অলস্পোর্ট ডেস্ক: গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লালচুংনুঙ্গার জোড়া হলুদ কার্ড দেখে বেরিয়ে যাওয়া চূড়ান্ত দায়িত্ব জ্ঞ্যানহীনতার পরিচয় ছাড়া আর কিছুই নয়। যখন তাঁর দল প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠে জিতছে। তুর্কমেনিস্তানের এফসি আর্কাদাগের বিরুদ্ধে এএফসি চ্যালেঞ্জার লিগ পর্বের ফিরতে লেগে খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল এফসি। প্রথম লেগের ম্যাচ ঘরের মাঠে এই আর্কাদাগের বিরুদ্ধে ০-১ গোলে হেরে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ফিরতি লেগের ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানে আর্কাদাগের ঘরের মাঠে বুধবার খেলতে নেমেছিল ভারতের দল ইস্টবেঙ্গল। সেমিফাইনালে যেতে হলে এই ম্যাচ ২-০ গোলে জিততে হবে ইস্টবেঙ্গলকে, এই অবস্থায় খেলতে নেমে ম্যাচ শুরুর এক মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু তা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে ব্যর্থ অস্কারের ছেলেরা। প্রথম লেগে ০-১ হারের পর দ্বিতীয় লেগে ১-২ গোলে হারের সৌজন্যে ১-৩ হেরে আর সেমিফাইনালে যাওয়া হল না ইস্টবেঙ্গল।
তখনও গুছিয়ে বসতে পারেনি গ্যালারি। গুছিয়ে খেলাও শুরু করতে পারেনি দুই দল। তার মধ্যেই ফ্রিকিক পেয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ইস্টবেঙ্গলের অর্ধ থেকেই উড়ে আসা ফ্রিকিক হেড করে নামিয়ে দিয়ামান্তাকোসকে দিয়েছিলেন মেসি বৌলি। দিয়ামান্তাকোসের গোলমুখি শট প্রতিপক্ষের রক্ষণে ধাক্কা খেয়ে চলে আসে আবার মেসির কাছেই। সেই চলতি বলেই তাঁর হালকা টোকা চলে গোলে। শুরুতেই এগিয়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই খেলতে শুরু করে ইস্টবেঙ্গল।
১১ মিনিটে ম্যাচের প্রথম হলুদ কার্ডটি দেখে ফেলেন ইস্টবেঙ্গলের লালচুংনুঙ্গা। এর মধ্যেই ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণও চলছিল। প্রতিপক্ষ আর্কাদাগ তেমনভাবে আক্রমণে উঠতে পারেনি প্রথমার্ধে। বরং তারা প্রথম লেগেও দেখা গিয়েছিল এবং ঘরের মাঠেও দেখা গেল অনেকবেশি রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলতে অভ্যস্ত। যে কারণে প্রথম লেগে শুরুতেই গোল হজম করে আর গোলের মুখ খুলতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। তার মধ্যেই ১৭ মিনিটে নিশ্চিত গোলের সুযোগ নষ্ট করেন সেলিস।
মাঝ মাঠ বরাবর বল নিয়ে দৌঁড় শুরু করেছিলেন দিয়ামান্তাকোস। তাঁর গোলমুখি শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। সেই বল পেয়ে যায় সেলিস। সেখান থেকে গোলে বল না রাখাটাই অপরাধ। তিনি সেই অপরাধটাই করে বসলেন। না হলে প্রথমার্ধেই ২-০ করে ফেলতে পারত ইস্টবেঙ্গল। প্রথমার্ধের মাঝামাঝি সময়ে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় আর্কাদাগ। বক্সের মধ্যে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণ আটকাতে বেশ বেগ পেতে হয় আর্কাদাগ রক্ষণকে। ৩৩ মিনিটে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় লাল চুংনুঙ্গাকে। প্রথমার্ধেই ১০ জনে হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল।
১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমেছিল ইস্টবেঙ্গল। দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনের ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে খেলায় ফেরার চেষ্টা শুরু করে আর্কাদাগ। সঙ্গে বারে বল পজেশনও। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা রক্ষণাত্মক হয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। তার মধ্যেই সেলিসকে তুলে পিভি পবিষ্ণুকে নামার কোচ অস্কার ব্রুজোঁ।
১০ জনে এতটা সময় লড়াই করার পর সবটাই ভেস্তে যায় প্রতিপক্ষকে পেনাল্টি পাইয়ে দেওয়ার সঙ্গেই। বল নিয়ে বক্সের ঢোকার সময় তির্কিশভকে প্রথমে আটকানোর চেষ্টা করেন মেসি বৌলি। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হন। বল নিয়ে বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েন তিনি। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ফাউল করে বসেন সৌভিক চক্রবর্তী। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি আনাদুরিয়েভ। ৮৮ মিনিটে আর্কাদাগ সমতায় ফেরার সঙ্গেই ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্যে নেমে আসে হতাশার ছায়া। কারণ এই পরিস্থিতিতে গোল করে শেষ মুহূর্তে এগিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল ১০ জনের ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে। তার মধ্যেই অতিরিক্ত সময়ে আরও একটা গোল হজম করে বসল ইস্টবেঙ্গল। আশা জাগিয়েও একরাশ হতাশা নিয়েই ফিরছে ইস্টবেঙ্গল।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার