Tuesday, December 3, 2024
No menu items!
Google search engine
Homeফুটবলইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ ২০২৩-এর দুই ফাইনালিস্টের লড়াই গোলশূন্য

ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ ২০২৩-এর দুই ফাইনালিস্টের লড়াই গোলশূন্য

অলস্পোর্ট ডেস্ক: ফাইনালের মহড়া। তাতেই একে অপরকে জমি ছাড়তে নারাজ ভারত ও লেবানন। ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ ২০২৩-এর দুই ফাইনালিস্ট লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে বৃহস্পতিবার ভুবনেশ্বরে পরস্পরকে যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল, তাতে একটা ব্যাপার পরিষ্কার যে, রবিবার সন্ধ্যায় কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে টুর্নামেন্টের যে ফাইনাল হতে চলেছে, তাতে দুর্দান্ত এক ফুটবল-যুদ্ধ দেখা যাবে।

তবে বৃহস্পতিবার ম্যাচের শুরুতে ও শেষের দিকে যে দু’টি সহজ সুযোগ পেয়েছিল ভারত, সেগুলো হাতছাড়া না হলে এ দিন হাসিমুখে ও ফাইনালের জন্য ভরপুর আত্মবিশ্বাস নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারত তারা। লেবাননের দীর্ঘদেহী ফুটবলারদের শরীরি চ্যালেঞ্জকে সামলে ফুটবল দক্ষতা দিয়ে যে ভাবে তাদের আটকে গোলশূন্য ড্র করে ভারত, তা প্রশংসার যোগ্য। কিন্তু একাধিক সুযোগ পেয়েও তা কাজে লাগাতে না পারার মাশুল দিতে হল এই ম্যাচে দু’পয়েন্ট খুইয়ে। টানা পাঁচ ম্যাচে কোনও গোল না খেয়ে মাঠ ছাড়ার জন্য কৃতিত্ব দিতেই হবে ভারতীয় দলের রক্ষণ বিভাগকে।

বল দখলে এগিয়ে থাকা (৫৪-৪৬) ভারত এ দিন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে ফিফা ক্রমতালিকায় তাদের চেয়ে দু’ধাপ ওপরে থাকা লেবাননের বিরুদ্ধে। প্রতিপক্ষ যেখানে সাতটি শটের মধ্যে একটি গোলে রাখতে পারে, সেখানে ভারতের পাঁচটির মধ্যে একটি শট লক্ষ্যে ছিল।

গত ম্যাচে যেমন ন’টি পরিবর্তন করে প্রথম ১১ নামিয়েছিল ভারত, এই ম্যাচে ১০টি পরিবর্তন করেন দলের কোচ ইগর স্টিমাচ। গত দুই ম্যাচে খেলা সন্দেশ ঝিঙ্গনকে রেখে বাকি পুরো দলটাই বদলে দেন তিনি। এমনকী এ দিন সুনীল ছেত্রীকেও বিশ্রাম দেওয়া হয়। নিশ্চয়ই ফাইনালের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত।

বিকেল পর্যন্ত ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত না হওয়ার চাপ থাকলেও ভারতের বিরুদ্ধে এ দিন মাঠে নামার আগেই চাপমুক্ত হয়ে যায় লেবানন। তাদের শেষ ম্যাচে ভানুয়াতু ১-০-য় মঙ্গোলিয়াকে হারানোয় লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে নামার আগেই ফাইনালে উঠে পড়ে লেবানন। ফলে দুই দলের কাছেই এই ম্যাচটা আক্ষরিক অর্থেই হয়ে ওঠে ফাইনালের ‘স্টেজ রিহার্সাল’।

আক্রমণে এ দিন ভারতের সেরা তরুণ অ্যাটাকারদের খেলতে দেখা যায়। অনিরুদ্ধ থাপা, সাহাল আব্দুল সামাদ, উদান্ত সিং, লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে, আশিক কুরুনিয়ান—ক্লাব ফুটবলে যাঁদের প্রতিপক্ষের গোল এরিয়ায় প্রায়ই ঝড় তুলতে দেখা যায়, তাঁরা এ দিন লেবাননের জালে বল জড়ানোর দায়িত্বে ছিলেন।

শুরুতে থাপা সুযোগ হাতছাড়া করার পর ১৯ মিনিটের মাথায় আশিক কুরুনিয়ানও বক্সের মধ্যে বল পেয়ে জালে জড়াতে পারেননি। যদিও আগেরটির মতো সহজ ছিল না সেই সুযোগ। উদান্ত ও ছাঙতেকে এ দিন মাঝে মাঝে উইং বদল করে খেলতে দেখা যায়। ফলে লেবাননের ডিফেন্ডাররাও বিভ্রান্ত হন। তবে প্রথমার্ধে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ভারতীয়রা। মাঝমাঠ থেকে অ্যাটাকিং থার্ড—প্রথম ৪৫ মিনিটে ভারতেরই আধিপত্য ছিল। কিন্তু কাজের কাজটা করতে পারেননি তাঁরা।

মাঝে মাঝে লেবানন আক্রমণ হানলেও সেগুলির বেশিরভাগই নির্বিষ করে তোলেন সন্দেশ, আনোয়ার, আকাশ, নিখিলরা। তবে ৩২ মিনিটের মাথায় বক্সের মাঝখান থেকে যে জোরালো গোলমুখী হেডটি করেন সাদ, তা অমরিন্দর সামনে ঝাঁপিয়ে বার করে না দিলে হয়তো বিপদে পড়ত ভারত।

প্রথমার্ধে যেখানে শেষ করেছিল লেবানন, দ্বিতীয়ার্ধ সেখান থেকেই শুরু করে তারা। এই অর্ধের শুরুতে তাদেরই আধিপত্য দেখা যায়। এর মধ্যেই ভারত মাঝে মাঝে প্রতি আক্রমণে উঠতে শুরু করে। ৫২ মিনিটের মাথায় আকাশ ও উদান্ত বাঁ দিক দিয়ে বল নিয়ে উঠে থাপার উদ্দেশ্য ক্রস দিলেও অল্পের জন্য বলে পৌঁছতে পারেননি তিনি। আক্রমণে গতি আনার জন্য ৫৯ মিনিটের মাথায় আশিককে বসিয়ে রহিম আলিকে নামান স্টিমাচ।

নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার মিনিট কুড়ি আগে সাহালকে তুলে নাওরেম মহেশকে নামায় ভারত। শেষ দশ মিনিটের জন্য উদান্তর জায়গায় নামেন সুনীল ছেত্রী। একই সঙ্গে নিখিল পূজারিকে তুলে নামানো হয় রাহুল ভেকে-কে। একই সঙ্গে আক্রমণ ও রক্ষণকে আঁটোসাঁটো করার উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত। সুনীল নামার পরেই যে সুযোগটি পান রহিম, তাকে কাজে লাগিয়ে গোল করতে না পারাটা বেশ বিস্ময়কর।সিটার মিস করেন তিনি।

সন্দেশ ঝিঙ্গনের নেতৃত্বাধীন দলের রক্ষণকে এ দিন পুরো পয়েন্ট দেওয়া যায়। ম্যাচের পর টিভি-সাক্ষাৎকারে সন্দেশ বলেন, “ক্লিন শিট ভালো। দলের জয়ের ভিতটা তৈরি হয়ে গিয়েছে মনে হচ্ছে। এ বার এই ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে ফাইনালে আরও ভালো খেলা উচিত আমাদের। লেবাননকে আমরা খুব ভালো ভাবে বিশ্লেষণ করেছি। সেই অনুযায়ীই পরিকল্পনা তৈরি করি এবং অনেকটা সেই অনুযায়ীই খেলতে পেরেছি। তবে ফাইনালে আর ভুলগুলো করা চলবে না। আরও সঙ্ঘবদ্ধ ভাবে খেলতে হবে”।

এই পারফরম্যান্সের পর কোচ স্টিমাচও আশাবাদী। তিনি বলেন, “আমরা রক্ষণে খুব ভালো করেছি। অনেক সুযোগও তৈরি করেছি। এমনকী সুনীল শেষে নেমেও দুর্দান্ত একটা সুযোগ পেয়েছিল। আমরা ক্লিন শিট রাখতে চেয়েছিলাম, পেরেছি। কিন্তু গোল করতে হবে। অনেক কাজ বাকি। আগামী তিন দিনে সেগুলো করতে হবে আমাদের”।

ভারতীয় দল: অমরিন্দর সিং (গোল), আনোয়ার আলি, সন্দেশ ঝিঙ্গন, আকাশ মিশ্র, নিখিল পূজারি (রাহুল ভেকে), অনিরুদ্ধ থাপা, সাহাল আব্দুল সামাদ (নাওরেম মহেশ সিং), উদান্ত সিং (সুনীল ছেত্রী), লালিয়ানজুয়ালা ছাঙতে, আশিক কুরুনিয়ান (রহিম আলি), জিকসন সিং।

(লেখা ও ছবি আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments