Thursday, December 5, 2024
No menu items!
Google search engine
Homeআইএসএলওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই ইস্টবেঙ্গলের সামনে

ওড়িশা এফসির বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই ইস্টবেঙ্গলের সামনে

অলস্পোর্ট ডেস্ক: টানা পাঁচটি হারের পর চলতি ইন্ডিয়ান সুপার লিগে এ বার ওড়িশা এফসি-র মুখোমুখি ইস্টবেঙ্গল এফসি। নতুন কোচ অস্কার ব্রুজোনের প্রশিক্ষণে এই প্রথম মাঠে নামবে তারা। গত ম্যাচের দিনই ভোরে কলকাতায় এসে পৌঁছন তিনি এবং সে দিন বিকেলে দলের ম্যাচ দেখতে স্টেডিয়ামেও চলে আসেন তিনি। তার পর দু’দিন অনুশীলনও করেছে। এত কম সময়ে দলের মধ্যে আমূল পরিবর্তন আনা যে সম্ভব নয়, তা তিনি খুব ভাল করেই জানেন। তাই কৌশলে এক এক করে দলের সমস্যাগুলির যথাসম্ভব দ্রুত সমাধান করা শুরু করেছেন তিনি।

এ জন্য সময়ও চাইছেন লাল-হলুদ বিভাগের নতুন কোচ। নতুন চ্যালেঞ্জ যে বেশ কঠিন, তা বুঝেই নিয়েছেন ব্রুজোন। তবে তাঁর বাস্তব লক্ষ্য যে সেরা ছয়ে থাকা, তাও জানিয়ে দিতে ভোলেননি। মঙ্গলবারের ম্যাচ খেলতে ভুবনেশ্বর উড়ে যাওয়ার আগে সোমবার সকালে অনুশীলনের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অস্কার বলেন, এ পর্যন্ত আমি মাত্র দু’বার দল নিয়ে অনুশীলনে নামতে পেরেছি। তাও গতকাল সেইসব খেলোয়াড়দের নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম, যারা ডার্বিতে খেলেনি। আজই প্রথম সবাইকে নিয়ে অনুশীলন করলাম। সবাইকে বুঝিয়েছি, দল এখন তাদের কাছে কী চায়। ওরা ধীরে ধীরে তা বুঝতেও পারছে বলে মনে হচ্ছে।

কী কী করণীয় তাঁদের এখন, তার তালিকা দিয়ে অস্কার বলেন, “আমাদের আরও চাপ নিতে ও পাল্টা চাপ দিতে হবে। খেলায় আরও তীব্রতা বাড়াতে হবে। আরও সঙ্ঘবদ্ধ ফুটবল খেলতে হবে। রক্ষণে ট্রানজিশনের গতি আরও বাড়াতে হবে। নিজেদের মধ্যে ব্যবধান আরও কমাতে হবে। এর আগের ম্যাচগুলোতে প্রতিপক্ষ মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আমাদের সমস্যায় ফেলেছে, উইং দিয়ে আক্রমণ করে আমাদের রক্ষণে ফাটল ধরিয়েছে। এ বার আর তা হতে দেওয়া যাবে না। এ বার আমরা সফল হতে চাই। তবে তা কোচের পরিকল্পনার জন্য নয়, খেলোয়াড়দের দক্ষতার জন্য। তাদের বুঝতে হবে, এ ছাড়া তাদের আর কোনও রাস্তা নেই। আমাদের ইতিবাচক ফল পাওয়ার প্রবণতা থাকা দরকার”।

মঙ্গলবার তাদের সামনে ওড়িশা এফসি, যারা গত চারটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটিতে জয় পেয়েছে। দু’টি হার ও একটি ড্র নিয়ে তারা এখন লিগ টেবলের নীচের দিকে রয়েছে। গত বছর বসুন্ধরা কিংসের কোচ হিসেবে ওড়িশার বিরুদ্ধে দু’টি ম্যাচে দল নামিয়েছিলেন অস্কার। সেই অভিজ্ঞতা থেকে প্রতিপক্ষ সম্পর্কে বলেন, “গত বছর ঘরের মাঠে আমরা জিতি ও ওদের মাঠে একটা সেটপিস গোলের জন্য হেরে যাই। তাই ওদের শক্তি-দুর্বলতা কিছুটা হলেও জানি আমি। তখন ওদের নিয়ে চর্চা করেছিলাম, এবারেও করেছি। ওরা যথেষ্ট শক্তিশালী দল। ওদের বিদেশীরা উইং দিয়ে দ্রুত আক্রমণে ওঠে। গত ম্যাচেও এই ব্যাপারটা দেখেছি। তবে আমরা আমাদের মানসিকতা বদলে ভাল লড়াই করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। এ পর্যন্ত একটা ম্যাচও জিততে পারিনি আমরা। এ বার হয়তো জেতার মতো খেলতে পারব”।

হাতে সময় কম। তাই আগে গোল খাওয়াটা বন্ধ করতে চান অস্কার। গুরুত্বের দিক থেকে আক্রমণের সমস্যা সমাধানকে তার পরে রাখছেন বলে জানান তিনি। বলেন, “গত কয়েকটা ম্যাচের পরিসংখ্যান ঘাঁটলে দেখতে পাবেন ইস্টবেঙ্গল প্রতিপক্ষের চেয়ে বেশি সুযোগ তৈরি করতে পেরেছে। কিন্তু গোল পাচ্ছে না। এই জায়গাটায় আমাদের শোধরাতে হবে। প্রতিপক্ষের গোলের সামনে আমাদের আরও তৎপর হতে হবে। এটা হয়তো এখনই পুরোপুরি আনা যাবে না। তবে রক্ষণে তৎপরতা ও মনসংযোগ বাড়িয়ে গোল খাওয়াটা আগে কমাতে হবে আমাদের। সে রকম ভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছি”।

সোমবার প্রথম পুরো অনুশীলন করে খুশি ইস্টবেঙ্গলের নতুন স্প্যানিশ কোচ বলেন, “একদিন অনুশীলন হলেও যথেষ্ট ভাল অনুশীলন হয়েছে। মনে হচ্ছে, খেলোয়াড়রা বুঝতে পেরেছে ওদের কী করতে হবে। তবে সত্যি বলতে, এটা একটা প্রক্রিয়া, যা সফল হতে সময় লাগবে। কিন্তু ক্লাবের এখন যা অবস্থা, তাতে আমাদের হাতে বেশি সময় নেই। দ্রুত জয়ের রাস্তায় ফিরতে গেলে ও সেরা ছয়ে থেকে লিগ শেষ করতে গেলে আমাদের পরপর কয়েকটা ম্যাচ জিততে হবে। সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছি না। আমরা যদি প্রত্যয়ী হই, আমরা যদি সেই আত্মবিশ্বাস ও আস্থা বজায় রাখতে পারি, তা হলে ক্লাব যা চায়, সেই ফল এনে দিতে পারি”।

লাল-হলুদ বাহিনীর খেলোয়াড়দের মানসিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, যা নিয়ে তাদের কোচ বলেন, “টানা সাতটি ম্যাচে হারার পরে ফুটবলাররা শান্তিতে থাকতে পারে না। এটাই স্বাভাবিক। তাই দলের কেউ মানসিক ভাবে ভাল আছে বলে আমারও মনে হয় না, এই অবস্থায় তাদের ভাল থাকতে দিতে পারবও না। ওদের মানসিক সমস্যা দূর করতে হবে। প্রত্যয়, ইচ্ছা, মানসিকতা, খিদে এগুলো বাড়াতে হবে”।

ফিটনেস নিয়েও উঠছে প্রশ্ন। এই নিয়ে ব্যাখ্যা দেন অস্কার। বলেন, “অনেক কাজ করতে হবে আমাদের। খেলায় তীব্রতা বাড়ানোর জন্য ফিটনেস খুবই দরকার। কিন্তু ফিটনেস বাড়াতে গিয়ে যদি খেলোয়াড়দের অতযাধিক পরিশ্রম করাতে শুরু করি, তা হলে আসল উদ্দেশ্যটাই সফল হবে না। সেক্ষেত্রে খুব মেপে ফিটনেস বাড়ানোর কাজ করতে হবে যাতে, যাতে প্রতি ম্যাচে প্রতিপক্ষ শারীরিক সুবিধাটা না নিতে পারে। মোহনবাগান-ম্যাচে এটাই হয়েছে। আমি চাই না, কিছুক্ষণ তীব্র ফুটবল খেলার পরেই দলের ছেলেরা ক্লান্ত হয়ে পড়ুক। তাদের পুরো ম্যাচ সমান গতিতে ও ছন্দে খেলতে হবে। সে ভাবেই তৈরি করতে হবে ওদের”।

আপাতত শুধু সামনের দিকে তাকাতে চান তিনি। এই কথা জানিয়ে লাল-হলুদ কোচ সাফ বলেন, “এখন আমি আর পিছন ফিরে তাকাতে চাই না। গত সাতটি ম্যাচে হার নিয়ে, দলের সমস্যা নিয়ে আর ভাবতে বা কথা বলতে চাই না। ওডিশা ম্যাচটা আমাদের কাছে একটা ফাইনালের মতো। এই ম্যাচে আমাদের বড় পরীক্ষা। কালকের ম্যাচের পর আমাদের সামনে রয়েছে এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপ, যেখানে আমরা দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাব। তাই আগামী ১১ দিন শুধু ইতিবাচক ভাবনা ভাবতে চাই, কোনও নেচিবাচক দিক নিয়ে ভাবতে চাই না। এখন শুধু সমাধান নিয়ে ভাবছি। সব সমস্যারই সমাধান আছে। আশা করি, কাল তার কিছুটা বুঝতে পারবেন”।

(লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments