সুচরিতা সেন সৌধুরী: কলকাতা ফুটবল মানে তো আবেগ। ছোটবেলা থেকে সেটাই সবাই দেখে এসেছে। দলের হারে কান্না, জয়ে উৎসবে মাততে দেখা গিয়েছে সমর্থক থেকে ফুটবলার, কোচ সবাইকেই। আসলে আবেগেই বেঁচে থাকে কলকাতার ফুটবল, এই দুই দলের ফুটবল। আর সেই বিশেষ আবেগ অনেকবেশি করে রয়েছে বাঙালি ছেলেদের মধ্যে। কোথায় সেই বাঙালি ছেলে? এই প্রশ্ন তুলে দিয়ে গেলেন কেরালা ব্লাস্টার্সের প্রবীর দাস ।
সত্যিই প্রশ্নটা তুলে দিলেন তিনি। এক সময় সাফল্যের সঙ্গে খেলেছেন, এটিকে ও এটিকে মোহনবাগানে। এই মরসুমে তিনি যোগ দিয়েছেন কেরালা ব্লাস্টার্সে। বাংলা, গোয়ার পর যদি কোনও রাজ্যে ফুটবল নিয়ে মাতামাতি থাকে সেটা হল কেরালা। যারা এখন ফুটবল প্রেমে হয়তো ছাঁপিয়ে গিয়েছে আগের দুই রাজ্যকেও। সেই রাজ্যের দলে যোগ দিয়ে অনেক কিছু বুঝেছেন প্রবীর। তাই হয়তো মোহনবাগানকে হারিয়ে মাঠ ছাড়ার সময় নিজের দলের জন্য আনন্দ হলেও প্রাক্তন দলের পরিস্থিতি দেখে খারাপ লাগছে তাঁর।
প্রবীর বলছিলেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান তো শুধু দল নয়, এই নাম দুটো হল আবেগ। সেই আবেগটা কোথায়? আসলে আবেগ আছে কেউ খুঁজে পাচ্ছে না। তাঁরা কী চায় জানতে হবে। ড্রেসিংরুমে সেটা শেয়ার করতে হবে। আমি যখন ছিলাম আমি সেটা করতাম। এই ফ্যানদের যে কী আবেগ সেটা বুঝতে হবে। যারা বাবা-মা মারা যাওয়ার পর সাদা থান পরেও মাঠে চলে আসে, সেই আবেগকে বুঝতে হবে।’’ মেনে নিলেন এই দলে শুভাশিস ছাড়া তো আর কেউ নেই।
সত্যি কথাই বলেছেন প্রবীর। আইএসএল ২০২৩-২৪-এ বছরের শেষ ম্যাচ খেলতে নেমেছিল মোহনবাগান ও কেরল। সেই ম্যাচের টিম লিস্ট দেখলে বোঝা যাবে কোথায় পিছিয়ে পড়ছে বাংলার দলগুলো। বাংলার দল হয়ে যেখানে মোহনবাগানে প্রথম ১১ ও রিজার্ভ বেঞ্চ মিলে মাত্র একটা বাঙালি সেখানে কেরালা ব্লাস্টার্সেই প্রথম ১১ ও রিজার্ভ বেঞ্চ মিলে রয়েছে তিনজন বাঙালি। মোহনবাগানে শুভাশিস বসু একা। আর কেরলে প্রীতম কোটাল খেললেন প্রথম ১১-তে। পরিবর্ত হিসেবে নামলেন প্রবীর দাস আর সৌরভ মণ্ডল। সেখানে কেরালার দলে কম করে পাঁচজন কেরালার ফুটবলার রয়েছেন।
প্রবীর বলছিলেন, ‘‘আমি যখন কেরালা ব্লাস্টার্সে যোগ দিয়েছিলাম তখন আমাদের ড্রেসিংরুমে বলা হয়েছিল সবাই কী চায়, ক্লাবের আবেগ, কাহিনী—সবটা আমরা জেনে খেলতে নেমেছি। এই দলে কম করে পাঁচ, ছয় জন কেরালার প্লেয়ার রয়েছে। আজকে তিন জন খেলল। রাহুল (প্রভীন), (মহম্মদ) আইমেন, (মহম্মদ) আজহার— বাচ্চা ছেলে সব, প্রথম দলে খেলল।’’ স্থানীয়দের হয়ে জোড়াল দাবি তুলে দিলেন বাংলার ছেলে। সত্যিই তো কলকাতার দুই দলে বাঙালির হাহাকার। বরং অন্য দলে বেশি বাঙালি খেলেন।
তিনি বলেন, ‘‘নেই, সেটা ভুল কথা। আছে অনেক প্লেয়ার। আমি তো জানি না কিন্তু আছে। মোহনবাগানের দল খুবই ভাল। ওরাও ঘুরে দাঁড়াবে। দলের মধ্যে একজন লিডার দরকার। হয়তো আছে, খুঁজে বের করতে হবে। তবে আমি ফ্যানদের উদ্দেশে বলব এই অবস্থায় দলের পাশে থাকো। মোহনবাগান ফ্যানরা সব সময় আমার হৃদয়ে রয়েছে।’’
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার