Tuesday, December 3, 2024
No menu items!
Google search engine
Homeফুটবলকুয়েত ম্যাচের আগে দলকে এর বিপুল গুরুত্ব বোঝাতে ব্যস্ত কোচ ইগর স্টিমাচ

কুয়েত ম্যাচের আগে দলকে এর বিপুল গুরুত্ব বোঝাতে ব্যস্ত কোচ ইগর স্টিমাচ

অলস্পোর্ট ডেস্ক: আগামী বৃহস্পতিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ভারত ও কুয়েতের মধ্যে ম্যাচটি যে দেশের ফুটবলের ইতিহাসে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, দলের ছেলেদের এখন তা-ই বোঝাচ্ছেন ভারতীয় দলের হেড কোচ ইগর স্টিমাচ। তাঁদের কেরিয়ারের মোড়ও যে এই ম্যাচে ঘুরে যেতে পারে, তাও জানিয়েছেন তিনি। গত তিন সপ্তাহে দলের প্রস্তুতিও হয়েছে ম্যাচের ঐতিহাসিক গুরুত্বের কথা মাথায় রেখেই। 

সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের ওয়েবসাইটকে তিনি বলেন, “কুয়েতের বিরুদ্ধে ভারতের আসন্ন ম্যাচটিই হল ভারতীয় ফুটবলে গত তিন দশকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে  ভারত কখনও তৃতীয় রাউন্ডে উঠতে পারেনি। এ বার সেই জায়গায় পৌঁছনোর একটা সুযোগ সামনে এসেছে। তৃতীয় রাউন্ডে উঠতে পারলে ভারতীয় ফুটবলে নতুন ইতিহাস তৈরি হবে”। 

২০২৬ বিশ্বকাপ ও ২০২৭ এশিয়ান কাপের বাছাই পর্বে ভারতের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ কুয়েতের বিরুদ্ধে। ৬ জুন কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কুয়েতের বিরুদ্ধে ম্যাচে জিততে পারলে ভারতের সামনে বাছাই পর্বের তৃতীয় রাউন্ডের দরজা খুলে যেতে পারে, যা এর আগে এ দেশের ফুটবলে কখনও হয়নি। যুবভারতীতে এই ম্যাচ আবার হতে চলেছে কিংবদন্তি ফুটবলার সুনীল ছেত্রীর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। 

এশীয় বাছাই পর্বের গ্রুপ ‘এ’-তে রয়েছে ভারত। এ বারের বাছাই পর্বে ভারতের গ্রুপে তাদের চেয়ে ক্রমতালিকায় ওপরে থাকা একমাত্র দল কাতার। বাকি দু’টি দল ক্রমতালিকায় তাদের চেয়ে নীচে রয়েছে। প্রতি গ্রুপ থেকে দুটি করে দল তৃতীয় রাউন্ডে উঠবে। 

বর্তমানে চার ম্যাচে চার পয়েন্ট পেয়ে দু’নম্বরে রয়েছে ভারত। তিন পয়েন্ট পেয়ে কুয়েত চারে, আফগানিস্তানের পরে। ফলে যুবভারতীতে জিতে বাছাই পর্বের তৃতীয় রাউন্ডে উঠে ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা রয়েছে ভারতের। বাছাই পর্বে দ্বিতীয় রাউন্ডে মোট ৩৬টি দলকে ৯টি গ্রুপে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি গ্রুপে রয়েছে চারটি দল। তৃতীয় রাউন্ডে ১৬টি দলকে তিনটি গ্রুপে ভাগ করা হবে, যেখানে প্রতি গ্রুপে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিতে খেলা হবে। 

এমন গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে স্টিমাচ বলছেন, “গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে আমাদের কতগুলো কাজ করতে হবে। নিজেদের আরও শক্তিশালী করে তোলা, বোঝাপড়ায় আরও উন্নতি করে তোলা, মানসিক ভাবে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠা এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ানো। সব কিছু নিয়েই কাজ চলছে। যাতে দলটা পুরোপুরি তৈরি হয়ে নামতে পারে”। 

কুয়েতকে হারাতে মরিয়ে ক্রোয়েশিয়ান কোচ বলছেন, “আমাদের ম্যাচটা জিততে হবে এবং লক্ষ্যে পৌঁছতে গেলে আমাদের আরও বুদ্ধিমান হতে হবে। আমাদের বুঝতে হবে যে, খেলতে নেমে আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। প্রথম আধ ঘণ্টায় যদি গোল নাও করতে পারি, তা হলেও আমাদের সবাইকে বুদ্ধিদীপ্ত, উঁচু মানের ও গতিময় ফুটবল খেলতে হবে। এই প্রত্যেকটা ব্যাপারই খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং এর জন্য আমাদের ভাল ভাবে প্রস্তুত হতে হবে। শুধু প্রথম এগারোর খেলোয়াড়দের নয়, রিজার্ভ বেঞ্চের খেলোয়াড়দেরও পুরোপুরি প্রস্তুত থাকতে হবে”। 

দলের ফুটবলারদের নিয়ে তিনি বলেন, “এটা এত বড় একটা ম্যাচ যে ফুটবলারদের কেরিয়ার বদলে দিতে পারে। আমি চাই ওরা খেলা উপভোগ করুক ও নিজেদের সেরাটা দিক”।    

গত বছর জুলাইয়ে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কুয়েতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় ইগর স্টিমাচের প্রশিক্ষণাধীন ভারত। এর আগে আটবার সাফ চ্যাম্পিয়ন হলেও কুয়েতের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়নি ভারত। 

এর আগে ২০১০-এ ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ৯-১-এ ভারতকে হারিয়েছিল এই পশ্চিম এশীয় দেশ। তার আগে ১৯৭৮-এর এশিয়ান গেমসে ৬-১-এ জেতে কুয়েত। সেই সব দিনের তুলনায় যে দেশের ফুটবল অনেক এগিয়ে গিয়েছে, এই সাফল্যে সেটাই বোঝা যায়। 

ফাইনালে আল খলদি ও ভারতের লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতের গোলে নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময় ১-১ থাকার পর ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুট আউটে। পাঁচটি করে শটের পর ফল ৪-৪ থেকে যাওয়ায় ম্যাচ গড়ায় সাডেন ডেথে। প্রথম শটে কোনও ভুল করেননি নাওরেম মহেশ সিং। কিন্তু কুয়েতের অধিনায়ক এল এব্রাহিম হাজিয়ার শট বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেভ করে দলকে চ্যাম্পিয়নের খেতাব এনে দেন বহু যুদ্ধের নায়ক গুরপ্রীত সিং সান্ধু। সেই কুয়েতের বিরুদ্ধেই এই মহাম্যাচ ভারতের।    

কুয়েতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে কোচ বলেন, “গত এক বছরে কুয়েতের বিরুদ্ধে যে তিনটি ম্যাচ খেলেছি আমরা, প্রতিটিই বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু আমরা প্রতিটি ম্যাচই দারুন ভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছি। শারীরীক ভাবেও আমরা ওদের চেয়ে এগিয়ে ছিলাম। কিন্তু এটাও ঠিক যে কুয়েত ম্যাচের আগে আমরা একাধিক ভাল ম্যাচ খেলেছিলাম। সেগুলোই আমাদের আরও ভাল মানের ফুটবল খেলতে সাহায্য করেছিল। 

কিন্তু এখন পরিস্থিতি সে রকম নয়। এখন ক্লাব ফুটবল চলছে না। ক্লাব দলগুলোকেও এখন পাওয়া সম্ভব নয়। তবু নিজেদের মধ্যে দল করে এক জোড়া ম্যাচ খেলেছি আমরা। এই দুই ম্যাচেই অসাধারণ খেলেছে ছেলেরা। গত তিন সপ্তাহে ওরা যে রকম পরিশ্রম করেছে, তাতে আমি খুশি”।গতবার ‘ই’ গ্রুপে থাকা ভারত আটটির মধ্যে মাত্র একটি ম্যাচে জিতেছিল ও চারটিতে ড্র করেছিল। তারা ছিল গ্রুপের তিন নম্বরে। ফলে তৃতীয় রাউন্ডে উঠতে পারেনি। এ বার এ পর্যন্ত চারটির মধ্যে একটিতে জয় পেয়েছে তারা ও একটিতে ড্র করেছে। তাদের শেষ দুই ম্যাচ কুয়েত ও কাতারের বিরুদ্ধে। কুয়েতকে তাদের হোম ম্যাচে হারিয়ে এসেছে ভারত। যদিও দেশের মাঠে কাতারের কাছে হেরেছে।

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে গোলশূন্য ড্র-ও করেছেন সুনীলরা। ফলে এই ম্যাচে কুয়েতকে হারাতে পারলে ও অপর ম্যাচে কাতার যদি আফগানিস্তানকে হারায়, তা হলে ভারতের তৃতীয় রাউন্ডে ওঠার রাস্তা পরিস্কার হয়ে যাবে। এই ম্যাচের আগে এখন চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে দলের। সেই প্রসঙ্গে স্টিমাচ বলেন, “শেষ সপ্তাহে আমরা সেট পিস, আক্রমণের কৌশল, শেপ বজায় রাখার জন্য কিছু খুঁটিনাটি, দল বাছাই ও পাসিংয়ের গতি নিয়ে কাজ করছি”। তিনি জানান, মেহতাব সিং ব্যক্তিগত কারণে শিবির ছেড়ে চলে গেলেও রবিবার ফের শিবিরে যোগ দিয়েছেন।

(লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments