সুচরিতা সেন চৌধুরী: অনেকদিন পর আবার আন্তর্জাতিক মঞ্চে ইস্টবেঙ্গল এফসি। গত বছর থেকে যে মানুষটা লাল-হলুদ জনতাকে স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন, সেই কার্লেস কুয়াদ্রাত এসিএল-২ কোয়ালিফায়ারের মঞ্চে নামার আগেই দলকে তাতিয়ে দিয়েছিলেন। বলেই দিয়েছিলেন, “কঠিন ম্যাচ, তবে আমরা তৈরি। পুরো দল নিজেদের সেরাাটা দেবে।” যার প্রতিফলন দেখা গেল ম্যাচের শুরুতেই। অলটিন এসারের মতো দলের বিরুদ্ধে শুরুতেই গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পর আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই ম্যাচটা খেলল দল কিন্তু প্রথমার্ধেই দুই গোল হজম করে পিছিয়েও পড়ল। দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান কমল ঠিকই কিন্তু জয় এল না। এদিন দলকে সমর্থন করতে গ্যালারি ভরিয়েছিলেন প্রায় হাজার ৪০ দর্শক। ফলাফল হতাশ করলেও ইস্টবেঙ্গলের খেলা কিন্তু মরসুমের শুরুতে আত্মবিশ্বাস দেবে দলকে।
ম্যাচ শুরুর তিন মিনিটের মধ্যেই প্রতিপক্ষের গোলের সামনে রীতিমতো আতঙ্ক তৈরি করে ফেলেছিল ইস্টবেঙ্গল। সেই গোল না হলেও গোলের মুখ খুলতে বেশি সময় নেয়নি লাল-হলুদ ব্রিগেড। ম্যাচের বয়স তখন ছয় মিনিট। ডানদিক থেকে বল নিয়ে উঠে গিয়েছিলেন নন্ধা কুমার। প্রাথমিকভাব প্রতিপক্ষ রক্ষণ তাঁকে আটকে দিলেও সেই রক্ষণের ফাঁক গলেই মাপা সেন্টার করেন তিনি। ডেভিডের হেড গোলকিপারের হাতে লেগে পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ফিরতি বলে সেইই ডেভিডের শট আর আটকাতে পারেনি ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ গোলকিপার। শুরুতেই এগিয়ে যাায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু প্রথমার্ধে সেই ব্যবধান ধরে রাখতে ব্যর্থ কুয়াদ্রাতের ছেলেরা।
১২ মিনিটে রহমানের শট দারুণভাবে সেভ করার পর ১৮ মিনিটে মায়রাত আনায়াভের গোল গোলের নিচে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। মাঝমাঠ থেকে আসা একটা অসাধারণ থ্রু বল দাঁড়িয়ে দেখল ইস্টবেঙ্গল রক্ষণ। সমতায় ফিরল অলটিন এসার। গোল খেয়ে কিছুটা থমকে গেল ইস্টবেঙ্গল। যার ফল প্রথমার্ধেই ২-১ গোলে এগিয়ে গেল অলটিন এসার। ২৮ মিনিটে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে সরাসরি ফ্রি কিকে যে গোলটি করলেন নুরমুরাদভ সেলিম তার প্রশংসা করতেই হচ্ছে। ফাইল করে ফ্রি-কিকটি পাইয়ে দিয়েছিলেন সৌভিক চক্রবর্তী। হলুদ কার্ডও দেখেন তিনি।
প্রথমার্ধ শেষ হয় ২-১ গোলেই। দ্বিতীয়ার্ধে আরও এক গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় অলটিনের মিহালি তিতোভ। তিন গোল হজম করে ঘুরে দাঁড়ানোর একটা মরিয়া চেষ্টা করেছিল ইস্টবেঙ্গল। যার ফল ৫৯ মিনিটে দলের হয়ে ব্যবধান কমান সল ক্রেসপো। প্রতিপক্ষের চার ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে ক্রেসপোর দৃষ্টিনন্দন গোল ইস্টবেঙ্গলের এবারের দলের শক্তির প্রাথমিক প্রতিফলন হতেই পারে। এর পরও গোলের সুযোগ তৈরি হল। প্রতিপক্ষের ক্লিয়ার করা বল ক্রসবারে লেগে না ফিরলে একটা গোল পেতে পারত ইস্টবেঙ্গল।
৮০ মিনিটে ক্লেটন সিলভার গোল বাতিল না হলেও সমতায় ফিরতে পারত লাল-হলুদ ব্রিগেড। নুঙ্গার থ্রো থেকে হিজাজির হেড বাঁচিয়ে দিয়েছিলেন অলটিন গোলকিপার। তাঁর হাতে ধরে রাখা বলেই শট নেন ক্লেটন এবং সেই বল চলে যায় গোলে। তবে গোল দেননি রেফারি। আর এখানেই শেষ হয়ে যায় খেলা। ২-৩ গোলে হেরে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ-২-র মূল পর্বে যাওয়া হল না। এবার কুয়াদ্রাতের দল খেলবে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে।
ইস্টবেঙ্গল: প্রভসুখন গিল, লালচুংনুঙ্গা, হিজাজি মেহের, জোথানপুঁইয়া মার্ক (বিষ্ণু), মহম্মদ রাকিপ (জিকসন সিং), সল ক্রেসপো, মাদিহ তালাল, সৌভিক চক্রবর্তী (অমন চামা), মহেশ সিং (দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস), নন্ধা কুমার, ডেভিড (ক্লেটন সিলভা)।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার