অলস্পোর্ট ডেস্ক: দু’দিন আগেই যার মহড়া হয়ে গিয়েছে, সেই ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ ২০২৩ ফাইনালের আগে ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামের আকাশে-বাতাসে যুদ্ধের গন্ধ। স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে টানটান উত্তেজনা। সবার একই প্রশ্ন, ফিফা ক্রমতালিকায় দু’ধাপ এগিয়ে থাকা লেবাননকে হারিয়ে খেতাব জিততে পারবে ভারত?
বৃহস্পতিবার লিগের শেষ ম্যাচে, ফাইনালের মহড়াতেই জয়ের ইঙ্গিত দিয়ে রাখতে পারতেন সুনীল ছেত্রীরা, যদি না একাধিক অবধারিত গোলের সুযোগ নষ্ট করে গোলশূন্য ড্র করত তারা। সেই ম্যাচের শুরু ও শেষ দিকে যে দুটি সহজ সুযোগ পেয়েছিল ভারত, সেগুলো হাতছাড়া না হলে হাসিমুখে ও ফাইনালের জন্য ভরপুর আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত তারা।
লেবাননের দীর্ঘদেহী ফুটবলারদের শরীরি চ্যালেঞ্জকে সামলে ফুটবল দক্ষতা দিয়ে যে ভাবে তাদের আটকে গোলশূন্য ড্র করে ভারত, তা প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু একাধিক সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে না পারার মাশুল তাদের দিতে হয় এই ম্যাচে এক ঐতিহাসিক জয় হাতছাড়া করে। ম্যাচের পর ভারতের কোচ ইগর স্টিমাচ ও ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় সন্দেশ ঝিঙ্গন দুজনেই প্রতিশ্রুতি দেন, ওই ম্যাচের ভুল শুধরে ফাইনালে আরও উন্নত ফুটবল খেলবে তারা। কিন্তু সেই সুযোগ কি তাদের আর দেবে লেবানন?
তবু উন্নতির আশা
কোচ স্টিমাচ বলছেন, “আমাদের দলে অনেক কিছুই যে বদলাতে হবে, তা নয়। গোল করা নিয়ে সমস্যা ছাড়া বাকি সব ঠিকই আছে। খেলায় গতি, আগ্রাসন আরও বাড়াতে হবে। লেবানন যে শরীরি ফুটবল খেলে, তা সামলাতে হবে। আমরা গর্বিত যে আমরা আরও একটি ফাইনালে (হিরো ক্রিদেশীয় সিরিজের পর) উঠেছি। সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটাতে চাই”।
কিন্তু খেলোয়াড়রা গোলের সামনে গিয়ে বারবার খেই হারিয়ে ফেললে যে তা সম্ভব নয়, তা খুব ভাল করেই জানেন কোচ। সে কথাই স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, “গোলের সামনে মাথা ঠাণ্ডা রেখে বলের ওপর চোখ রেখে গোল করার পরামর্শ ছেলেদের সব সময়ই দিই। কিন্তু ছেলেরা তা পারছে না”। এই সময়ে ইশান পন্ডিতাকে পেলে যে ভাল হত, তা স্বীকার করে নেন স্টিমাচ। স্কোরার হিসেবে তিনি যথেষ্ট দক্ষ। কিন্তু তিনি অনুশীলনে হ্যামস্ট্রিংয়ে চোট পেয়ে যাওয়ায় দলের বাইরে।
তা হলে গোল করবেন কে? দলের স্ট্রাইকারদের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়েছেন জাতীয় দলের কোচ। বলেন, “সবাই রহিম আলিকে দুষছেন কেন! সবার উচিত ওর পাশে দাঁড়ানো, ওকে সমর্থন করা। ও সে দিন যে ভাবে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েছিল, সেটাও কম কৃতিত্বের নয়। এই সময়ে ওদের পাশে না দাঁড়ালে ওরা উন্নতি করতে পারবে না। লেবাননের বিরুদ্ধে আমরা চার-চারটে সহজ সুযোগ পেয়েছিলাম। এই যে সুযোগ তৈরি করতে পারছি, এটা কম বড় ব্যাপার নয়। দল যে ক্রমশ উন্নতি করছে, এ তারই ইঙ্গিত”।
প্রতিপক্ষকে সমীহ, তবু…
প্রতিপক্ষ যে যথেষ্ট ভাল মানের দল, তা স্বীকার করে নিয়ে স্টিমাচ বলেন, “ওদের দলে অনেক ভাল ভাল খেলোয়াড় আছে। ওদের মধ্যে পাঁচজনের তো বিদেশের ভাল ভাল লিগে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। ওদের পাসিং, পদিশনিং দেখেই তফাৎটা বোঝা যায়। আমাদের ছেলেরা এখনও ওই জায়গায় পৌঁছতে পারেনি। দল হিসেবে ওদের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার চেষ্টা করেছি আমরা। ফাইনালেও তা করব। শুরু থেকেই জয়ের জন্য ঝাঁপাতে হবে আমাদের। আমাদের গোলের কাছে ওদের পৌঁছতে দেওয়া চলবে না। আমাদের গোলের সামনে ওদের আসতে দিলে পরিস্থিতি সামলানো কঠিন হবে। বৃহস্পতিবারের ম্যাচের চেয়ে অন্য রকমের হবে এই ম্যাচ”।
নির্ধারিত ৯০ মিনিটে খেলা শেষ না হলে ম্যাচের নিষ্পত্তি হবে পেনাল্টি শুট-আউটে, যার অনুশীলন এক দিন আগেই শুরু করেছেন বলে জানালেন কোচ। তিনি মনে করেন, “এমনিতে আমার দলের ছেলেদের বেশিরভাগই পেনাল্টি ভাল মারে। তবে অনুশীলন তো করতেই হবে। তবে আমরা চাই ৯০ মিনিটেই ফয়সালা হয়ে যাক। ছেলেদের মধ্যে যে সাফল্যের খিদে দেখছি, তাতে আমি খুশি। ৯৯ শতাংশ পরিকল্পনা অনুযায়ীই খেলছে ওরা। এখনও কিছু কাজ বাকি আছে। সেগুলো করে নিতে পারলে আমরা আরও ভাল খেলব”।
(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার