অলস্পোর্ট ডেস্ক: মরসুম শুরুর অনেকদিন আগে থেকেই অনুশীলন শুরু করে দিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল এফসি। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের পছন্দ মেনেই দল গড়ার চেষ্টা করেছিল ক্লাব কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সাফল্য এখনও অনেক দূরে লাল-হলুদ ব্রিগেডের। গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের স্বপ্নের ফেরিওয়ালা হয়ে এসেছিলেন কোচ কুয়াদ্রাত। তাই এই মরসুমেও তাঁকে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ক্লাব। যা ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের পর আর দেখা যায়নি। তা এই মরসুমে একাধিকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন এই কোচ। সঙ্গে তাঁর ভিতরে একটা লুকনো গর্ব বার বার বেরিয়ে এসেছে। কিন্তু সাফল্য কোথায়?
ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ছিটকে যেতে হয়েছিল লাজং এফসির কাছে হেরে। এএফসির প্রথম ম্যাচেই হারের মুখ দেখতে হয়। এবার আইএসএ। দুই ম্যাচের দুটোতেই হার। প্রথমে বেঙ্গালুরু এফসির কাছে ১-০ গোলে হারতে হয় ইস্টবেঙ্গলকে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে কেরালা ব্লাস্টার্সের মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। লক্ষ্য ছিল জয় নিয়েই ফিরবে দল। কিন্তু তেমনটা হল না। আসা জাগিয়েও হেরেই ফিরতে হচ্ছে। ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়েও ১-২ গোলে হারতে হল কুয়াদ্রাতের দলকে। সুযোগ তৈরি করল অনেক কিন্তু তা গোলে পরিণত হল না। ফিনিশারের অভাবের পাশাপাশি ভয়ঙ্কর খারাপ রক্ষণ থেকে মাঝমাঠ, এদিন সবই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, দ্রুত শুধরে না নিলে ভুগতে হবে।
এদিন ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে অভিষেক হল আনোয়ার আলির। গোলের নিচেও তথৈবচ গিল। প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয়েছিল গোলশূন্যভাবেই। তবে এগিয়ে যাওয়ার অনেক সুযোগ পেয়েছিল দল। কখনও নন্ধাকুমার, কখনও মহেশ আবার কখনও দিয়ামান্তাকোস বা মাদিহ তালাল, গোলের সুযোগ নষ্ট করলেন। যখন ইস্টবেঙ্গল গোলের নিচে রীতিমতো আত্মবিশ্বাসের অভাবে ভুগলেন প্রভসুখন গিল তখন কেরালা গোলের নিচে দুরন্ত ছন্দে পাওয়া গেল সচিন সুরেশকে। ইস্টবেঙ্গলের নিশ্চিত গোলের সুযোগ আটকে গেল তাঁরই হাতে।
শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচে প্রথম গোলের মুখ খুলল ইস্টবেঙ্গলই তাদের সুপার সাবের মাধ্যমে। মহেশের পরিবর্ত হিসেবে নেমেই ৫৯ মিনিটে প্রথম টাচেই গোল করে গেলেন পিভি বিষ্ণু। নিজের ঘরের মাঠেই হোম টিমের বিরুদ্ধে গোল করলেন তিনি ইস্টবেঙ্গলের হয়ে। মাঝমাঠ থেকে দিয়ামান্তাকোসকে লক্ষ্য করে বল বাড়িয়েছিলেন নন্ধাকুমার। সেই বল ধরে দিয়ামান্তাকোস উঠে গিয়েছিলেন বক্সের মধ্যে। কিন্তু ততক্ষণে তাঁকে ঘিরে ফেলেছে কেরালা ডিফেন্ডাররা। সেই সুযোগে ডানদিক দিয়ে উঠে আসা বিষ্ণুকে লক্ষ্য করে ছোট্ট টোকায় বল বাড়িয়ে দেন দিয়ামান্তাকোস। গোল করতে ভুল করেননি কুয়াদ্রাতের সুপার সাব।
গোল হজম করে রীতিমতো মুখিয়ে ওঠে কেরালা ব্লাস্টার্স। দলকে সমর্থন করতে এদিন গ্যালারি ভরিয়েছিলেন কেরলের সমর্থকরা। ছিলেন বেশ কিছু ইস্টবেঙ্গল সমর্থকও। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের উৎসব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ৬৩ মিনিটেই অসাধারণ গোল করে কেরালাকে সমতায় ফেরান নোয়া সাদাউই। ইস্টবেঙ্গল রক্ষণকে রীতিমতো খেলাতে খেলাতে গোল করে যান তিনি। তাঁর সামনে থাকা মহম্মদ রাকিপের সামনে কোনও রাস্তা ছিল না নোয়াকে আটকানোর। সমতায় ফিরে খেলায় দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় কেরালা। শেষটা সেই ইস্টবেঙ্গল রক্ষণের ভুলেই হারের খাতায় আরও একটা হার লেখা হয়ে গেল। ৮৮ মিনিটে সুপার সাব কোয়ামে পেপরাহ গোল করে জয় নিশ্চিত করলেন হোম টিমের।
এর পর ঘরের মাঠে নামবে ইস্টবেঙ্গল। এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে ২৭ সেপ্টেম্বর কুয়াদ্রাতের সামনে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকছে।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার