Thursday, December 5, 2024
No menu items!
Google search engine
Homeআইএসএলডার্বি জিতে খুশি মোলিনা, আক্রমণাত্মক মানসিকতার অভাব দেখছেন ব্রুজোঁ

ডার্বি জিতে খুশি মোলিনা, আক্রমণাত্মক মানসিকতার অভাব দেখছেন ব্রুজোঁ

অলস্পোর্ট ডেস্ক: শনিবার রাতে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইস্টবেঙ্গলকে জোড়া গোলে হারানোর আনন্দে যেমন খুশি মোহনবাগান সমর্থকেরা তেমনই খুশি সবুজ-মেরুন বাহিনীর স্প্যানিশ কোচ হোসে মোলিনাও। তবে এই আনন্দের মধ্যেও বাস্তবের মাটিতে পা রেখে চলতে চান তিনি। ডার্বি জিতলেও নিজের দলের উন্নতি, চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি শ্রদ্ধা এবং অবশ্যই তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য যে একেবারেই ভুলে যাননি তিনি, সেটাই বুঝিয়ে দেন আইএসএল জয়ী কোচ। 

শনিবার মরশুমের প্রথম ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ডার্বিতে ২-০-য় জেতে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। ৪১ মিনিটে জেমি ম্যাকলারেন ও ৮৯ মিনিটে দিমিত্রিয়স পেট্রাটস পেনাল্টি থেকে করা গোলে দলকে জেতান। মহমেডান এসসি-কে যে রকম দাপুটে ফুটবল খেলে হারিয়েছিল তারা, ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে তেমনই আধিপত্য বিস্তার করে জেতে তারা। পরপর দু’টি কলকাতা ডার্বি জিতে আপাতত লিগ টেবলের দু’নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে গতবারের লিগশিল্ড জয়ীরা।     

দল পরপর জোড়া ডার্বি জেতায় কোচ মোলিনা খুবই খুশি। ম্যাচের পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আজ আমি খুবই খুশি। আমি একজন কোচ, যে একটা ভাল দলের কয়েকজন ভাল খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করছে। শুরু থেকেই আমরা একসঙ্গে অনেক পরিশ্রম করছি। শুরু থেকেই বলে আসছি যে, আমাদের সময় দিতে হবে, সবাইকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। একটা প্রক্রিয়ার জন্য সময় দিতে হয়। এখন মনে হচ্ছে সব কিছুই খুব ভাল হচ্ছে। তবে এখনও আরও উন্নতির জায়গা রয়েছে”। 

সমর্থক, ক্লাব কর্তাদের এই জয় উপহার দিতে পেরে খুশি কোচ বলেন, “আমি জানি যে, ডার্বির সঙ্গে সমর্থক, ক্লাব কর্তাদের বিশেষ আবেগ জড়িয়ে থাকে। আজ তাদের জন্য খুব ভাল লাগছে। এই ম্যাচে তিন পয়েন্ট পেলাম ঠিকই। তবে এখনও আমাদের পরিশ্রম করে যেতে হবে। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে পরের ম্যাচেও (৩০ অক্টোবর) জিততে হবে আমাদের”। 

মোহনবাগান এদিন সঙ্ঘবদ্ধ, অলরাউন্ড পারফরম্যান্স দেখিয়ে দুর্দান্ত জয় পায়। এই দলগত পারফরম্যান্স নিয়ে কোচ বলেন, “শুধু রক্ষণ বা আক্রমণ নিয়ে ভাবনা চিন্তা করি না আমি। আমার কাছে পুরো দলের উন্নতিই আসল কথা। দল হিসেবে ভাল খেলছি কি না আমরা, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। সবাই মিলে আক্রমণে ওঠা, সবাই মিলে ডিফেন্স করা, এটাই সবচেয়ে বেশি জরুরি। গত ম্যাচে এবং এই ম্যাচেও গ্রেগ ও জেমি দারুন খেলেছে। আক্রমণে তো বটেই, এমনকী, রক্ষণেও ওরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আমি এটাই চাই। আমরা যদি সঙ্ঘবদ্ধ থাকতে পারি, দল হিসেবে খেলি, তা হলে আমাদের দল আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে”। 

গত ম্যাচে যে দল নামিয়েছিলেন, শনিবার তাতে কোনও পরিবর্তন করেননি মোলিনা। তাই বলে এটাই যে তাঁর কাছে সেরা একাদশ, তা মানতে রাজি নন কোচ। বলেন, “দলের সব খেলোয়াড়কে নিয়েই আমি খুশি। আমাদের বেঞ্চের খেলোয়াড়রাও যথেষ্ট ভাল। তারাও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। অনেকে ভাবে যারা প্রথম এগারোয় সুযোগ পাচ্ছে না, তারা গুরুত্বপূর্ণ না। একেবারেই তা নয়। যারা স্কোয়াডে থাকছে না, তারাও গুরুত্বপূর্ণ। 

যেমন সুহেল, গ্লেন মার্টিন্স। অনুশীলনে ওদের পারফরম্যান্সে আমি যথেষ্ট খুশি। ওরা খুবই ভাল করছে। কিন্তু আমাকে তো সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। সবাই তো আর একসঙ্গে মাঠে নামতে পারে না, এগারোজনই পারে। দলের পক্ষে যেটা ভাল হয়, সেটাই করি। আজ যাদের প্রয়োজন ছিল, তাদেরই দলে রেখেছি। হায়দরাবাদ ম্যাচে কাদের রাখব জানি না। এখনও দশদিন হাতে আছে। পরে তার পরিকল্পনা তৈরি করব এবং দল নিয়ে ভাবব”। 

ইস্টবেঙ্গল এ দিনও ছন্দে ফিরতে পারেনি। টানা পাঁচ ম্যাচে হারলেও তাদের প্রতি যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল মোহনবাগান কোচ। বলেন, “ইস্টবেঙ্গলের খেলোয়াড়রা প্রত্যেকেই ভাল। গত মরসুমে ওরা খুব ভাল খেলেছে। আশা করি, ওরা ঘুরে দাঁড়াবে। টেবলের একেবারে নীচে থাকার মতো দল নয় ওরা। মহমেডান, ইস্টবেঙ্গল দুই দলই ভাল। তবে আমরাই সেরা। কলকাতার মানুষের গর্বিত হওয়া উচিত যে তাদের তিনটে দল লিগে খেলে। ছ-ছ’টা ডার্বি হচ্ছে এখানে। প্রত্যেক দলকে শ্রদ্ধা করি। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই লড়াই করি আমরা ঠিকই। তবে তাদের প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখি”। 

বরাবরের মতো শনিবারের ডার্বিতেও যুবভারতীর গ্যালারিতে তিল ধারনের জায়গায় ছিল। সমর্থকদের উল্লাস, উৎসাহ ও উন্মাদনা দেখে মুগ্ধ স্প্যানিশ কোচ বলেন, “কলকাতা ডার্বি খুবই উপভোগ করেছি। অসাধারণ এখানকার সমর্থকেরা। আসলে যখন সাফল্য আসে, তখন সবই ভাল লাগে। সমর্থকেরা সবাই খুব উৎসাহ জুগিয়েছে। আমার স্ত্রীও গ্যালারিতে ছিল। এই স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে এত দর্শক আসে, দেখে খুবই ভাল লাগে। আশা করি, সমর্থকদের এই সমর্থন বাকি সব ম্যাচেই পাব”। 

অন্য দিকে, ইস্টবেঙ্গলের নবাগত কোচ অস্কার ব্রুজোন স্বীকার করে নেন তাঁর দলে আক্রমণাত্মক মানসিকতার অভাব রয়েছে। শনিবারই ভোরে কলকাতায় এসে পৌঁছন ব্রুজোন। এ দিন ডাগ আউটে বসে দলের খেলা দেখার পর তিনি সাংবাদিক বৈঠকে এসে মন্তব্য করেন, “আমাদের দলে আক্রমণাত্মক মনোভাবের অভাব আছে, তীব্রতার অভাব আছে, এবং মাঝেমধ্যে আমরা আক্রমণে ওঠায় ভুল করছি। মোহনবাগান এসজি আমাদের চেয়ে দক্ষতায় ও শারীরিকভাবে আমাদের চেয়ে এগিয়ে। আমাদের দলে প্রতিভাবান খেলোয়াড় আছে, তাদের মধ্যে কয়েকজন ভারতীয় দলে খেলে। 

তীব্রতা বাড়ানোর জন্য আমাদের আরও কাজ করতে হবে, নয়তো প্রতি ম্যাচে আমাদের ৫-৬টি করে গোল করতে হবে, যা অসম্ভব। আমাদের দল পাঁচ ম্যাচে ১১টি গোল হজম করেছে এবং সবার আগে এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। আমি সদ্য এসেছি। পুরো ব্যাপারটা বুঝে নিয়ে সব সামলানোর জন্য আমাকে সময় দিতেই হবে”।   

তবে ব্রুজোনের বিশ্বাস, তাঁর দল সেরা ছয়ে থাকতে পারে। বলেন, “আমরা অবশ্যই সেরা ছয়ের মধ্যে শেষ করতে পারি। আমাদের লুকনোর কিছু নেই। ক্লাবের লক্ষ্য ছিল সেরা তিনে শেষ করা। দলের ওপর আমার পুরো আস্থা আছে। এমন কিছু বিষয় আছে, যেখানে আমরা উন্নতি করতে চাই। আমাদের একটু সময় দিন এবং আমি নিশ্চিত যে সবকিছুই ঠিক হয়ে যাবে”। 

দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী স্প্যানিশ কোচ বলেন, “মানসিকভাবে আমাদের উন্নতি করতে হবে। আমাদের সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপের পরে আমাদের ১৫ দিনের প্রস্তুতির সময় থাকবে। তার পরে ইস্টবেঙ্গল এফসি-র আসল চেহারা দেখতে পাবেন”।

টানা পাঁচ হারই আইএসএলে ইস্টবেঙ্গলের সবচেয়ে খারাপ সূচনা। এর আগে কখনও শুরুতেই টানা পাঁচ ম্যাচে হারেনি লাল-হলুদ বাহিনী। তা সত্ত্বেও অবশ্য দলের মধ্যে ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন নয়া কোচ। বলেন, “আমি অনেক ইতিবাচক দিক দেখেছি। আমরা প্রতিপক্ষকে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবাধ বিচরণ করতে দিইনি, ডিফেন্সিভ ট্রানজিশনে আমরা ভাল করেছি। খেলোয়াড়দের আচরণ ভাল ছিল। বদলি খেলোয়াড়রা নেমে ভাল খেলেছে। কিন্তু এই ইতিবাচক দিকগুলো ম্যাচ জয়ের জন্য যথেষ্ট ছিল না। আমাদের জেতার মতো খেলতে হবে”। 

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments