সুচরিতা সেন চৌধুরী: রাত পোহালেই আরও একটা ডুরান্ড কাপ ফাইনাল। আবারও ফাইনালে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। তবে গতবারের মতো আর সামনে চিরশত্রু ইস্টবেঙ্গল নয়। এবার প্রতিপক্ষ নর্থইস্ট ইউনাইটেড। সমর্থকরা ঘরের মাঠে মোহনবাগানকে ফেভারিট ধরে নিলেও কোচ হোসে মোলিনা তেমনটা ভাবতে নারাজ। তিনি স্পষ্ট করেই বলে দিলেন, “ফ্যানদের সামনে খেলতে পারাটা সব সময় ভাল কিন্তু সেটা কখনওই অ্যাডভান্টেজ নয়।”
নর্থইস্ট ইউনাইটেড কোচ হুয়ান পেড্রো তো আরও কয়েক ডিগ্ৰি এগিয়ে। এতটাই হালকা মুডে যে হার-জিৎ নিয়ে ভাবছেনই না তিনি। বরং বলছেন, “কেউ জিতবে কেউ হারবে। ওরা জিতলে আমি শুভেচ্ছা জানাব। আশা করি আমরা জিতলে ওরাও জানাব।” তবে প্রতিপক্ষ যতই বিন্দাস থাকুক না কেন মোহনবাগান কোচ তাদের যথেষ্ট সমীহ করছেন। মোলিনা বলেন, “আমরা ওদের ডুরান্ড কাপে খেলতে দেখেছি। ওরা খুব ভাল খেলেছে। ওদের আক্রমণে খুব ভাল প্লেয়ার রয়েছে।”
প্রতিপক্ষ নর্থইস্টকে গুরুত্ব দিলেও নিজেদের এগিয়েই রাখছেন তিনি। ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হতে কতটা প্রস্তুত তাঁরা, প্রশ্নের উত্তরে মোলিনা বলেন, “আমার মানসিকতা সব সময়ই থাকবে আমি সেরা প্রস্তুতি নিয়েই দল নামাবো। আমরা আমাদের সেরাটাই দেব।” তবে তারকা খচিত মোহনবাগানে প্রথম একাদশ বেছে নেওয়া একজন কোচের জন্য চ্যালেঞ্জের তো বটেই। কোচ মোলিনা অবশ্য, বলছেন, “যদি প্লেয়ার না থাকে তাহলেই দল বাছাটা বরং বেশি কঠিন। আমার হাতে যখন ভাল দল রয়েছে তখন সেটা অনেক সহজ। অনেক ভাল প্লেয়ার থাকা একজন কোচের জন্য সব সময়ই ভাল।”
মোলিনার কথার রেশ ধরেই পেড্রো বলছেন, “কোচ হিসেবে সব সময়ই চাইব ভাল প্রস্তুতি হোক। কিন্তু ম্যাচের ফল হওয়ার পর আসলে বোঝা যায় প্রস্তুতি কতটা হয়েছে। এই মুহূর্তে আমাদের দল গঠনের কাজ ভাল চলছে। আর আইএসএল-এর আগে, এর থেকে ভাল কী হতে পারে যে আমরা মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলবে।”
সেমিফাইনালে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস বসু। তবে কোচ জানিয়ে দিলেন, তিনি সুস্থ এবং খেলার জন্য প্রস্তুত। তবে ডুরান্ড ফাইনালে প্রথম একাদশে কাদের দেখা যাবে যা স্পষ্ট না করলেও বুঝিয়ে দিলেন অনুশীলনে প্রমাণ করেই দলে জায়গা করে নিতে হবে। মোলিনা বলেন, “ম্যাচের গুরুত্ব, প্রতিপক্ষ দল এবং অনুশীলনে যে ভাল করবে তার উপরই দল তৈরি হবে। সেই মুহূর্তের জন্য যাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে তারাই দলে থাকবে।”
তবে তিনি যে দলগত পারফর্মেন্সে বিশ্বাসী সেটাও বুঝিয়ে দিলেন। গোলের নিচে শেষ দুই ম্যাচে বিশাল কাইথের অসাধারণ পারফর্মেন্সকে সাধুবাদ জানালেও বলছেন কেউ একা কিছু করেননি। যা হয়েছে দলগতভাবেই হয়েছে। “বিশাল একা কিছু করেনি। আমরা ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ২-২ করেছিলাম তাই ম্যাচ টাইব্রেকারে গিয়েছিল। চাইব ম্যাচ ৯০ মিনিটে শেষ করতে কিন্তু খেলায় সব সময় একরকম হয় না।”
দলের রক্ষণে সমস্যা আছে এটা মানতে নারাজ তিনি। আবার দলের ট্রায়ো দিমিত্রি, কামিন্স, স্টিওয়ার্টকে নিয়েও আলাদা উচ্চাশা দেখাতে নারাজ তিনি। বরং প্রতিপক্ষের রক্ষণের প্রশংসা শোনা গেল তাঁর গলায়। বলছিলেন, “ওদের রক্ষণ খুব ভাল। দ্রুত আক্রমণে ওঠে ওরা। নেস্টর খুব ভাল প্লেয়ার।”
নর্থইস্ট কোচ অবশ্য মোহনবাগানের পুরো দলকেই এগিয়ে রাখছেন। তাঁর কথায় যে কেউ গোল করতে পারেন। তিনি বলেন, “আমাদেরও খুব ভাল প্লেয়ার রয়েছে। ওদের আক্রমণ আটকানোর জন্য যথেষ্ট ভাল প্লেয়ার রয়েছে। আমরা এখানে ফাইনালটা উপভোগ করতে এসেছি। দারুণ স্টেডিয়াম, দারুণ শহর, অসাধারণ ফ্যান। এখানে হারানোর কিছু নেই।”
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার