সুচরিতা সেন চৌধুরী: হাবাস + কলকাতা + মোহনবাগান মানেই একটা আলাদা বোঝাপড়া। হাবাসের ভাষায় ‘লাভ স্টোরি’। ওড়িশার মাঠে আইএসএল ২০২৩-২৪ প্রথম সেমিফাইনালের প্রথম লেগের ম্যাচে হেরে ফেরার পর থেকেই চোয়ালচাপা জেদটা চেপে বসেছিল দলের উপর। যা চাগিয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং হাবাস। দলের মধ্যে একটা কথা ভীষনভাবে ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন, লক্ষ্য ট্রফি। আর সেই লক্ষ্যেই রবিবারের এই লড়াই।
হাবাস বলছিলেন, ‘‘আমরা লড়াই করছি যত বেশি ট্রফি জেতা যায় তার জন্য। ছেলেরাও সেটাই চায়। সেই লক্ষ্যেই এদিন এনার্জিটা শেষ পর্যন্ত ধরে রাখল দল। গোলের জন্য ঝাঁপাল। পুরো দল যেভাবে খেলল তা অসাধারণ।’’ এদিন জয়ের পর বেশ ফুরফুরে মেজাজেই ছিলেন অ্যান্তোনিও লোপেজ হাবাস।
ওড়িশায় হারের পর তিনি বলেই দিয়েছিলেন এই ফল ঘুরিয়ে দেবেন কলকাতায়। যেমন বলা তেমন কাজ। কোচ অবশ্য পুরো কৃতিত্বই দিচ্ছেন প্লেয়ারদের। তিনি বলেন, ‘‘দল সুপার প্রফেশনালিজম দেখিয়েছে। প্লেয়াররা যে মানসিক শক্তি শেষ পর্যন্ত ধরে রেখেছে সেটা প্রশংসনীয়। ওড়িশা ম্যাচ আর এই ম্যাচ আলাদা। ফুটবল প্রতিদিনের খেলা। আমরা ম্যাচের আগে উইল পাওয়ার নিয়ে কথা বলেছিলাম। সেটা ছেলেরা মাঠে দারুণভাবে দেখিয়েছে।’’
হাবাসের গলায় এদিন সমর্থকদের পাশাপাশি প্রতিপক্ষ কোচ লোবেরার প্রশংসা। বদলার প্রসঙ্গে এক কথায় উড়িয়ে দিলেন। সঙ্গে বললেন, ‘‘লোবেরা আমার জন্য আইএসএল-এর অন্যতম সেরা কোচ।’’ এটা বলে বেরিয়ে দেখা গেল দুই কোচ দারুণ আড্ডায় মেতে উঠেছে। মিক্স জোনে দাঁড়িয়ে অনেকক্ষণ গল্প করতে দেখা গেল হাবাস ও লোবেরাকে। প্লেয়াররাও বেরনোর পথে যোগ দিলেন সেখানে। সব মিলে মাঠের মধ্যের ৯০ মিনিট আর মাঠের বাইরের মানুষগুলো একে অপরের জন্য একদম আলাদা। ম্যাচ শেষে যে অমরিন্দ আর শুভাশিস ঝামেলায় জড়ালেন এদিন গত ২৩ এপ্রিল এই দু’জনকেই দেখা গিয়েছিল ম্যাচ শেষে আড্ডা জমাতে। এটাই ফুটবল।
তবে ফাইনাল নিয়ে আগাম কোনও আশার বানী শোনাচ্ছেন না হাবাস। বরং ম্যাচের ফল তিনি ছেড়ে দিচ্ছেন সেই দিনের উপরই। ঘরের মাঠ, সাফল্যের যুবভারতী নিয়ে তিনি এখনই কিছু বলতে চান না। বরং মজা করে বলছেন, ‘‘হেরে গেলে তো এই সব ভুলে যাবে। তাই এখনই ফাইনাল নিয়ে কোনও মন্তব্য নয়। যা হবে সেদিন দেখা যাবে।’’ তবে আগেই বলেছেন, এই ট্রফি তিনি জিততে চান এই অসাধারণ ফ্যানদের জন্য। ভাগ্য নয়, লড়াই করেই জিততে চান।
হেরে গেলেও পুরো মরসুমে বার বার লোবেরার ওড়িশা এফসি মন জিতে নিয়েছে। সেমিফাইনালের প্রথম লেগও জিতে নিয়েছিল। আজকের দিন তাদের জন্য ছিল না। তবুও ছেলেদের নিয়ে গর্বিত লোবেরা। তিনি বলেন, ‘‘আমি আমার দল নিয়ে গর্বিত। সবাই তাদের সেরাটা দিয়েছে।’’ পাশাপাশি তাঁর গলায়ও ৬২ হাজারের গ্যালারির প্রশংসা। ওড়িশা ম্যাচে লিখেছিলাম হতাশ করল কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের গ্যালারি। ন’হাজার দর্শকের সামনে সেদিন খেলেছিল এই দুই দল এদিন শব্দব্রহ্ম শুনল ওড়িশা। ১০০ মিনিটের বেশি সময় ধরে চলা ম্যাচে সমর্থকদের আবেগের প্রশংসা করে গেলেন ওড়িশা কোচ।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার