Saturday, December 14, 2024
No menu items!
Google search engine
Homeফুটবলভারতীয় ফুটবলে গোল শূন্য ড্র দিয়ে শুরু মানোলো যুগ

ভারতীয় ফুটবলে গোল শূন্য ড্র দিয়ে শুরু মানোলো যুগ

অলস্পোর্ট ডেস্ক: মাত্র দু’দিনের অনুশীলনে মাঠে নেমে নতুন কোচের প্রশিক্ষণে ভারতীয় দলের যাত্রা খুব একটা খারাপ শুরু হল না। ভারতীয় সিনিয়র হেড কোচ মানোলো মার্কেজ প্রথম ম্যাচে দল নামিয়ে যে কোনও গোল খেলেন না, গোল করতে দিল না প্রতিপক্ষ মরিশাসকে, এই ফলকে ইতিবাচকই বলা যেতে পারে। হায়দরাবাদের জিএমসি বালাযোগী স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া ত্রিদেশীয় ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ গোলশূন্য ড্র দিয়ে শুরু করল ভারত।    

বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ পেয়েও তা কাজে না লাগাতে পারা কার্যত ভারতীয় দলের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। সেই অভ্যাস এই ম্যাচেও বহাল ছিল। তবে ম্যাচের শেষে তাদের রিপোর্ট কার্ড বলছে, প্রতিপক্ষের চেয়ে কিছুটা হলেও এগিয়েই ছিল ভারত। তাদের বল পজেশন ছিল ৬৫ শতাংশ। কিন্তু সারা ম্যাচে দশটি শটের মধ্যে মাত্র একটি গোলের লক্ষ্যে রাখতে পেরেছেন মনবীর সিংরা। মরিশাসও একটির বেশি শট গোলে রাখতে পারেনি। ভারতের মতো সমস্যা তাদেরও আছে, যা তাদের পরবর্তী ম্যাচে শক্তিশালী সিরিয়ার বিরুদ্ধে ভোগাতে পারে।  

মঙ্গলবার যে পারফরম্যান্স দেখা গেল ভারতীয় দলের মধ্যে, তার চেয়ে উন্নতি না করতে পারলে তাদেরও সিরিয়ার বিরুদ্ধে ভুগতে হতে পারে। তবে যেহেতু পরের ম্যাচের আগে দিন পাঁচেক সময় পেয়ে যাচ্ছেন মার্কেজ ও তাঁর দলের ফুটবলাররা, তাই ভুলগুলো শুধরে হয়তো আগামী সোমবার শেষ ম্যাচে আরও ভাল পারফরম্যান্স উপহার দিতে পারে তারা।   

এ দিন বেশ কয়েকজন নিয়মিত খেলোয়াড়কে রিজার্ভ বেঞ্চে রেখেই প্রথম এগারো মাঠে নামান মার্কেজ। গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধু, ডিফেন্ডার শুভাশিস বোস, আনোয়ার আলি, নিখিল পূজারী, মাঝমাঠের নন্দকুমার শেকর, সহাল আব্দুল সামাদদের ছাড়াই দল নামান তিনি। আক্রমণে মনবীর সিং, তাঁর পিছনে ও দুই উইংয়ে লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে, অনিরুদ্ধ থাপা, আশিস রাই, লিস্টন কোলাসোদের ওপর বেশি ভরসা করেন। 

এ বছর জুনে কাতারের বিরুদ্ধে ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচে যে দল নেমেছিল ভারতের, সেই দলে ছ’টি পরিবর্তন করে মরিশাসের বিরুদ্ধে মাঠে নামে ভারত। এ বছর আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে অবসর নেওয়া কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রীর অনুপস্থিতিতে, ভারতীয় দলকে এ দিন নেতৃত্ব দেন রাহুল ভেকে। বিরতির পরে অবশ্য থাপা ও লিস্টনের জায়গায় সহাল ও নন্দকে নামান তিনি। তবে যে উদ্দেশ্যে তাদের মাঠে নামানো হয়েছিল, সেই উদ্দেশ্য অবশ্য পূরণ করতে পারেননি তাঁরা। 

শুরু থেকে বল যথাসম্ভব বেশি দখলে রেখে আক্রমণে ওঠার প্রবণতাই বেশি দেখা যায় ভারতীয়দের মধ্যে।  ছ’মিনিটের মাথায় থাপার কর্নারে দূরের পোস্টের সামনে থাকা চিঙলেনসানা ঠিকমতো হেড করতে পারলে শুরুতেই গোল পেয়ে যেত ভারত। 

প্রথমার্ধের প্রথম পনেরো মিনিটে ভারতীয় গোল এরিয়ায় একের পর এক আক্রমণ চালায় মরিশাস। তবে রক্ষণে অধিনায়ক রাহুল ভেকের দৃঢ়তা তাদের চেষ্টা ব্যর্থ করে। ছোট ছোট পাসে ক্রমশ মাঠ দখল করে তারা। ২২ মিনিটের মাথায় লিস্টনের নেওয়া শট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি। চার মিনিট পর আশিস রাইয়ের একটি পাল্টা আক্রমণ থেকে ভারত একটি কর্নার পেলেও তা কাজে লাগেনি। ৪৩ মিনিটের মাথায় মনবীর সিং গোল করার একটি সুবর্ণ সুযোগ পান। কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারেনি।

শুরুতে বিপক্ষকে চাপে ফেলার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী দেখায়নি মরিশাসকে। তবে গিয়োম মুলেকের দল প্রতিটি কাউন্টার-অ্যাটাকের সুযোগ কাজে লাগায়। জর্ডান ফ্রাঁসোয়া ডানদিক থেকে কিছু ক্রস করে সমস্যার সৃষ্টি করেন। কিছু ক্ষেত্রে ভারতীয় দল অতিথিদের সুযোগ করে দেয়। 

২০ মিনিটের মাথায় আশিস রাই বল খোয়ানোর কারণে ইয়ানিক অ্যারিস্টাইদ বাঁদিক থেকে একটি নীচু শট মারেন। তবে তা জালে জড়ানোর জন্য মরিশাসের কোনও খেলোয়াড় সেখানে ছিলেন না। চার মিনিট পর, লালসিংয়ের সঙ্গে বল দখল করতে গিয়ে বল হারিয়ে ফেলেন আপুইয়া, যিনি ৩০ গজ দূর থেকে একটি শট নেন, কিন্তু অমরিন্দর সহজেই বল দখলে নিয়ে নেন।

যখন ৩০ মিনিট পেরিয়ে স্কোরলাইন অপরিবর্তিত থাকে, তখন ভারত আরও বেশি তৎপরতা দেখাতে শুরু করে। বিশেষ করে ডানদিকের উইংয়ে আশিস এবং ছাঙতের তৎপরতা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। ৩৫তম মিনিটে অবশেষে মরিশাসের গোলরক্ষক কেভিন জাঁ-লুইসকে পরীক্ষায় ফেলে দেয়। থাপা দুর্দান্তভাবে বক্সে মনবীরকে খুঁজে বের করেন। তিনি বাঁ পায়ে একটি শট নেন, যা লুইসের গ্লাভসে জমা হয়ে যায়।

দু’মিনিট পর মরিশাস প্রথমার্ধে তাদের সেরা সুযোগটি পায়। ডিলান কলার্ড বক্সের প্রান্তে ইমানুয়েল ভিনসেন্টের জন্য বলটি সাজিয়ে দেন। তাঁর শট ক্রসবারের কয়েক ইঞ্চি ওপর দিয়ে চলে যায়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ছাঙতে ডানদিকের উইং দিয়ে দ্রুত আক্রমণ করে ভারতের আক্রমণাত্মক ফুটবলের সূচনা করেন। ছাঙতের পায়ের ক্রস মরিশাসের বিপদ বাড়ালেও শেষ পর্যন্ত তা সামলে নেন লিন্ডসে রোজ, ডিলান কলার্ডরা। পরের মিনিটে ভারতীয় উইং ব্যাক জয় গুপ্তর একটি ক্রসের ফলে ভারত একটি কর্নার আদায় করলেও তা কাজে লাগাতে পারেনি তারা। মাঠে নামার পর সহাল আব্দুল সামাদ মরিশাসের বক্সে বেশ কয়েকটি ভাল পাস দেন। তবে, গোল করতে ব্যর্থ হয় ভারত।

দ্বিতীয়ার্ধে মরিশাস দলে কিছু পরিবর্তন এনে ক্রমশ আক্রমণে ধার বাড়ানোর চেষ্টা শুরু করে। তবে চিংলেনসানা সিং, রাহুল ভেকেরা যথেষ্ট তৎপর ছিলেন। ৬৫ মিনিটে মাঝমাঠে অপুইয়ার জায়গায় সুরেশ সিং ওয়াংজাম মাঠে নামেন। ৭০ মিনিটের মাথায় নন্দকুমার একটি ফ্রি কিক আদায় করলেও তা গোল পর্যন্ত পৌঁছয়নি। মরিশাস ক্রমশ আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়ানোয় ৭১ মিনিটে জয় গুপ্তার জায়গায় শুভাশিস বোসকে নামায় ভারত। 

৭৯ মিনিটে আশিস রাইয়ের পরিবর্তে নিখিল পুজারী মাঠে নামেন। ৮৩ মিনিটের মাথায় অমরিন্দরের ভুলে একটি গোল হওয়ার উপক্রম হয়েছিল, তবে পুজারী সময়মতো তৎপর হয়ে তা রুখে দেন। শেষ মুহূর্তে ভারত সর্বশক্তি দিয়ে গোলের চেষ্টা করলেও তারা সফল হয়নি। ম্যাচ ড্র হয়। মরিশাসের অধিনায়ক ও ডিফেন্ডার লিন্ডসে রোজকে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নির্বাচিত করা হয়।

ভারতীয় দল: অমরিন্দর সিং (গোলকিপার), আশিস রাই (নিখিল পুজারী ৭৯’), রাহুল ভেকে (অধিনায়ক), চিঙলেনসানা সিং, জয় গুপ্তা (শুভাশিস বোস ৭২’), অনিরুদ্ধ থাপা (সহাল আব্দুল সামাদ ৪৬’), আুপুইয়া (সুরেশ সিং ওয়াংজাম ৬৬’), জিকসন সিং, লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে, মনবীর সিং, লিস্টন কোলাসো (নন্দকুমার শেকর ৪৬’)।

(লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments