাই নির্ভর করে পরিস্থিতি ও প্রতিপক্ষের উপর। তবে আমি প্রায় পাঁচজনকে পাচ্ছি না। তবে আমাদের সব পরিস্থিতির জন্যই পরিকল্পনা আছে।” কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে বিশেষ ওড়িশার বিশেষ কিছু প্লেয়ারকে নিয়েও যে আলাদা করে ভাবতে হয় সেটাও মেনে নিলেও বাড়তি গুরুত্ব দিতে নারাজ কোচ। বলছিলেন, “ওদের দলে এই লিগের বেশ কিছু সেরা প্লেয়াররা রয়েছেন। তবে আমরা জানি কীভাবে সামলাতে হবে। আমরা আমাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলব।”
নর্থইস্ট ম্যাচের উদাহরণ টেনে অস্কার বলেন, “নর্থইস্টের সঙ্গে যেমনটা হয়েছিল। ওদের দলে বেশ কিছু ভাল স্কোরার ছিল। কিন্তু এখানে এসে ওরা গোল কতে পারেনি।” এক কথায় বলতে চাইলেন, ওড়িশাও ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তাদের ঘরের মাঠে গোল করতে পাারবে না, এমনটাই আত্মবিশ্বাসী শোনাল অস্কারের গলা। একে তো ঘরের মাঠ তার উপর অনেকদিন পর জয়ে ফেরা, মুখিয়ে রয়েছে পুরো দল। আর দল জিততে থাকলে সমর্থকরাও জেগে ওঠে। আর এই বিশ্বাসেই ভরা গ্যালারির দিকে তাাকিয়ে ইস্টবেঙ্গল কোচ। আর ঘরের মাঠে ঘরের ছেলেদের প্রমাণ করার আহ্বানও জানিয়ে রাখলেন তিনি।
বলছিলেন, “আমরা ঘরের মাটে ফিরতে পেরে উত্তেজিত। আমার বিশ্বাস সমর্থকরা স্টেডিয়ামে আসবে আমাদের সমর্থন করতে কারণ আমরা ভাল ফল করছি। গ্যালারি থেকে পজিটিভ চিৎকার শুনতে পাব কাল। আর সেটা পুরো দলের জন্য বাড়তি পাওনা। গ্যালারি আমাদের জন্য হুঙ্কার তুলবে। ঘরের মাঠে নামার আগে আমরা মানসিকভাবে পজিটিভ রযেছিল।” জয়ের হ্যাটট্রিক করে বছরের শেষটা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শেষ করতে চাইছেন কোচ। তবে এই ম্যাচে দুই কোচের যে মস্তিষ্কের লড়াই অনেকটা জায়গা দখল করে থাকবে তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। সে কথা মেনেও নিলেন কোচ। বলেন, “এই ম্যাচে কোচেদের ট্যাকটিক্যাল মুভ দেখা যাবে।”
আইএসএল ২০২৪-২৫-এর প্রথম লেগের ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলকে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়েছিল ওড়িশা এফসি। তবে সেই ইস্টবেঙ্গল আর এই ইস্টবেঙ্গল আলাদা, মেনে নিচ্ছেন ওড়িশা কোচ সার্জিও লোবেরা। যুভারতীতে ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলা নিয়ে তিনি বলেন, “বাংলায় খেলাটা সব সময়ই স্পেশাল। আমার লক্ষ্য জিতে আমাদের সমর্থকদের মুখে হাসি নিয়ে আসা। আমরা তিন পয়েন্টের লক্ষ্যেই নামব।” এর সঙ্গে তিনি জুড়ে দেন, “ইস্টবেঙ্গল এখন লিগ টেবলের যেখানে রয়েছে সেখানে থাকার কথা নয়। এএফসিতে সাফল্যের পর ওরা ঘুরে দাঁড়িয়েছে।ওরা খুব শক্তিশালী এবং মুখিয়ে রয়েছে। এবং এটা যে কঠিন ম্যাচ হবে তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই।”
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার