Thursday, February 13, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeফুটবলজর্ডন এলসে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের পাগলামো দেখে মুগ্ধ, ফিরিয়ে দিতে চান সাফল্য

জর্ডন এলসে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের পাগলামো দেখে মুগ্ধ, ফিরিয়ে দিতে চান সাফল্য

অলস্পোর্ট ডেস্ক: তিনি যে ইস্টবেঙ্গলকে সাফল্য এনে দিতেই কলকাতায় এসেছেন, তা স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন অস্ট্রেলীয় ডিফেন্ডার জর্ডন এলসে । পার্থ গ্লোরি থেকে কলকাতার ইস্টবেঙ্গলে আসার পর থেকেই সমর্থকদের মনে ছাপ ফেলেছেন এই ডিফেন্ডার। ২৯ বছর বয়সী এই ফুটবলার তো যথেষ্ট দায়িত্ব নিয়ে রক্ষণ সামলাচ্ছেনই, তার ওপর চলতি ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে গোকুলাম কেরালা এফসি-র বিরুদ্ধে প্রথম মিনিটে দুর্দান্ত এক গোল করে সমর্থকদের মনও জয় করে নিয়েছেন।

সমর্থকেরা যে ভাবে দলের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং প্রতি ম্যাচে তাঁদের জন্য গলা ফাটাচ্ছেন, তা দেখে মুগ্ধ ও কৃতজ্ঞ এলএ। ক্লাবের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে তিনি বলেন, “আমি এখানে এসে সময়টা খুব উপভোগ করছি। এখানে আসার আগে আমি সমর্থকদের সম্পর্কে অনেকের কাছ থেকে অনেক কিছু শুনেছিলাম। ওরা কতটা ফুটবল পাগল ও আবেগ প্রবণ, সবই শুনেছিলাম। তখন বুঝতে পারিনি, ঠিক কতটা পাগল ওরা। কিন্তু এখানে এসে ডার্বিতে বুঝতে পারি, সত্যিই কতটা তীব্র আবেগ রয়েছে ওদের মধ্যে”।

এলসে আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন গত ম্যাচে প্রথম মিনিটেই অসাধারণ এক গোল করায়। সে দিন যুবভারতীতে রীতিমতো পরিকল্পিত গোল করেন এলসি। যেমন অনুশীলনের মাঠে তাঁরা করে থাকেন। ডানদিক থেকে ছোট কর্নারের পর বোরহা হেরেরার ক্রস উড়ে যায় বক্সের সামনের দিকে। ওখানে ছিলেন মহেশ সিং, যিনি হেড করে বল পাঠিয়ে দেন গোলের সামনে এলসির কাছে। অসাধারণ হেডে এলসি বল জালে জড়িয়ে দেন। ঘটনার আকস্মিকতায় থতমত খেয়ে যানগোকুলামের ফুটবলাররা এবং স্টেডিয়ামের গ্যালারি উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। এই গোলের পর থেকেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ কার্যত লাল-হলুদ বাহিনীর হাতে চলে যায়।

এই গোলের পর থেকেই তাঁকে নিয়ে সমর্থকদের আগ্রহ আরও বেড়ে গিয়েছে এবং এলসিও ব্যাপারটা দারুন উপভোগ করছেন। বলেন, “যে দিন থেকে কলকাতায় এসেছি, আমার মনে হচ্ছে এই সমর্থকদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক অনেকদিনের। এই দলের জন্য ভাল পারফরম্যান্স দেখানোর ইচ্ছেটা খুব বেড়ে গিয়েছে। কুব উপভোগ্য অভিজ্ঞতা হচ্ছে আমার”।

ডুরান্ড কাপে নামার পর থেকে একটিও ম্যাচ হারেনি ইস্টবেঙ্গল এফসি। এ মরশুমের আগে দলে যোগ দেওয়া স্প্যানিশ কোচ কার্লস কুয়াদ্রাতের প্রশিক্ষণে দলটার মধ্যে ফের চনমনে ভাব দেখা গিয়েছে। গত তিন বছর ব্যর্থতার অন্ধকারে ডুবে থাকার পর এই মরশুম থেকে যে ফের আলোয় আসতে শুরু করেছে তারা, তা বোঝা যায় মরশুমের প্রথম ডার্বি থেকেই। সাড়ে চার বছর পর চিরপ্রতিদ্বন্দী মোহনবাগান এসজি-কে হারায় তারা। তাই এই মরশুমের দলের ওপর ফের আশায় বুক বাঁধা শুরু করেছে লাল-হলুদ সমর্থকেরা।

দলের খেলায় ফুটবলারদের মধ্যে বোঝাপড়ার ছাপ স্পষ্ট। এলসিও সে কথা জানিয়ে বলেন, “দলের সবার সঙ্গে আমার খুব ভাল সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। একটা নতুন দলে যোগ দিয়ে সেখানকার খেলোয়াড়দের মানসিকতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন। কিন্তু আমার সঙ্গে নুঙ্গার (লাল চুঙনুঙ্গা) একটা অদ্ভূত ভাল বোঝাপড়া তৈরি হয়ে গিয়েছে। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও”।

মাঠের মতো মাঠের বাইরেও খেলোয়াড়দের মধ্যে ভাল সম্পর্ক থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন এলসি। তিনি বলেন, “মাঝে মাঝে মাঠের বাইরের সম্পর্কও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। যখন আমরা একই হোটেলে থাকি, একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া করি। এই ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আমার অভিজ্ঞতা খুবই ভাল”।

অ্যাডিলেড থেকে উঠে আসা ২৯ বছর বয়সী এই ডিফেন্ডার ২০১৫-১৬ মরশুমে অ্যাডিলেড ইউনাইটেডের হয়ে এ লিগের চ্যাম্পিয়নশিপ খেতাব ও প্রিমিয়ারশিপ খেতাব জেতেন। এ ছাড়া ওই ক্লাবের হয়েই ২০১৮ ও ২০১৯-এ অস্ট্রেলিয়া কাপও জেতেন তিনিই। অ্যাডিলেডের ক্লাবের ২০১৩ থেকে ২০২১ পর্যন্ত খেলেন তিনি। তার পরে নিউক্যাসল জেটসে সই করেন। নিউক্যাসলের ক্লাবে দুই মরশুমে ৩৫টি ম্যাচ খেলার পরে এ বছর জানুয়ারিতে পারথ্ গ্লোরিতে যোগ দেন এলসি।

ভারতে এসে নিজের লক্ষ্যও স্থীর করে ফেলেছেন তিনি। বলেন, “এখানে আসার পর প্রথম ইন্টারভিউতে আমি বলেছিলাম, এখানে আমি ছুটি কাটাতে আসিনি। কথাটা হয়তো অনেকের জ্বোলো লেগেছে। কিন্তু সত্যিই আমি এখানে সফল হওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছি। ইস্টবেঙ্গলকে ট্রফি জেতানোই আমার লক্ষ্য। প্রথম দু’সপ্তাহেই আমি উপলব্ধি করেছি, এই লক্ষ্যে শুধু আমি নই, আমার সতীর্থ ও কোচিং স্টাফও অবিচল”।

মরশুমের প্রথম সাফল্যেরই খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে রয়েছে লাল-হলুদ বাহিনী। মঙ্গলবারই তারা ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনাল খেলতে নামছে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে। এই ম্যাচে জিতে ফাইনালে ওঠার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী পুরো শিবির। ফাইনালে তাদের দেখা হতে পারে চিরপ্রতিদ্বন্দী মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের সঙ্গে, যাদের কয়েকদিন আগেই গ্রুপ লিগে হারিয়ে হইচই ফেলে দেয় তারা।

২০১৯-এর ২৭ জনুয়ারি শেষবার চিরপ্রতিদ্বন্দী ক্লাবকে হারিয়েছিল তারা। তার পর থেকে টানা আটটি ডার্বিতে প্রতিবারই হেরে জ্বালা-যন্ত্রণায় বিদ্ধ হয়েছিল বারবার। চলতি ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ১-০-য় জিতে সেই যন্ত্রণার অবসান হয়। ফের ডার্বিতে মুখোমুখি হলে কী হবে, তা তো সময়ই বলবে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের অন্ধকার থেকে আলোয় ফেরার যাত্রা যে শুরু হয়ে গিয়েছে, এই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments